
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ। ছবি: সংগৃহীত
বড়পীর হজরত আবদুল কাদির জিলানি (রহ.)-এর ওফাত দিবস মুসলিম সুফিদের কাছে ‘ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম’ নামে পরিচিত। ‘ফাতেহা’ বলতে দোয়া অনুষ্ঠানকে বোঝানো হয়। প্রতিবছর আরবি মাসের রবিউস সানির এগারোতম দিনে এ দিবস পালিত হয়। আজ সোমবার (৭ নভেম্বর) পবিত্র ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম। প্রতিবছরের ন্যায় এবারেও সারা দেশে ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের সাথে পালিত হবে দিবসটি ।
দিবসটি উপলক্ষে আজ বাদ জোহর ১টা ৩০ মিনিটে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে হজরত আবদুল কাদির জিলানি (রহ.)-এর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করবেন রাজধানীর গাউসুল আজম জামে মসজিদের খতিব হযরত মাওলানা আবদুর রাজ্জাক আল আযহারী।
ওলিকুল শিরোমণি ১০৭৭ খ্রিষ্টাব্দ মোতাবেক ৪৭০ হিজরি সালের ১ রমজান ইরাকের বাগদাদের প্রায় ৪০০ মাইল অদূরে জিলান নগরের সুবিখ্যাত সাইয়্যেদ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হজরত সাইয়্যেদ আবু সালেহ মুসা। মাতার নাম উম্মুল খায়ের ফাতেমা। তার বাবার বংশ হজরত ইমাম হাসান (রা.) এর সাথে এবং মায়ের বংশ হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) এর সাথে মিলিত হয়; এ কারণে তাকে ‘আল-হাসানি ওয়া আল-হোসাইনি’ বলা হয়।
পিতৃকুল-মাতৃকুল উভয় দিক থেকেই হজরত আলী (রা.) এর বংশধর অর্থাৎ মহানবী (সা.) এর বংশধর। ইসলামকে নতুন জীবন দেয়ার জন্য তিনি পরবর্তী সময়ে হজরত মুহিউদ্দিন আবদুল কাদের (র.) নামে পরিচিতি লাভ করেন। জিলান শহরের অধিবাসী বিধায় তার নামের শেষে ‘জিলানী’ উপাধি সংযুক্ত করা হয়েছে।
আল্লাহর বাণী ও মিষ্টভাষী বক্তৃতা দিয়ে বড় পীর কোটি কোটি মানুষকে ইসলামের পথে ফিরিয়ে আনেন এবং সমকালীন বিশ্বে আউলিয়া কিরামের ওপর সুউচ্চ মর্যাদা লাভ করেন। সারা বিশ্বের মধ্যে তার ভক্ত ও মুরিদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বলে খ্যাতি ছিল। আল্লাহ তাকে সব ওলির চেয়ে অধিক কারামতি দান করেছিলেন। ফলে তিনি আল্লাহর দ্বীনকে দুনিয়াতে ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা অর্জন করেছিলেন।
ইসলামের চির আলোকময় পথে ডাকার জন্য তিনি অনেক ওয়াজ-নসিহতও করেছেন; যাতে ছিল বিস্ময়কর প্রভাব। তার প্রতিটি কথা মানুষের হৃদয়ে দারুণভাবে গেঁথে যেত, তাদের পরকালের চিন্তায় বিভোর করে তুলত।
সারা জীবন পথহারা মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দিয়ে আল্লাহ প্রেমিক মহান সাধক, ওলিকুল শিরোমণি ১১৬৮ খ্রিষ্টাব্দ মোতাবেক ৫৬১ হিজরির ১১ রবিউস সানি ৯১ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন।