
ছবি: সংগৃহীত
ইসলাম স্বাধীনতাকে যেমন গুরুত্ব দিয়েছে, তেমনি দেশপ্রেম ও দেশাত্মবোধকেও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ইসলামে দেশপ্রেমকে ঈমানের অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘হুব্বুল ওয়াত্বানে মিনাল ঈমান অর্থাৎ দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ।’
নিজ জন্মভূমির প্রতি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যে ভালোবাসা ছিল, তা অসাধারণ। শুধু তাই নয়, ইসলামের নবি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হৃদয়ে যেমন ছিল স্বদেশ প্রেম তেমনি তার সাহাবায়েকেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম আজমাঈনের মাঝেও বিদ্যমান ছিল এ দেশপ্রেম।
হিজরতের পর মদিনায় হজরত আবুবকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ও হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। অসুস্থ অবস্থায় তাদের মনে-প্রাণে প্রিয় স্বদেশ মক্কার স্মৃতিচিহ্ন জেগে উঠেছিল। তারা জন্মভূমি মক্কার কথা স্মরণ করে আবেগে আপ্লুত হয়ে কবিতা আবৃত্তি করতে লাগলেন।
এ অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবিদের মনের এ দুরবস্থা দেখে প্রাণভরে দোয়া করলেন-
‘হে আল্লাহ! আমরা মক্কাকে যেমন ভালোবাসি, তেমনি তার চেয়েও বেশি মদিনার ভালোবাসা আমাদের অন্তরে দান করুন।’ (বুখারি)
বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ দোয়া ও ভালোবাসার নির্দশন যুগে যগে সব দেশ-জাতিগোষ্ঠী ও বর্ণের মানুষের জন্য স্বদেশ প্রেমের অনন্য শিক্ষা ও অনুপ্রেরণা।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলাম প্রচারের কারণে নিজের মাতৃভূমি ত্যাগ করে হিজরত করেছিলেন মদিনায়। দীর্ঘ ১০ বছর নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর সফলতার সঙ্গে নিজ জন্মভূমির স্বাধীনতা অর্জন করেন। এতে বিজয় উদযাপন করেন।
তিনি মক্কা থেকে মদীনার পথে হিজরতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার আগে তার মুখ ফেরালেন জন্মভূমি মক্কার দিকে। যাত্রাপথে তিনি বার বার ফিরে তাকাচ্ছিলেন মক্কার দিকে। জন্মভূমি ছেড়ে যাওয়ার ঘটনায় তাঁর চোখ থেকেও ঝরছে অশ্রু।
আল্লাহর দরবারে দোয়া করলেন আর বললেন, ‘হে মক্কা! তুমি আমার কাছে সমস্ত স্থান থেকে অধিক প্রিয়, আমি মক্কাকেই ভালোবাসি। আমার মন মানছে না। কিন্তু তোমার লোকেরা আমাকে এখানে থাকতে দিল না, সব কিছুর মালিক তুমি। মক্কার মানুষদের ঈমানের আলোয় উজ্জ্বল কর। ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত কর।’ (মুসনাদ আহমদ ও তিরমিজি)