Logo
×

Follow Us

ধর্ম

হারাম উপার্জনের শাস্তি

Icon

ফারিহা জান্নাত

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২১

হারাম উপার্জনের শাস্তি

প্রতীকী ছবি

জীবন-ধারণ ও বেঁচে থাকার জন্য আয়-উপার্জন আবশ্যক। ইসলাম মানুষকে আল্লাহর ইবাদতের মাধ্যমে পরকালের প্রস্তুতি নিতে বলে, একই সঙ্গে জীবন পরিচালনার জন্য জীবিকা উপার্জনের কথা বলে। তবে উপার্জনের পথ অবশ্যই বৈধ ও হালাল হতে হবে, কেননা প্রতিটি মুসলমানের জন্য হালাল উপার্জন এবং হালাল উপায়ে ভক্ষণ করা ফরজ।

অন্যদিকে ইসলাম যে কোনো অবৈধ উপার্জনকে নিষিদ্ধ করেছে। দুর্নীতি, অন্যায়, অসততা, জুলুম, বা অন্য অসদুপায়ে অর্থ উপার্জন হারাম। এমন উপার্জন দ্বারা আহার, পরিধান, এবং অন্যান্য চাহিদা পূরণ করাও হারাম বলে বিবেচিত। অবৈধ উপার্জনের মাধ্যমে হয়তো সাময়িক সফলতা লাভ করা যায়, কিন্তু তা ব্যক্তিগত জীবন ও সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং ধীরে ধীরে মানুষকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। এই ধরনের উপার্জন ইহকাল ও পরকালকে কলুষিত করে এবং আল্লাহর অসন্তুষ্টি ডেকে আনে।

হালাল উপার্জনকারীর অল্প আমলের মূল্যও আল্লাহর কাছে অনেক বেশি। হারাম উপার্জনকারীর অনেক বেশি আমলেরও কোনো মূল্য নেই।

হাদিসে এসেছে, হারাম সম্পদ খেয়ে মানুষের শরীরে যে রক্ত-মাংস হবে, তা জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে। কাব ইবনে উজরা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, হারাম পন্থায় উপার্জিত সম্পদ দ্বারা সৃষ্ট ও পরিপুষ্ট মাংসের জন্য জাহান্নামের আগুনই উপযুক্ত। (সুনানে তিরমিজি : ৬১৪)

হারাম উপর্জনকারীর দোয়া কবুল হয় না। তার অন্যান্য ইবাদতও কবুল হয় না। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, লোকসকল! অবশ্যই আল্লাহ পবিত্র এবং তিনি শুধু পবিত্র বস্তুই কবুল করে থাকেন। আল্লাহ তাআলা মুমিনদের যে নির্দেশ দিয়েছেন, একই নির্দেশ দিয়েছেন তার নবীদেরও। আল্লাহ তার নবীদের উদ্দেশে বলেছেন, হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তুসমূহ থেকে আহার কর এবং সৎকাজ কর। তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত। (সুরা মুমিনুন : ৫১)

আল্লাহ তাআলা মুমিনদের উদ্দেশে বলেছেন, হে মুমিনগণ! আমি তোমাদের যে রিজিক দান করেছি তা থেকে পবিত্র বস্তু আহার কর। (সুরা বাকারা : ১৭২)

হারাম উপার্জনের দান-সদকা কবুল হয় না। অনেকে মনে করেন, হারাম পথে উপার্জন করে সেখান থেকে কিছু সদকা করে দিলে হয়তো শাস্তি কিছুটা হালকা হবে। অথবা আল্লাহ ক্ষমা করে দেবেন। কিন্তু ব্যাপারটা এ রকম নয়। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা পবিত্রতা ছাড়া কোনো সালাত কবুল করেন না এবং অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের সদকা গ্রহণ করেন না।’ (নাসায়ি, হাদিস : ১৩৯)

হারাম উপার্জন মানুষের রিজিক কমিয়ে দেয়। যে সম্পদের সঙ্গে সুদ মিশ্রিত হয়ে যায়, বেশির ভাগ সময় সেগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। সুদ ও জুয়ার ক্ষেত্রে দেখা যায়, অজস্র পুঁজির মালিক কোটিপতি দেখতে দেখতে দেউলিয়া ও ফকিরে পরিণত হয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন আর দান-সদকা বাড়িয়ে দেন।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৭৬)

তাই আমাদের উপার্জন যেন হালাল হয়, অসততা, দুর্নীতি, জুলুম ও অন্যান্য অসদুপায়ে উপার্জিত না হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ এর দ্বারা সাময়িক সচ্ছলতা অর্জন হলেও এর ক্ষতি চিরস্থায়ী।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫