
ফাইল ছবি
অন্যায়-অপরাধ করার পর অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা ও ভবিষ্যতে কোনো অপরাধ বা গুনাহ না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞাই হলো তওবাহ। আর গুনাহের কাজ হয়ে গেলে তা থেকে ক্ষমা প্রার্থনায় দুই রাকাত নফলকে বলা হয় তাওবার নামাজ।
তাওবাহ বা তাওবার নামাজ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। কোনো অন্যায় অপরাধ সংঘটিত হলে সে সময় তাওবাহ করার পাশাপাশি ক্ষমা প্রার্থনায় ২ রাকাত নামাজ পড়াও কর্তব্য। হাদিসে এটিকে তাওবার নামাজ বলা হয়েছে।
আসমা ইবনুল হাকাম (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি আলী (রা.)-কে বলতে শুনেছি,তিনি বলেন, আবু বকর (রা.) আমাকে একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন এবং তিনি সত্যই বলেছেন। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যখন কোনো বান্দা কোনো ধরনের গুনাহ করে উত্তমরূপে অজু করে দাঁড়িয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে এবং আল্লাহর কাছে গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫২১)
তাওবা করার সময়সীমা : তিন মুহূর্ত আসার আগ পর্যন্ত মহান আল্লাহ তার বান্দার তাওবা কবুল করেন। কিন্তু এরপর আর তাওবা কবুল করা হয় না। নিম্নে সেই তিন মুহূর্ত তুলে ধরা হলো-
- মৃত্যু আসার আগ পর্যন্ত। (সুরা : নিসা, আয়াত : ১৮)
- আজাব চলে আসার আগ পর্যন্ত । (সুরা : মুমিনুন, আয়াত : ৮৫)
- পশ্চিমাকাশে সূর্যোদয় হওয়ার আগ পর্যন্ত। (মুসলিম, হাদিস : ৬৭৫৪)
তাওবার নামাজ পড়ার নিয়ম : তাওবার নামাজের পদ্ধতি ওপরে উল্লিখিত আবু বকর (রা.)-এর হাদিসে স্পষ্ট বর্ণিত আছে। প্রথমে উত্তমরূপে অজু করতে হবে। তারপর একাগ্রচিত্তে নফল নামাজের মতো দুই রাকাত নামাজ পড়বে। তাওবার নামাজের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সুরা নেই। তাই যেকোনো সুরা দিয়েই তাওবার নামাজ পড়া যায়। এই নামাজের অজু ও নামাজের মাঝখানে কোনো দুনিয়াবি কাজ বা কথা না বলা উত্তম। কারণ হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার মতো এভাবে অজু করবে, অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে এবং এর মাঝখানে দুনিয়ার কোনো খেয়াল করবে না, তার আগের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ১৫৯)। নামাজ শেষে আল্লাহর তাসবিহ পড়বে, আল্লাহর প্রশংসা করবে এবং ইস্তেগফার পড়ে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করবে।
তাওবার দোয়া : তাওবার শ্রেষ্ঠ দোয়া হলো, সাইয়েদুল ইস্তিগফার। নিম্নে তার উচ্চারণসহ অর্থ তুলে ধরা হলো, ‘আল্লাহুম্মা আনতা রব্বি, লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খলাকতানি, ওয়া আনা আবদুকা, ওয়া আনা আলা আহদিকা, ওয়া ওয়া‘দিক মাসতাতা‘তু, আউজুবিকা মিন শাররি মা সানা‘তু, আবু-উ লাকা বিনি‘মাতিকা আলাইয়া ওয়া আবু-উ বিজাম্বি ফাগফিরলি ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।’