Logo
×

Follow Us

ধর্ম

মক্কার বুকে কাবার ছবি

Icon

গ্রন্থনা : আতাউর রহমান খসরু।

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১০:৫৪

মক্কার বুকে কাবার ছবি

মহানবী (সা.) মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। সৃষ্টির সূচনা থেকে মহান আল্লাহ এ নগরকে সম্মানিত করেছেন। মক্কা নগরীতেই অবস্থিত মুসলমানের কেবলা ‘কাবা’। বংশ পরম্পরায় মহানবী (সা.)-এর পরিবার পবিত্র কাবার তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন। আরবে মক্কার ভৌগোলিক অবস্থান, পবিত্র কাবার উপস্থিতি ও নবী-রাসুলদের স্মৃতি ইত্যাতি কারণে মক্কা ঐতিহাসিক কাল থেকে আরবের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র বিবেচিত হতো। সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভি (রহ.) লেখেন, ‘এই ধর্মীয় অবস্থান ও উপদ্বীপের কেন্দ্র হওয়ার ফলে এর মর্যাদা, অর্থনৈতিক প্রাচুর্য, বাণিজ্যিক সমৃদ্ধি এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে উন্নতির কারণে মক্কা আরব উপদ্বীপের একটি বৃহৎ শহরে পরিণত হয়েছিল।’ (নবীয়ে রহমত, পৃষ্ঠা ১০৯)

কোরআনের বর্ণনা মতে, কাবা মানুষের জন্য নির্মিত পৃথিবীর প্রথম ঘর। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই মানবজাতির জন্য সর্বপ্রথম যে ঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা তো বাক্কায়—তা বরকতময় ও বিশ্বজগতের দিশারী।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৯৬)

পবিত্র কাবা ঘরকে কেন্দ্র করেই ইবরাহিম (আ.)-এর দ্বিতীয় ছেলে ইসমাইল (আ.)-এর হাতে মক্কা নগরীর গোড়াপত্তন। আর তা শুরু হয় কাবা ঘরের পুননির্মাণের মাধ্যমে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার প্রতিপালক, আমি আমার বংশধরদের কতককে বসবাস করালাম অনুর্বর উপত্যকায় তোমার পবিত্র ঘরের কাছে।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৩৭)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ করো, যখন ইবরাহিম ও ইসমাইল কাবাঘরের প্রাচীর তুলছিলো, তখন তারা বলেছিলো, হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদের এই কাজ গ্রহণ করো, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১২৭)

সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক তথ্যমতে, কাবাকে এ পর্যন্ত ১২ বার পুননির্মাণ করা হয়েছে। পবিত্র কাবার নির্মাণ-পুননির্মাণে বিভিন্ন যুগে আদম (আ.), ইবরাহিম (আ.), ইসমাইল (আ.) ও মুহাম্মদ (সা.) অংশগ্রহণ করেছিলেন। সৃষ্টির সূচনা থেকে মহান আল্লাহ মক্কা ভূমিকে অন্য মর্যাদায় ভূষিত করেন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘এই শহরকে আল্লাহ পৃথিবী ও নভোমণ্ডল সৃষ্টির দিনেই সম্মানিত করেছেন। অতএব তা আল্লাহর সম্মান দ্বারা কিয়ামত পর্যন্ত সম্মানিত।’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২৮৭৪)

আল্লাহ মক্কা নগরীর বিশেষ অঞ্চলকে সব প্রাণীর জন্য নিরাপদ করেছেন। যা ‘হারাম’ বা নিষিদ্ধ অঞ্চল নামে পরিচিত। বহিরাগতদের জন্য যার ভেতরে প্রবেশের জন্য ইহরাম পরিধান করতে হয়। সেখানে যেকোনো ধরনের রক্তপাত, অশ্লীল ও অশালীন কাজ নিষিদ্ধ। ইমাম নববী (রহ.)-এর মতে হারামের সীমা হলো, মক্কা থেকে মদিনার দিক তিন মাইল, ইয়েমেনের দিকে সাত মাইল, তায়েফের দিকে আরাফাসহ সাত মাইল, ইরাকের দিকে সাত মাইল, জি’রানের দিকে নয় মাইল এবং জেদ্দার দিকে দশ মাইল। (মাজমু শরহিল মাজহাব : ৮/৪৫১)

মসজিদুল হারাম ছাড়াও জমজম কূপ, সাফা-মারওয়া, হজরে আসওয়াদ, হাতিম ইত্যাদি মক্কা নগরীর গৌরব। মহানবী (সা.)-এর আবির্ভাব সে গৌরবকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। নবী-রাসুলদের স্মৃতিধন্য মক্কা নগরীর দর্শনকে ইবাদতের মর্যাদা দান করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশে এ ঘরের হজ করা তার আবশ্য কর্তব্য।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৯৭)



Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫