Logo
×

Follow Us

দক্ষিণ এশিয়া

গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্পের ভূমিকা চায় হামাস

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৫, ১৫:১৭

গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্পের ভূমিকা চায় হামাস

গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনটাই মনে করে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। ওয়াশিংটন যদি চায়, সংগঠনটি গাজার শাসনভার হস্তান্তরেও প্রস্তুত।

স্কাইনিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা বাসেম নাইম।

তিনি জানিয়েছেন, এরই মধ্যে হামাসের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যদি এটি সম্ভব হয়- যুদ্ধবিরতির পরে গাজা প্রশাসনের দায়িত্বও তারা হস্তান্তর করবে।

হামাসে দেওয়া প্রস্তাবে বন্দি বিনিময়, ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি এবং জোরপূর্বক অভিবাসন ছাড়া গাজা পুনর্গঠনের মতো বিষয়গুলো রাখা হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে নাইম বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন ট্রাম্প “এই শান্তিপূর্ণ অবস্থা আনয়নের জন্য সক্ষমতা ও সদিচ্ছা— উভয়ই রাখেন।”

তিনি আরও বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি ইসরায়েলিদের ওপর যথেষ্ট চাপ প্রয়োগ করে যুদ্ধটি তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করার ব্যবস্থা করতে পারেন। তাহলে এই অঞ্চলে আরও শান্তিপূর্ণ অবস্থা তৈরি করার লক্ষ্যে আমরা তার সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।”

সম্প্রতি ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরুর দিনেই হামাস সোমবার আমেরিকান-ইসরায়েলি বন্দি ইদান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দিয়েছে। একই দিনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, তারা ওয়াশিংটনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় রয়েছে।

হামাস এমন সময় এই দাবি করল, যখন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে দুরত্ব সৃষ্টি হয়েছে ট্রাম্পের। মধ্যপ্রাচ্য সফরে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার সফরে গেলেও তালিকায় নেই ইসরায়েল।

তবে ইসরায়েলকে দেওয়া সামরিক সহযোগিতা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রেখেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

ইদানের মুক্তির দিনে হামাস এক বিবৃতিতে বলেছিল, “আমরা ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যে, যেন তারা গাজা উপত্যকার শিশু, নারী ও নিরস্ত্র নাগরিকদের ওপর যুদ্ধাপরাধী (ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন) নেতানিয়াহুর চালানো এই বর্বর যুদ্ধ বন্ধে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে।”

ইদিন আলেকজান্ডার আমেরিকান হলেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে হামাসের নেতৃত্বে চালানো হামলায় তিনি বন্দি হন। ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং ২৫০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করা হয়।

জবাবে ইসরায়েল যে সামরিক অভিযান চালায়, তাতে এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

মার্চের শুরু থেকে চলা মানবিক সহায়তার ওপর অবরোধের ফলে এখন অঞ্চলটি দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

নাইমের মন্তব্য থেকে ধারণা করা যায়, যুক্তরাষ্ট্র যাকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেছে সেই হামাস মনে করে, ইসরায়েলের চলমান অভিযান বন্ধে ট্রাম্প একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। এই অভিযানে বৃহস্পতিবারও বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

নাইম জানান, হামাস মিশরের একটি শান্তি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে, যার আওতায় গাজা পরিচালনার জন্য একটি রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন প্রশাসনিক সংস্থা গঠন করা হবে।

তিনি বলেন, “এর আগ পর্যন্ত, যতক্ষণ আমরা দখলদারিত্বের শিকার জাতি হিসেবে রয়েছি, ততক্ষণ আমাদের অধিকার রয়েছে আমাদের জনগণকে রক্ষা করতে ও প্রতিরোধ চালিয়ে যেতে।

এর আগে হামাস ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সরাসরি আলোচনা চলছে— এমন খবরে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল।

যদিও হামাস নেতারা এ সপ্তাহে এসব মন্তব্য করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন— এই গোষ্ঠী এখনও যুদ্ধ বন্ধে যথেষ্ট কিছু করছে না।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক মুখপাত্র স্কাই নিউজকে বলেন, “হামাস এখনও শান্তির বিষয়ে আন্তরিকতার প্রমাণ দেয়নি।”

তিনি যোগ করেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাদের অস্ত্র পরিত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “হামাস এখনও বেআইনিভাবে বন্দিদের, এমনকি মার্কিন নাগরিকদের মরদেহ, গাজার গোপন স্থানে আটকে রেখেছে— যাদের সহজেই মুক্তি দেওয়া যেত। তারা এখনো বেসামরিক জনগণের ওপর হামলা চালানো বন্ধ করার ইঙ্গিতও দেয়নি।”

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলাকালে হামাসের সদস্যসংখ্যা ব্যাপকভাবে কমেছে, বহু জ্যেষ্ঠ নেতা নিহত হয়েছেন। তবুও তারা গাজায় শক্ত অবস্থান বজায় রেখেছে এবং যে কোনো যুদ্ধবিরতির আলোচনায় তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

ইসরায়েল সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সামরিক অভিযান আরও জোরালো করেছে, যাতে তারা গাজার বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে এবং পুরো অঞ্চলে সহায়তা বিতরণের দায়িত্ব নিজেরা হাতে নিতে পারে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫