
হিজরি বছরের মধ্যে ‘রজব’ বিশেষ ও মহিমান্বিত একটি মাস। এ মাস আসে রমজানের আগমনী বার্তা নিয়ে। তাই রজব মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি নিতে হয়।
গত শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সূর্যাস্তের পর থেকে রজব মাস শুরু হয়েছে।
এ মাসের বড় বৈশিষ্ট্য হলো- রজব মাস আল্লাহ প্রদত্ত চারটি সম্মানিত মাসের (আশহুরে হুরুমের) একটি। হযরত মোহাম্মদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাস সম্পর্কে খুব গুরুত্ব দিতেন। ফলে রজবের চাঁদ দেখা গেলে তিনি কিছু বিশেষ আমল শুরু করতেন।
হাদিস শরিফে এসেছে, হযরত আনাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, যখন রজব মাস শুরু হতো, নবী করিম (সা.) তখন এ দোয়াটি পড়তেন- ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রামাজান।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করুন ও আমাদের রমজান মাস পর্যন্ত হায়াত বৃদ্ধি করে দিন।’- আল মুজামুল আওসাত: ৩৯৩৯
আলেমরা বলেছেন, আশহুরে হুরুমের বৈশিষ্ট্য হলো, এসব মাসে ইবাদত-বন্দেগির প্রতি যত্নবান হলে বাকি মাসগুলোতে ইবাদতের তওফিক হয়। আর আশহুরে হুরুমে কষ্ট করে গোনাহ থেকে বিরত থাকতে পারলে অন্যান্য মাসেও গোনাহ পরিহার করা সহজ হয়।’- আহকামুল কোরআন, জাসসাস: ৩/১১১
মাসটির পুরো নাম ‘রজবুল মুরাজ্জাব’ বা ‘আর-রজব আল-মুরাজ্জাব’ হলেও এটি রজব মাস নামেই বেশি পরিচিত। মাসটির অর্থগত তাৎপর্যও রয়েছে। ‘রজব’ শব্দের অর্থ হলো সম্ভ্রান্ত, মহান বা প্রাচুর্যময়। আর ‘মুরাজ্জাব’ অর্থ ‘সম্মানিত’। সুতরাং এর অর্থ দাঁড়ায় ‘প্রাচুর্যময় সম্মানিত মাস’।
মর্যাদার এ মাসটিকে মহান আল্লাহ তাআলা যাবতীয় যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানি ও রক্তপাত নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- ‘আল্লাহ তাআলার আসমান-জমিন সৃষ্টি করার দিন থেকেই ১২ মাসে বৎসর হয়। এর মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত; তিনটি একাধারে জিলকদ, জিলহজ ও মহররম এবং চতুর্থটি হলো ‘রজব মুদার’, যা জমাদিউল আখিরা ও শাবানের মধ্যবর্তী মাস।’ (মুসলিম)
তাছাড়া রজব ও শাবান হলো পাশাপাশি দুটি জোড়া মাস। মাস দুটিকে একত্রে রজবান বা রাজাবাইনও বলা হয়। তাই বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগি, দোয়া-ইসতেগফার ও রোজা রাখার মতো আমল ইবাদত করে এ দুই মাসে নিজেদের প্রস্তুত করার উপযুক্ত সময়।