
রমজানের রোজা রাখা ফরজ। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।
এ নির্দেশনা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের জন্য। সাধারণত প্রাপ্ত বয়স্ক সব মুসলমানই এ মাসে রোজা রাখেন। তবে কিছু কিছু বিষয় আছে যেগুলোর কারণে রমজান মাসে রোজা না রাখার সুযোগ আছে।
তবে কোন অবস্থায় ও কোন পর্যায়ে না রাখার সুযোগ রয়েছে, এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক মাসআলাগুলো হলো:
১. মুসাফির: আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)
২. অসুস্থ ব্যক্তি: রোজা রাখার কারণে কোনো জটিল রোগ সৃষ্টি বা পুরাতন রোগ বৃদ্ধির প্রবল ধারণা হলে, তার জন্য রোজা না রাখার অনুমতি আছে। সুস্থ হওয়ার পর কাজা করে নেবেন। (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৪)
৩. দুর্বল ব্যক্তি: বিখ্যাত তাবেয়ি হজরত সাবেত বুনানি (রহ.) বলেন, হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) যখন বার্ধক্যের কারণে রোজা রাখতে সক্ষম ছিলেন না তখন তিনি রোজা না রেখে (ফিদইয়া) খাবার দান করতেন। (মুসান্নাফ আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭৫৭০)
৪. গর্ভবতী নারী: রোজা রাখার কারণে গর্ভবতী নারীর নিজের কিংবা সন্তানের প্রাণহানি বা মারাত্মক স্বাস্থ্যহানির প্রবল আশঙ্কা হলে তার জন্য রোজা ভঙ্গ করা জায়েজ। পরে এ রোজা কাজা করে নেবে। (আল মুহিতুল বুরহানি : ৩/৩৫৯)
৫. দুগ্ধদানকারী মা: হাদিসে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ তাআলা মুসাফিরের জন্য রোজার হুকুম শিথিল করেছেন ও নামাজ কমিয়ে দিয়েছেন। আর গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারিনীর জন্যও রোজার হুকুম শিথিল করেছেন। (জামে তিরমিজি : ১/১৫২, হাদিস : ৭১৫)
৬. ঋতুবর্তী নারী: মাসিক ঋতুস্রাব তথা পিরিয়ডের (হায়েজ) সময় ও সন্তান জন্মদানের পরবর্তী ৪০ দিন (নেফাস) নারীদের জন্য ওয়াজিব হলো রোজা বর্জন করা। এ অবস্থায় নামাজ ও রোজা কোনোটাই আদায় করা জায়েজ হবে না। (সহিহ বোখারি ও মুসলিম)
রোজা কাজা করা আর নামাজ কাজা না করা সম্পর্কে উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.) যা বলেছেন সমস্ত উলামায়ে কেরাম তার সাথে একমত পোষণ করেছেন অর্থাৎ ইজমা বা ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
যাদের জন্য রোজা ভাঙার অনুমতি আছে, তাদের উচিৎ প্রকাশ্যে কোনো কিছু না খেয়ে রমজানের সম্মান ধরে রাখা।