মডেল মসজিদগুলোর পরিচালানার দায়িত্বে নেই ইসলামিক ফাউন্ডেশন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২১, ১১:৩৯

মডেল মসজিদ
সরকার জেলা-উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন করছে। ৫০টি মসজিদ উদ্বোধনও হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকগুলো মসজিদে অস্থায়ী হিসেবে স্থানীয়ভাবে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিম নিয়োগ হয়েছে। স্থায়ী জনবল কাঠামো না থাকায় সম্মানির ভিত্তিতে দেয়া হচ্ছে বেতন। তবে সেটাকে অসম্মানজনক দাবি করছেন দেশের খ্যাতনামা আলেমরা।
জানা গেছে, মডেল মসজিদগুলোর পরিচালানার দায়িত্বে নেই ইসলামিক ফাউন্ডেশন। মসজিদগুলো স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে পরিচালনার বিধান রেখে নীতিমালা তৈরি করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। নীতিমালা অনুসারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসককে দেয়া হয়েছে জনবল নিয়োগের দায়িত্ব।
নীতিমালা অনুসারে, প্রতিটি মসজিদে একজন পেশ ইমাম, একজন মুয়াজ্জিন, দুইজন খাদেম ও দুইজন নিরাপত্তা প্রহরী দায়িত্ব পালন করবেন। পেশ ইমামের যোগ্যতায় বলা হয়েছে দ্বিতীয় শ্রেণিতে কামিল ডিগ্রি অথবা দাওরায়ে হাদিস পাস। এছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানে খতিব, মুফতি, মুহাদ্দিস হিসেবে পাঁচ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কোরআনে হাফেজ এবং ক্বিরাতে দক্ষরা অগ্রাধিকার পাবেন। আরবিতে কথা বলা, খুতবা উপস্থাপন, ইসলামের ওপর গবেষণাধর্মী প্রকাশনা বিবেচিত হবে অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে। বিপরীতে সম্মানি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার টাকা।
মুয়াজ্জিনের যোগ্যতা বলা হয়েছে, দ্বিতীয় শ্রেণিতে আলিম ডিগ্রি অথবা সমমানের কওমি শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন স্বীকৃতি বোর্ড বা প্রতিষ্ঠানের সনদধারী হতে হবে। মুয়াজ্জিন হিসেবে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে তিন বছরের। মাসিক সম্মানি ১০ হাজার টাকা।
খাদিমের যোগ্যতা বলা হয়েছে- দ্বিতীয় শ্রেণিতে আলিম ডিগ্রি অথবা সমমানের কওমি শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন স্বীকৃতি বোর্ড বা প্রতিষ্ঠানের সনদধারী হতে হবে। শারীরিকভাবে সুস্থ ও সক্ষম হতে হবে। একবছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। মাসিক সম্মানি সাড়ে সাত হাজার টাকা।
উল্লেখ্য, মাসিক সম্মানির সমপরিমাণ দুটি ঈদ-উৎসব সম্মানিও পাবেন নিয়োগকৃতরা।
মডেল মসজিদে যোগ্য আলেম নিয়োগ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন। জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা নুরুল হুদা ফয়েজী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মডেল মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমদের জন্য যে বেতন ধরা হয়েছে, তা বৈষম্যমূলক। ইমাম পদে কামিল ডিগ্রি অথবা দাওরায়ে হাদিস পাস খতিব, মুফতি, মুহাদ্দিস চাওয়া হয়েছে। কিন্তু বিপরীতে যে বেতন ধরা হয়েছে তা অসম্মানজনক। মডেল মসজিদের ইমাম-খতিবদের জন্য প্রথম শ্রেণি, মুয়াজ্জিনদের দ্বিতীয় শ্রেণি এবং খাদেমদের তৃতীয় শ্রেণির মর্যাদার বেতন-ভাতা দেয়ার দাবি আমরা আগেও জানিয়েছে, এখনো জানাই।’
নিয়োগে বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়নি। তবে কোনো এলাকায় যদি আগেই মসজিদ থাকে এবং সেই জায়গায় মডেল মসজিদ হয়, সেক্ষেত্রে আগের মসজিদে যারা পাঁচ বছর ধরে কাজ করছিলেন তারা অগ্রাধিকার পাবেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মো. মুশফিকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের প্রকল্পের (ইফা) মাধ্যমে মসজিদ নির্মাণ হচ্ছে। বেতন-ভাতা আমরাই দেবো। যাবতীয় খরচও আমরা বহন করবো। তবে মসজিদগুলোর জন্য জনবল কাঠামো না থাকায় বেতন কাঠামোও নেই। জনবল কাঠামো তৈরির কার্যক্রম চলছে।’