
প্রতীকী ছবি
রোজা ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ। একজন মুমিন মুসলমানকে ইসলামের যে মৌলিক বিষয়গুলো মেনে চলতে হয় তার মধ্যে অন্যতম রোজা। বছরে এক মাস রোজা রাখা ফরজ। এছাড়াও প্রত্যেক সপ্তাহ, মাস ও বিশেষ দিনে বেশ কিছু নফল রোজা রয়েছে। যা পালনে বিশেষ সওয়াবের কথা বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। তবে বছরে কয়েকটি দিন রয়েছে, যে দিনগুলোতে ফরজ, নফল কোনও রোজাই রাখা যায় না। হাদিসে এদিনগুলোতে রোজা রাখাকে হারাম বলা হয়েছে।
এই পাঁচদিন হলো-১. ঈদুল ফিতরের (১ শাওয়াল) দিন। ২. ঈদুল আজহার (১০ জিলহজ) দিন। ৩. তাশরিকের দিনগুলোতে রোজা রাখাও হারাম। অর্থাৎ জিলহজ মাসের ১১, ১২ ও ১৩ তারিখের দিন।
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯৯২; মুসলিম, হাদিস : ৮২৭)
আরেকটি হাদিসে আবু উবাইদা (রা.) বলেন, আমি উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেছি। তিনি বলেছেন, এ দুই দিনের রোজা রাখাতে নবী (সা.) নিষেধ করেছেন। প্রথম দিন হলো- যখন তোমরা রোজা শেষ করো; আর দ্বিতীয় দিন হলো- যখন তোমরা কোরবানির গোস্ত খাবে। (বুখারি : ২/২৭২; হাদিস : ১৮৫১)
এই পাঁচদিন রোজা রাখা একেবারে হারাম। তবে এছাড়াও বছরে আরো বেশ কিছুদিনে রোজা না রাখার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো- পুরো বছর বিরামহীনভাবে রোজা রাখা। কারণ হাদিসে এভাবে রোজা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে।
হজরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (সা.) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি সবসময় রোজা রাখ এবং রাতভর নামাজ আদায় কর। আমি বললাম জী, হ্যাঁ।
তিনি বললেন, তুমি এমন করলে তোমার চোখ বসে যাবে এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে। যে ব্যক্তি সারা বছর রোজা রাখল সে যেন রোজাই রাখল না। (প্রতি মাসে) তিনদিন রোজা রাখা সারা বছর রোজা রাখার সমতুল্য।
আমি বললাম, আমি এর চেয়ে বেশি রাখার সামর্থ্য রাখি। নবীজি বললেন, তাহলে তুমি ‘সাওমে দাউদ’ পালন কর। তিনি একদিন রোজা রাখতেন আর একদিন ছেড়ে দিতেন। (ফলে তিনি দুর্বল হতেন না) এবং যখন তিনি শত্রুর সম্মুখীন হতেন তখন পলায়ন করতেন না। ( বুখারি, ১৯৭৮)
ফেকাহবিদদের মতে, নির্দিষ্ট করে কেবল শুক্রবার রোজা রাখাও উচিত নয়। অবশ্য এর আগে বা পরে মিলিয়ে দুটি রোযা রাখা যাবে।
একইভাবে শাবান মাসের ৩০ তারিখে যদি রমজানের চাঁদ উদিত হওয়ার ব্যাপারে গ্রহণযোগ্য নিশ্চয়তা না পাওয়া তবে সে দিন রোজা থাকা নিষিদ্ধ।এটিকে ইয়ামুশ শাক বা সন্দেহের দিন বলা হয়। কারণ সে দিন সন্দেহ থাকে যে, এটি কি শাবান মাসের ৩০ তারিখ না কি রামজান মাসের ১ম তারিখ? তাই সে দিন রোজা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।