মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের জন্য ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ও বেতন কাঠামো তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, “আমরা একটি মসজিদ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা তৈরি এবং সকল ধরনের মসজিদের ইমাম, পেশ ইমাম ও খাদেমের জন্য একটি পে-স্কেল কার্যকরের চেষ্টা করব।”

আজ বুধবার সকালে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদ মিলনায়তনে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত ইমাম ও মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টের আওতায় আর্থিক অনুদান ও সুদমুক্ত ঋণের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ধর্ম উপদেষ্টা।

আ ফ ম খালিদ হোসেন জানান, ধর্ম মন্ত্রণালয় ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন কাঠামো নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাথে কাজ করছে। এছাড়া তাদেরকে নির্দিষ্ট হারে বেতন দিতে মসজিদ কমিটির সঙ্গে আলোচনা করার জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন।

“যে সকল মসজিদ সরকরি, ওয়াকফ’র অধীনে নয় কিন্তু আর্থিকভাবে সক্ষম, কিন্তু ইমামদের পর্যাপ্ত আবাসনসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেয় না। ডিসিদের এ ধরনের মসজিদের কমিটির সাথে কথা বলে নির্দিষ্ট হারে বেতনের বিষয়ে বলেছি। আমরা এটা করে যেতে পারব বলে আশাবাদী।” যোগ করে ধর্ম উপদেষ্টা।

ইমাম মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এই ট্রাস্টটি একটি সময়োপযোগী ও জনবান্ধব। আগামী দিনে এই ট্রাস্টের সক্ষমতা আরও বাড়ানো হবে।

সমাজ সংস্কারে এ দেশের আলেম সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে খালিদ হোসেন বলেন, “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এ সরকারের অগ্রাধিকার। সন্ত্রাস দমন ও সামাজিক সমস্যা নিরসনে আলেমরাই জাতিকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারে।”

নিজের মৃত্যু সংক্রান্ত গুজবের বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করে আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, “সম্প্রতি এক পোস্টে দেখলাম, ‘ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন এইমাত্র চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন’। অথচ মউতের মালিক আল্লাহ।”

যার অন্তর অপরিষ্কার তিনি ভালো কাজ করতে পারেন না মন্তব্য করে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, “সবচেয়ে বেশি জান্নাতে যাবে তারা, যাদের অন্তর পরিচ্ছন্ন এবং দান করেন। কিন্তু ফেসবুকের যুগে আমাদের অন্তর কতটা কলুষিত তা প্রতিনিয়ত সামনে আসছে।” এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আলেম-ওলামাদের অবদান রাখার আহ্বান জানান তিনি।

দুঃস্থ ইমামদের ২ কোটি ৩১ লাখ টাকার সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের অসহায় দরিদ্র ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের সুদমুক্ত ঋণ হিসেবে ৬০০ জনকে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং অনুদান হিসেবে ৪ হাজার ৬২০ জনকে ৫ হাজার টাকা হারে মোট ২ কোটি ৩১ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়।

এর মাধ্যমে সুদমুক্ত ঋণ ও অনুদান হিসেবে চলতি অর্থবছরে সর্বমোট ৫ হাজার ২২০ জন ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে মোট ৩ কোটি ১১ লাখ টাকার সুদমুক্ত ঋণ ও সহায়তার চেক দেওয়া হয়।

এছাড়াও ঢাকা জেলায় ৭ উদ্যোক্তাকে ২০ হাজার টাকা করে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা, ৭ জন সাধারণ উদ্যোক্তাকে ৩০ হাজার টাকা হারে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং ৭ জন বিশেষ উদ্যোক্তাকে ৪০ হাজার টাকা হারে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকার সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া হয়।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আব্দুস ছালাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক, প্রকল্প পরিচালক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আলেম-ওলামারা।