
প্রতীকী ছবি
মুমিন বা মুসলিমের বৈশিষ্ট্য হলো সর্বদা সত্যের প্রতি অটল থাকা। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এবং সকল পরিস্থিতিতে সত্যের অনুসরণ করাই ইমান ও ইসলামের মূল শিক্ষা। আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘তুমি বলো : সত্য এসেছে, মিথ্যা অপসৃত হয়েছে; নিশ্চয় মিথ্যা দূরীভূত হবেই’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত-৮১)। ‘তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে সংমিশ্রণ করো না এবং জেনেশুনে সত্য গোপন করো না’ (সুরা : বাকারা, আয়াত-৪২)।
মিথ্যুকরা আল্লাহর অভিশাপপ্রাপ্ত। মিথ্যা বলা, মিথ্যা সংবাদ প্রচার করা কঠিন গুনাহের কাজ। তাই কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার আগে তথ্য যাচাই করা প্রয়োজন।
কোরআনে আল্লাহ তাআলা যেকোনো তথ্য প্রচার করার আগে যাচাই করে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, হে মুমিনগণ, যদি কোনো ফাসেক ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তাহলে তোমরা তা যাচাই করে নাও। এ আশঙ্কায় যে, তোমরা অজ্ঞতাবশত কোনো দলকে আক্রমণ করে বসবে, ফলে তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে (সুরা : হুজুরাত আয়াত-৬)।
অনলাইনে যেসব ব্যক্তি বা প্ল্যাটফর্ম থেকে খবর প্রচার করা হয়, তাদের বেশির ভাগের পরিচয় বা মতাদর্শ আমাদের অজানা। এ কারণে তাদের দেওয়া খবরের বিষয়ে আরো সতর্ক থাকা জরুরি। কোনো তথ্য ভালোভাবে যাচাই না করেই প্রচার করলে তা সমাজে মিথ্যা বা গুজব ছড়ানোর কারণ হতে পারে। এমনকি যাচাইহীন তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার ফলে প্রচারকারী নিজেও মিথ্যাবাদীর তালিকায় যুক্ত হতে পারে।
হাদিস শরিফে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, কোনো ব্যক্তির মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে সে কোনো কথা শোনামাত্রই (যাচাই না করে) বলে বেড়ায় (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৯২)। অন্য হাদিসে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা মিথ্যাচার বর্জন করো। কেননা মিথ্যা পাপাচারের দিকে ধাবিত করে এবং পাপাচার জাহান্নামে নিয়ে যায়। কোনো ব্যক্তি সর্বদা মিথ্যা বলতে থাকলে এবং মিথ্যাচারকে স্বভাবে পরিণত করলে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর কাছে তার নাম মিথ্যুক হিসেবেই লেখা হয়। আর তোমরা অবশ্যই সততা অবলম্বন করবে। কেননা সততা নেক কাজের দিকে পথ দেখায় এবং নেক কাজ জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়। আর কোনো ব্যক্তি সর্বদা সততা বজায় রাখলে এবং সততাকে নিজের স্বভাবে পরিণত করলে, শেষ পর্যন্ত আল্লাহর কাছে তার নাম পরম সত্যবাদী হিসেবে লিপিবদ্ধ হয় (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৮৯)।