রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা: চার আসামি ট্রাইব্যুনালে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৫, ১৫:০৫

২০২৪ সালের জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাইদ হত্যা মামলায় চার আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
রবিবার সকালে প্রিজনভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় সাবেক এসআই আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম এবং ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশকে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে তাদের বিষয়ে শুনানি হবে।
গত ৯ এপ্রিল ট্রাইব্যুনাল এই চারজনকে হাজির করার নির্দেশ দেয় এবং ১৫ জুনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
প্রসিকিউশন ট্রাইব্যুনালকে জানিয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। এই ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিলেন সাবেক এসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও ছাত্রলীগ কর্মী ইমরান চৌধুরী আকাশসহ আরও অনেকে সহায়তা ও উস্কানি দিয়েছেন।
ওই চার আসামি অন্য মামলায় আগে থেকেই গ্রেপ্তার ছিলেন। প্রসিকিউশন তাদের এই মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন জানিয়েছে।
২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে ১৬ তারিখ রংপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে নিহত হন আবু সাঈদ।
সাঈদ দুই হাত প্রসারিত করার মধ্যে তাকে গুলি করার ভিডিও সংবাদ মাধ্যমে প্রচার চলে জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। সেদিন থেকেই আন্দোলন বড় হয়ে উঠে। পরদিন থেকে সারা দেশে ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে।
একের পর এক মৃত্যু, সরকারি সম্পত্তিতে হামলা, আগুনের মধ্যে ১৯ জুলাই কারফিউ দিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি শেখ হাসিনা সরকার। তুমুল গণ-আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট পতন হয় টানা সাড়ে ১৫ বছরের আওয়ামী লীগের শাসন, শেখ হাসিনা তার বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে উড়ে যান ভারতে।
সরকার পতনের আন্দোলনে সরকারি হিসাবে সাড়ে আটশর মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এসব ঘটনায় পতিত সরকারের নেতৃত্বে থাকা সদস্য এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্তা এবং মাঠ পর্যায়ে যাদের বিরুদ্ধে গুলি করার অভিযোগ আছে, তাদের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যে ট্রাইব্যুনালটি ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছিল মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য।