ইশরাককে মেয়রের শপথ পড়ানোর দাবিতে অনড় সমর্থকরা, অচল নগর ভবন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৫, ১৫:২৯

ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়রের শপথ পড়ানোর দাবিতে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন তার সমর্থকরা।
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়রের শপথ পড়ানোর দাবিতে ঈদের বিরতির পর আবারও সরব হয়েছেন তার সমর্থকরা।
বুধবার ঈদের পর চতুর্থ দিনের মতো নগর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সংস্থাটির কিছু কর্মচারী ও বিএনপি নেতাকর্মীরা। ‘ঢাকাবাসী’র ব্যানারে ইশরাকের অনুসারীরাও এতে যোগ দিয়েছেন।
সকাল থেকেই বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে মিছিলসহ নগর ভবনে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। পরে ভবনের মূল সিঁড়িতে বসে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যেতে থাকেন তারা।
‘শপথ নিয়ে তালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘ইশরাক ভাইয়ের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘রাজপথ কাঁপছে ইশরাক ভাই আসছে’— এমন স্লোগান দিচ্ছেন তার সমর্থকরা।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া কর্মচারী আলম শেখ বলেন, “আইনগত বৈধতা থাকা সত্ত্বেও শুধু স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার ইচ্ছার অভাবে ইশরাক হোসেনকে এখনো শপথ পড়ানো হয়নি। আমরা শপথ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
তাদের আন্দোলনের কারণে টানা ৩৪ দিন ধরে নগর ভবনের প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে।
রবিবার ইশরাক হোসেন এক ঘোষণায় বলেছিলেন, আন্দোলন চললেও নাগরিক সেবা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, নগর ভবনের প্রধান ফটক ও অভ্যন্তরের সব দরজায় তালা ঝুলছে। বহু সেবা প্রত্যাশী নাগরিক ফিরে গেছেন সেবা না পেয়ে।
চলমান আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত রেখে ৩ জুন কোরবানির ঈদের ছুটির আগে ইশরাক হোসেন আন্দোলন শিথিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন। আন্দোলনের বিরতির আগের পর্যায়ে, ১৫ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত, নগর ভবনের সব নাগরিক সেবা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ঈদের ছুটির পর আজ ছিল চতুর্থ দিনের মতো এই কর্মসূচি।
২০২০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে ইশরাক মামলা করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মেয়রদের অপসারণ হলে অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান মিয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক হন।
২০২৪ সালের ২৭ মার্চ আদালতের রায়ে তাপসের বিজয় বাতিল হয় এবং ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করা হয়। এরপর নির্বাচন কমিশন ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে।
তবে গেজেট স্থগিত চেয়ে আপত্তি আসে। হাইকোর্টে রিট করা হলে পরে তা খারিজ হয়। আপিল বিভাগ ২৯ মে জানায়, ইশরাকের শপথ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু এরপরেও নির্বাচন কমিশন কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় ঈদের পর আবারও আন্দোলনে নামেন ইশরাকপন্থিরা।