
শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৩তম।
তিনটি আন্তর্জাতিক সংস্থার গঠন করা কমিশনের প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। শিশুদের স্বাস্থ্য, পরিবেশ আর ভবিষ্যৎ রক্ষায় বিশ্বের কোনো দেশই যথেষ্ট প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও), ইউনিসেফ ও দ্য লেনসেট গঠিত একটি কমিশনের প্রতিবেদনে এমন কথা বলা হয়েছে।
‘এ ফিউচার ফর দ্য ওয়ার্ল্ড চিলড্রেন?' (শিশুদের জন্য একটি ভবিষ্যৎ?) শিরোনামে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৪০ জনেরও বেশি শিশু-কিশোর স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
এতে বলা হয়েছে, পরিবেশগত অবক্ষয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের প্রতিটি দেশের শিশু-কিশোরের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে। শোষণমূলক বিপণনের চর্চায় ফাস্ট ফুড, মিষ্টি পানীয়, অ্যালকোহল আর তামাকের অভ্যাস গড়ে উঠছে শিশুদের মধ্যে, যা সংকটে ফেলছে তাদের স্বাস্থ্যকে।
এই কমিশনের সহকারী প্রধান ছিলেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্ক। তিনি বলেন, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে বাস করা পাঁচ বছরের কম বয়সি ২৫ কোটি শিশু তাদের সম্ভাবনা অনুযায়ী বেড়ে না ওঠার ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিপদ থেকে মুক্ত নয় ধনী দেশের শিশুরাও। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন আর বাণিজ্য চাপের কারণে বিশ্বজুড়েই শিশুরা টিকে থাকার হুমকিতে রয়েছে। সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিতের জন্য শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে দেশগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর আহবান জানান তিনি।
প্রতিবেদনটিতে দুইটি তালিকা রয়েছে- একটি শিশুদের জীবনমান উন্নয়ন নিয়ে, যেখানে বেঁচে থাকার সুযোগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পুষ্টিসংক্রান্ত দিকগুলো বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এই সূচকে এগিয়ে উন্নত দেশগুলো আর পিছিয়ে দরিদ্ররা। শীর্ষ পাঁচের মধ্যে আছে নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া, নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ড। অন্যদিক তলানিতে আছে সেন্ট্রাল আফ্রিকা রিপাবলিক, শাদ, সোমালিয়া, নাইজার আর মালি।
এই তালিকার ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৩তম। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে যেখানে শ্রীলঙ্কা ৬৮তম, মালদ্বীপ ৭২তম, ভুটান ১১৩তম, ভারত ১৩১তম, পাকিস্তান ১৪০তম আর নেপাল রয়েছে ১৪৪তম অবস্থানে।
প্রতিবেদনে আরেকটি সূচক রয়েছে- দেশগুলোর পরিবেশগত টেকসই অবস্থার উপর ভিত্তি করে। সেখানে মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণের মাত্রাকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এই তালিকায় দরিদ্র আর শিল্প উন্নয়নে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর অবস্থানই সবচেয়ে ভালো।
মাথাপিছু সবচেয়ে কম কার্বন নিঃসরণকারীদের মধ্যে শীর্ষে আছে বুরুন্ডি, শাদ, সোমালিয়া, কঙ্গো, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক ও মালাওয়ি।
মাথাপিছু সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণ করা দেশের মধ্যে উপরে রয়েছে কাতার, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন। বাংলাদেশ রয়েছে ৩৯তম অবস্থানে।-ডয়চে ভেলে