
কাবা শরীফ।
ঈদ-উল-আজহার আগে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়ার দিন সৌদি আরবের মক্কায় কাবার গিলাফ পরিবর্তন হয়ে থাকে। তবে এবার সেই ঐতিহ্য রক্ষা করা হয়নি। মক্কার মসজিদ আল হারাম ও মদিনার মসজিদে নববী পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শনিবার (৩০ জুলাই) গিলাফ পরিবর্তন করা হয়েছে।
দুই মসজিদের পরিচালনা পর্ষদের প্রধান আব্দুল রহমান আল সুদাইসের নেতৃত্বে দেড়শরও বেশি মানুষ গিলাফ পরিবর্তনের কাজে অংশ নেন। ৬৫৮ বর্গমিটারের গিলাফটি প্রস্তুত করেছে দা কিং আবদুল আজিজ কমপ্লেক্স ফর ম্যানুফ্যাকচারিং দা কাবা কিসওয়া।
মক্কা বিজয়ের পর ইসলাম ধর্মের নবী প্রথম কাবাকে লাল ও সাদা কাপড়ে ঢেকে দিয়েছিলেন। পরে বিভিন্ন সময়ে সাদা রংয়ের গিলাফ, লাল গিলাফ, হলুদ গিলাফ ও সবুজ গিলাফ ব্যবহার করা শুরু হয়। এখন ব্যবহৃত হচ্ছে কালো গিলাফ।
কাবার গিলাফটি তৈরিতে ৬৭০ কেজি কালো রেশম ব্যবহার করা হয়। ৪৭টি কাপড়ের টুকরোকে বিশেষ মেশিনে সেলাই করা হয়। এরপর কালো গিলাফের গায়ে মেশিনের ছাপ দিয়ে লেখা হয় আল্লাহর নাম ও গুণাবলি।
আরব নিউজের তথ্য অনুযায়ী, এরপর গিলাফটি গিল্ডিং অ্যান্ড এমব্রয়ডারি বিভাগে যায়। সেখানেই ক্যালিগ্রাফির ও শিল্পীরা গিলাফের চারদিকের সোনালি বেল্ট ও কাবার দরজার পর্দা তৈরি করেন। তেইশ থেকে ষাট বছর বয়সী পঞ্চাশ জনের বেশি দক্ষ শিল্পী তাতে কোরআনের আয়াত ও অন্যান্য দোয়া এমব্রয়ডারি করেন। এ কাজে একশ কেজি খাঁটি রুপা এবং ১২০ কেজি সোনার প্রলেপযুক্ত রৌপ্য সুতা ব্যবহৃত হয়।
ঐতিহ্য রক্ষা না করে গিলাফ পরিবর্তনের বিষয়ে ঢাকায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. আবু ছালেহ পাটোয়ারি বিবিসি বাংলাকে বলছেন, “এবার রেওয়াজের ব্যতিক্রম করা হচ্ছে কারণ সেদেশের সরকার হিজরি সনকে গুরুত্ব দিয়ে গিলাফ পরিবর্তন করার কথা বলেছে।”
তিনি বলেন, “দীর্ঘকালের রেওয়াজ ছিল হাজীদের উপস্থিতিতে গিলাফ পরিবর্তন করা। পুরোনো গিলাফ সাধারণত মুসলিম দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান কিংবা বিভিন্ন মুসলিম দেশের মসজিদকে উপহার দেওয়া হতো। বাংলাদেশের বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদও কাবার গিলাফ এসেছিল। এবার কি করা হবে জানি না। কারণ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কোনো কিছু মুসলিম বিশ্বকে জানানো হয়নি।”
তবে, সৌদি প্রবাসী সাংবাদিক রুমী সাঈদ বিবিসিকে জানান, গিলাফ পরিবর্তনের বিষয়টি দুই প্রধান মসজিদের পরিচালনা পর্ষদ তাদের সরকারি ওয়েবসাইটে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল।