
প্রতীকী ছবি
আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। তিনিই আমাদের রব, রিজিকদাতা ও মাবুদ। তিনি যার প্রতি সন্তুষ্ট হবেন, তার জীবন ধন্য। তার সবকিছুই অর্জিত হবে খুব সহজে। পরকালেও এর প্রাপ্তি হবে অনেকগুণ বেশি। প্রাত্যহিক কাজে খুব সহজেই আমরা এমন কিছু আমল করতে পারি।
যেসব সহজ আমল করলেই আল্লাহর সন্তুষ্ট পাওয়া সম্ভব সেগুলো তুলে ধরা হলো:
মিসওয়াক করা: মিসওয়াক করার দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মিসওয়াক হলো মুখের পবিত্রতা ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যম।’ (সুনানে নাসায়ি : ৫)
পানাহারের পর আলহামদুলিল্লাহ বলা: প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ সে বান্দার ওপর সন্তুষ্ট, যে খাবার খাওয়ার পর আলহামদুলিল্লাহ বলে অথবা পানীয় পান করার পর আলহামদুলিল্লাহ বলে।’ (রিয়াজুস সালেহিন : ১৪৪)
পিতার সন্তুষ্টি অর্জন: রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘পিতার সন্তুষ্টির মাঝেই রবের সন্তুষ্টি আর পিতার অসন্তুষ্টির মাঝেই রবের অসন্তুষ্টি রয়েছে।’ (তিরমিজি : ১৮৯৯)
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ব্রতী: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষের অসন্তুষ্টি সত্ত্বেও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সচেষ্ট হয়, মানুষের দুঃখ-কষ্ট থেকে বাঁচানোর জন্য আল্লাহ তায়ালা তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করে মানুষের সন্তুষ্টি অর্জনে ব্রতী হয়, আল্লাহ তাকে মানুষের দায়িত্ব ছেড়ে দেন।’ (তিরমিজি : ২৪১৪)
বিপদাপদে সন্তুষ্টি: রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, বিপদ যত মারাত্মক হবে প্রতিদান তত মহান হবে। আল্লাহ তায়ালা যখন কোনো জাতিকে ভালোবাসেন, তখন বিভিন্ন বালা-মুসিবত দিয়ে তাদের পরীক্ষা করেন। সুতরাং যারা এর ওপর সন্তুষ্ট থাকে তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি। আর যারা এর ওপর অসন্তুষ্ট থাকে তাদের জন্য রয়েছে মহান রবের অসন্তুষ্টি।’ (সুনানে তিরমিজি : ২৩৯৬)
সকাল-সন্ধ্যা দোয়া পাঠ: প্রিয়নবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে মুমিন বান্দা সকাল-সন্ধ্যা তিনবার এই দোয়া ‘রাজিতু বিল্লাহি রাব্বান ওয়া বিল ইসলামী দ্বীনান ওয়া বি মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ পাঠ করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে বিচার দিবসে অবশ্যই সন্তুষ্ট করে দেবেন।’ (আল আহাদ ওয়াল মাসানিলি আহমদ : ৪৭১)
পবিত্র বাক্য উচ্চারণ: রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি কখনো আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির কথা বলে যার সম্পর্কে সে ধারণাও করে না যে, তা কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, অথচ আল্লাহ তায়ালা তার এ কথার বিনিময়ে তার সাথে সাক্ষাতের দিন পর্যন্ত সন্তুষ্টি লিখে দেন।’ (তিরমিজি : ২৩১৯)
আল্লাহর জিকির: হজরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, আমি কি তোমাদেরকে অধিক উত্তম কাজ সম্পর্কে জানাব না, যা তোমাদের মালিকের কাছে সবচেয়ে পবিত্র, তোমাদের সম্মানের দিক থেকে সবচেয়ে উঁচু, সোনা-রুপা, দান-সদকা করার চেয়েও বেশি ভালো এবং তোমাদের শত্রুর মোকাবিলায় অবতীর্ণ হয়ে তাদেরকে তোমাদের নিধন করা ও তোমাদেরকে তাদের নিধন করার চেয়েও উত্তম? তারা বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তা হলো আল্লাহ তায়ালার জিকির।’ (সুনানে তিরমিজি : ৩৩৭৭)
তবে নেক আমলের পাশাপাশি নিজেকে গুনাহমুক্ত রাখতে হবে। তাহলে আমরা আল্লাহর অসন্তুষ্টি অর্জন করতে পারব ইনশাআল্লাহ।