নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১০ পিএম
আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০৫ এএম
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে থাকা বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন ফিরে এসেছেন।
আজ শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজ শুরুর আগে বায়তুল মোকাররমের বর্তমান খতিব হাফেজ মাওলানা ড. মুফতি ওয়ালিয়ুর রহমান খান বয়ান করছিলেন। এমন সময় পলাতক খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন অনুসারীদের নিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদে এসে বর্তমানে খতিবের মাইক্রোফোনে হাত দেন। এসময় বর্তমান খতিবের অনুসারীরা রুহুল আমিনের অনুসারীদের প্রতিরোধ করেন।
তখন দুইপক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন। এতে করে মসজিদের সাধারণ মুসল্লিরা বিচলিত হয়ে পড়েন।
ওই সময় অনেকে মসজিদ থেকে বেরিয়ে পড়েন। পরে পরিবেশ কিছুটা ঠান্ডা হলে সোয়া একটা দিকে আবার সাধারণ মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশ করেন।
খবর পেয়ে মসজিদে আসেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তা ছাড়া আগে থেকেই বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য অবস্থান করছিলেন।
এরপর থমথমে পরিস্থিতিতে নামাজ শেষে সাধারণ মুসল্লিরা মসজিদ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ দেখা যায় মসজিদ থেকে স্লোগান দিতে দিতে একদল মুসল্লি বের হন। তারা ‘একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা...।’ বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
এসময় পুলিশ তাদের মসজিদ এলাকা থেকে চলে যেতে বলেন। কিন্তু তারা রাস্তায় গিয়ে দাঁড়ান। পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেন।
জানা গেছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে লাপাত্তা ছিলেন বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন। পরবর্তীতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে নতুন খতিব নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে চলে যান বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন। সে কারণে নামাজ পড়ানোর জন্য নতুন একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, রুহুল আমীন গোপালগঞ্জের গওহর মাদ্রাসার মহাপরিচালক। তার বাবা প্রয়াত শামছুল হক ফরিদপুরী দেশের প্রখ্যাত আলেম। রুহুল আমীন কওমি মাদ্রাসা অঙ্গনে আওয়ামী লীগপন্থি আলেম হিসেবে পরিচিত। তিনি কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘শোকরানা মাহফিলে’ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধি দিয়ে আলোচিত হয়েছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নড়াইল-১ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হতে এলাকাায় পোস্টারও লাগিয়েছিলেন। এসব কারণে তার ওপর মুসল্লিদের একটি অংশ অসন্তুষ্ট ছিল। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানিয়েছে, গতকাল মসজিদে মাদ্রাসার কয়েক শ ছাত্র উপস্থিত ছিলেন। এর বেশিরভাগ গওহরডাঙা থেকে এসেছিলেন বলে জানা গেছে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh