Logo
×

Follow Us

ধর্ম

অপচয় রোধে ইসলামের সতর্কতা

Icon

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২২, ১১:১৪

অপচয় রোধে ইসলামের সতর্কতা

প্রতীকী ছবি

অপচয় ব্যক্তি সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। হালাল কাজে চাহিদার বেশি খরচ করাকে অপচয় বলা হয়। যা কুরআনের ভাষায় ‘ইসরাফ’ বলা হয়। তাইতো কুরআনে অপচয়কে শয়তানের কাজ বলা আখ্যায়িত করা হয়েছে।

অপচয়ের বিষয়ে নিন্দা জানিয়ে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে আদম সন্তান! তোমরা প্রত্যেক নামাজের সময় সুন্দর পরিচ্ছদ পরিধান কর। পানাহার কর, কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না। ( সুরা আরাফ, ৩১)

এ আয়াতে ব্যবহৃত ইসরাফ শব্দের অর্থ সীমালঙ্ঘন করা। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কম খেয়ে দুর্বল হয়ে পড়া, ফলে ফরজ কাজ করার শক্তি না থাকা- এটাও সীমালঙ্ঘনের মধ্যে গণ্য। এবং সম্পদের অপব্যয়ও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনের আরেক জায়গায় বলা হয়েছে, অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ২৬, ২৭)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সীমালঙ্ঘন ও অহংকার না করে খাও, দান কর এবং পরিধান কর।’ 

কোরআনে আরো বলা হয়েছে,  ‘আল্লাহ তাদেরকে পছন্দ করেন, যারা ব্যয় করার ক্ষেত্রে মধ্যবর্তিতা অবলম্বন করে- প্রয়োজনের থেকে বেশি ব্যয় করে না এবং কমও করে না।’ (সূরা আল-ফুরকান, ৬৭) এ আয়াতে পানাহার সম্পর্কে যে মধ্যবর্তিতার নির্দেশ বর্ণিত হয়েছে, তা শুধু পানাহারের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং পরিধান ও বসবাসের প্রত্যেক কাজেই মধ্যপন্থা পছন্দনীয় ও কাম্য।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সীমালঙ্ঘন ও অহংকার না করে খাও, দান কর এবং পরিধান কর।’ (নাসাঈঃ ৫/৭৯, ইবনে মাজা ৩৬০৫) 

হজরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন, ‘যা ইচ্ছা পানাহার কর এবং যা ইচ্ছা পরিধান কর, তবে শুধু দুটি বিষয় থেকে বেঁচে থাক। (এক) তাতে অপব্যয় অর্থাৎ প্রয়োজনের চাইতে বেশি না হওয়া চাই এবং (দুই) গর্ব ও অহংকার না থাকা চাই। (নাসায়ী: ২৫৫৯) 

আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, কেয়ামতের দিন এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হওয়ার আগে কোনো বান্দার পা-ই নড়বে না-তার জীবন সে কীসে ব্যয় করেছে, তার ইলম অনুসারে সে কী আমল করেছে, তার সম্পদ সে কোত্থেকে উপার্জন করেছে এবং কোথায় ব্যয় করেছে আর তার শরীর কীসে নষ্ট করেছে?

অপব্যয় ও অপচয় না করে আত্মীয়দের হক আদায় ও দান-সদকার পাশাপাশি সন্তানদের জন্য কিছু সঞ্চয় করাও নবীজির শিক্ষা। সন্তানদের কারও মুখাপেক্ষী রেখে যাওয়া নবীজি (সা.) কখনো পছন্দ করেননি।

হজরত সাদ ইবনু আবি ওয়াক্কাস (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, বিদায় হজে একটি কঠিন রোগে আমি আক্রান্ত হলে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমার খোঁজখবর নেওয়ার জন্য আসতেন। একদা আমি তার কাছে নিবেদন করলাম, আমার রোগ চরমে পৌঁছেছে আর আমি সম্পদশালী। একমাত্র কন্যা ছাড়া কেউ আমার উত্তরাধিকারী নেই। তবে আমি কি আমার সম্পদের দুই-তৃতীয়াংশ সদকাহ করতে পারি? তিনি বললেন, না। আমি আবার নিবেদন করলাম, তাহলে অর্ধেক। তিনি বললেন, না। অতঃপর রাসুল (সা.) বললেন, ‘এক-তৃতীয়াংশ, আর এক-তৃতীয়াংশও বিরাট পরিমাণ অথবা অধিক। তুমি তোমার উত্তরাধিকারীদের মানুষের করুণার মুখাপেক্ষী রেখে যাওয়ার চেয়ে তাদের সচ্ছল রেখে যাওয়া উত্তম। আর আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য তুমি যেকোনো ব্যয় করো না কেন, তোমাকে তার বিনিময় প্রদান করা হবে। এমনকি যা তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দেবে (তারও প্রতিদান পাবে)।’ (বুখারি : ১২৯৫) 

আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, কেয়ামতের দিন এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হওয়ার আগে কোনো বান্দার পা-ই নড়বে না-তার জীবন সে কীসে ব্যয় করেছে, তার ইলম অনুসারে সে কী আমল করেছে, তার সম্পদ সে কোত্থেকে উপার্জন করেছে এবং কোথায় ব্যয় করেছে আর তার শরীর কীসে নষ্ট করেছে? -(জামে তিরমিজি, হাদীস ২৪১৭)

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫