করোনাভাইরাসের নতুন ধরন: জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারত সফরে ‘না’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৫, ১৫:৫৭

পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে করোনার সাব-ভ্যারিয়েন্ট উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে
পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে করোনাভাইরাসের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পরার কথা জানিয়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারতসহ অন্যান্য সংক্রমিত দেশে ভ্রমণ না করারও পরামর্শ দিয়েছে সরকার।
সেই সঙ্গে দেশের সব বন্দরে সতর্কতা ও তদারকি জোরদার করার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সতর্কতা জারি করা হয়।
দেশের সব স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে এই নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
এতে জানানো হয়, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে বিশেষ করে ওমিক্রন এলএফ সেভেন, এক্সজিএফ, জেএন ওয়ান এবং এনবি ওয়ান পয়েন্ট এইচ পয়েন্ট ওয়ান সাব-ভ্যারিয়েন্টগুলোর সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।
বাংলাদেশেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর মো. হালিমুর রশিদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে সংক্রমণ রোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগ্রহণ জরুরি।”
কোন ধরনের সতর্কতা
বিজ্ঞপ্তিতে বেশ কিছু স্বাস্থ্য অনুশীলন মেনে চলতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে আছে বারবার প্রয়োজনমতো সাবান দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড হাত ধোয়া; নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক বাধ্যতামূলকভাবে ব্যবহার করা, আক্রান্ত ব্যক্তিদের থেকে ন্যূনতম ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা, অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ না করা, হাঁচি-কাশির সময় বাহু, টিস্যু বা কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রাখা।
বন্দরগুলোতে থার্মাল স্ক্যানার বা হ্যান্ডহেল্ড থার্মোমিটারে ‘নন-টাচ’ তাপমাত্রা মাপা বাধ্যতামূলক করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে পিপিই, মাস্ক ও গ্লাভস সংরক্ষণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রোগ প্রতিরোধ বিষয়ক সচেতনতামূলক প্রচারণা জোরদার করার জন্যও বলা হয়েছে।
সন্দেহভাজন রোগীদের জন্য করণীয়
অসুস্থ অবস্থায় বাইরে না গিয়ে ঘরে থাকার পরামর্শ এবং রোগীকে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক ব্যবহার করতে উৎসাহিত করতে বলেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
প্রয়োজনে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান- আইইডিসিআর এর হটলাইন (০১৪০১-১৯৬২৯৩) নম্বরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শনাক্ত ও সংক্রমণের হার বাড়ছে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেবে, ২ জুন ২০২৫ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত এক সপ্তাহে দেশে মোট ৩৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে একজনের। পরীক্ষার অনুপাতে শনাক্তের হার ২৬.৫৩ শতাংশ। ২ জুন শনাক্ত হন ১৪ জন, পরীক্ষার বিপরীতে পজিটিভিটি রেট ছিল ৫০ শতাংশ। এরপর ৩ জুন ৯ জন (শনাক্তের হার ২২.৫০ শতাংশ), ৪ জুন ৭ জন (২১.৮৮ শতাংশ), ৫ জুন ৩ জন (১৪.২৯ শতাংশ) শনাক্ত হন। তবে ঈদের ছুটির মধ্যে ৬ ও ৭ জুন কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। ৮ জুন আবার শনাক্ত হন ৩ জন, এদিন শনাক্তের হার ৭৫ শতাংশ।
প্রতিদিন গড় পরীক্ষার সংখ্যা মাত্র কয়েক ডজন। এত কম পরীক্ষার মধ্যেও এমন উচ্চ শনাক্তের হার বিশেষজ্ঞদের চিন্তিত করছে। কারণ, এটি ইঙ্গিত দেয় যে প্রকৃত সংক্রমণ পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে, যা নজরদারির বাইরে রয়ে গেছে।