Logo
×

Follow Us

দক্ষিণ এশিয়া

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব: জাতিসংঘে ভোট না দিয়ে সমালোচিত মোদি সরকার

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৩, ২৩:১১

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব: জাতিসংঘে ভোট না দিয়ে সমালোচিত মোদি সরকার

জাতিসংঘে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়েছে। ছবি- সংগৃহীত

গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ওই প্রস্তাব পাস হয়। প্রস্তাবের পক্ষে ১২০টি দেশ ভোট দেয়। বিপক্ষে ১৪ ও ভোটদানে বিরত ছিল ৪৫টি দেশ। জাতিসংঘে পাস হওয়া প্রস্তাবে ভারত ভোটদানে বিরত থাকায় দেশটিতে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেওয়া দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, জাপানের সঙ্গে ভারত ওই প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত ছিল।

ভারতের ভোটদানে বিরত থাকায় কংগ্রেসসহ বিরোধী দলগুলো এর সমালোচনা করছে। কংগ্রেস বলেছে, ভারতের ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত বিস্ময়কর। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভারতের ভোট না দেওয়া আমাকে বিস্মিত ও লজ্জিত করেছে। ভারত গড়ে উঠেছে অহিংসা ও সত্যের ভিতের ওপর। এ নীতি ধরে রাখতে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা প্রাণ বিসর্জন দেন। এই নীতিই আমাদের সংবিধান গড়ে তুলেছে, তা আমাদের জাতির পরিচয়ও।

এক্স-এ (সাবেক টুইটার) প্রিয়াঙ্কা বলেন, গাজায় মানবিকতা প্রতি পদে লঙ্ঘিত হচ্ছে। লাখ লাখ মানুষের কাছে খাদ্য, পানীয়, ওষুধপত্র পৌঁছনো যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ ও অন্য যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। হাজার হাজার ফিলিস্তিন পুরুষ, নারী ও শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ভূমিকা না নিয়ে নীরব থাকা মানবতাকে অস্বীকারের শামিল। অথচ জাতি হিসেবে ভারত চিরকাল এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। প্রিয়াঙ্কা আরও বলেছেন, চোখের বদলে চোখ নীতি গোটা পৃথিবীকে অন্ধ করে দেয়।

প্রিয়াঙ্কার মতোই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার। আজ শনিবার (২৮ অক্টোবর) তিনি এই প্রসঙ্গে বলেন, ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে ভারতের এমন সিদ্ধান্তহীনতা তিনি আগে দেখেননি। অতীতে ভারত সব সময়ই ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। এবার সেই ধারাবাহিকতা দেখা গেল না।

শারদ বলেন, ৭ তারিখে হামাস হামলা চালাল। এর পরদিন ‘মর্মাহত’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরায়েলের পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর কথা জানালেন। তিন দিন পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলার পরেও সেই এক মনোভাবের পুনরাবৃত্তি করলেন তিনি। এরপর ১২ অক্টোবর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি ‘স্বাধীন, সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র’ গঠনে ভারতের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার কথা জানান। এই নীতি পরিবর্তনের কড়া সমালোচনা করে শারদ পাওয়ার বলেন, ভারত কখনো ইসরায়েলকে এভাবে সমর্থন করেনি। শারদ পাওয়ার এর আগেও প্রধানমন্ত্রী মোদির এই ভূমিকাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়েছিলেন।

কংগ্রেসের সমালোচনার জবাব দিতে দেরি করেনি বিজেপি। প্রিয়াঙ্কার মন্তব্যের সমালোচনা করে সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুক্তার আব্বাস বলেন, যারা ‘বিস্মিত ও লজ্জিত’ তাদের জানা উচিত, ভারত কখনো সন্ত্রাসবাদের পক্ষে থাকেনি। প্রিয়াঙ্কার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আগে নিজেকে শিক্ষিত করুন। মনে হচ্ছে, কংগ্রেসের অতীত অবস্থান সম্পর্কে অজ্ঞরা আপনাকে পরামর্শ দিচ্ছেন। আপনি রাহুল গান্ধীর চেয়ে ভালো এটা প্রতিপন্ন করতে গিয়েই তাঁরা আপনাকে হাসির পাত্র করে তুলছেন।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি পেশ করেছিল জর্ডান। তাতে হামাসের হামলার উল্লেখ না থাকায় ভারত ভোটদানে বিরত থাকে। পাল্টা এক প্রস্তাব তুলেছিল কানাডা। তাতে হামাসের হামলার নিন্দা জানানো হয়। ভারত ওই প্রস্তাবে সমর্থন দিলেও তা গৃহীত হয়নি।

শেষমেষ জর্ডানের প্রস্তাবটিই পাস হয়। জাতিসংঘে ভারতের সহকারী স্থায়ী প্রতিনিধি যোজনা প্যাটেল সাধারণ পরিষদে বলেন, সন্ত্রাস ও সহিংসতার বিরুদ্ধে সাধারণ পরিষদের স্পষ্ট বার্তা পাঠানো দরকার। পাশাপাশি কূটনীতি ও সংলাপের পরিসর বাড়ানো প্রয়োজন যাতে মানবিক সংকট মোকাবিলা করা যায়। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ দেশ, সীমান্ত, জাতি মানে না। সন্ত্রাসবাদ কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫