Logo
×

Follow Us

ধর্ম

যেভাবে যাকাতের হিসাব করবেন

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩৪

যেভাবে যাকাতের হিসাব করবেন

প্রতীকী ছবি

আর্থিক ইবাদতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো যাকাত। ইসলামে যাকাতের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ। মহান আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজিদে ৮২ স্থানে নামাজের সাথে সাথে যাকাতের কথা উল্লেখ করেছেন। যাকাত গরিবের প্রতি কোনো করুণা নয়, বরং তার হক, যা ধনী ব্যক্তিকে অবশ্যই আদায় করতে হবে।

যদি কেউ যাকাত ফরজ হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে, সে ইসলামের গণ্ডি থেকে বের হয়ে যাবে। আর ফরজ স্বীকার করে তা আদায় না করা হারাম ও কবিরা গুনাহ। বিশেষ কোনো গোষ্ঠী তা আদায় না করার ঘোষণা দিলে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করে হলেও তা আদায়ে বাধ্য করা মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানের কর্তব্য।

যাকাতের হিসাব:

স্বর্ণের ক্ষেত্রে যাকাতের নিসাব হলে ২০ মিসকাল। (সুনানে আবু দাউদ ১/২২১) আধুনিক হিসাবে সাড়ে সাত ভরি। রুপার ক্ষেত্রে নিসাব হল ২০০ দিরহাম। (সহিহ বুখারি, ১৪৪৭) আধুনিক হিসাবে সাড়ে বায়ান্ন তোলা। এই পরিমাণ সোনা-রুপা থাকলে যাকাত দিতে হবে। প্রয়োজনের উদ্বৃত্ত টাকাপয়সা বা বাণিজ্যদ্রব্যের মূল্য যদি সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমপরিমাণ হয়, তাহলে যাকাতের নিসাব পূর্ণ হয়েছে ধরা হবে এবং এর যাকাত দিতে হবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস ৯৯৩৭)

উল্লেখ্য, বছরের শুরু ও শেষে নিসাব পূর্ণ থাকলে যাকাত আদায় করতে হবে। মাঝে নিসাব কমে যাওয়া ধর্তব্য নয়। অবশ্য বছরের মাঝে সম্পূর্ণ সম্পদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়, তবে ঐ সময় থেকে নতুন করে বছরের হিসাব আরম্ভ হবে এবং এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর যাকাত আদায় করতে হবে। (আদ্দুররুল মুখতার ২/৩০২)

যেসব সম্পদ  ও সামগ্রীর ওপর যাকাত ফরজ: 

১. সব ধরনের সম্পদ ও সামগ্রীর ওপর যাকাত ফরজ হয় না। শুধু সোনা-রুপা, টাকাপয়সা, পালিত পশু (নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী) এবং ব্যবসার পণ্যে যাকাত ফরজ হয়। ২. হিরা, মণি-মুক্তা ইত্যাদি মূল্যবান পাথর ব্যবসাপণ্য না হলে সেগুলোতে যাকাত ফরজ হয় না। (কিতাবুল আছার মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক ৭০৬১-৭০৬৪) ৩. মৌলিক প্রয়োজন থেকে উদ্বৃত্ত টাকাপয়সা নিসাব পরিমাণ হলে এবং এক বছর স্থায়ী হলে বছর শেষে তার যাকাত আদায় করা ফরজ হয়। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক ৭০৯১, ৭০৯২) তদ্রূপ ব্যাংক ব্যালেন্স, ফিক্সড ডিপোজিট, বন্ড, সার্টিফিকেট ইত্যাদিও নগদ টাকাপয়সার মতোই। এসবের ওপরও যাকাত ফরজ হয়। ৪. টাকাপয়সা ব্যবসায় না খাটিয়ে এমনি রেখে দিলেও তাতে যাকাত ফরজ হয়। (আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬৭) ৫. হজের উদ্দেশ্যে কিংবা ঘরবাড়ি নির্মাণ, ছেলেমেয়ের বিয়ে-শাদি ইত্যাদি প্রয়োজনের জন্য যে অর্থ সঞ্চয় করা হচ্ছে, তাও এর ব্যতিক্রম নয়। সঞ্চিত অর্থ পৃথকভাবে  কিংবা অন্যান্য যাকাতযোগ্য সম্পদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিসাব পরিমাণ হলে এবং নিসাবের ওপর এক বছর অতিবাহিত হলে যাকাত ফরজ হবে। বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই তা যদি খরচ হয়ে যায়, তাহলে যাকাত ফরজ হবে না। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৭০৩২) ৬. দোকানপাটে যা কিছু বিক্রির উদ্দেশ্যে রাখা থাকে, তা বাণিজ্যদ্রব্য। এর মূল্য নিসাব পরিমাণ হলে যাকাত আদায় করা ফরজ।  (সুনানে আবু দাউদ ১/২১৮) ৭. ব্যবসার নিয়তে কোনো কিছু ক্রয় করলে তা স্থাবর সম্পত্তি হোক যেমন—জমিজমা, ফ্ল্যাট কিংবা অস্থাবর যেমন—মুদিসামগ্রী, কাপড়চোপড়, অলংকার, নির্মাণসামগ্রী, গাড়ি, ফার্নিচার, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, হার্ডওয়ার সামগ্রী, বইপুস্তক ইত্যাদি বাণিজ্যদ্রব্য বলে গণ্য হবে এবং মূল্য নিসাব পরিমাণ হলে যাকাত দেওয়া ফরজ হবে। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস ৭১০৩, ৭১০৪)।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫