
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
ভারতের সুপ্রিম কোর্টে গত এক দশক ধরে চলা রাম মন্দির-বাবরি মসজিদ জমি বিরোধ মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। তবে রায় ঘোষণার দিনক্ষণ অপেক্ষমান রেখেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
চাঞ্চল্যকর মামলাটির শুনানি গতকাল বুধবার শেষ হয়েছে। টানা ৪০ দিন শুনানির পর গতকাল তা শেষ করা নির্দেশ দেন দেশটির প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, ১৭ নভেম্বরের আগে এই মামলার রায় ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈই অবসরে যাচ্ছেন। তিনি এই মামলার শুনানির জন্য গঠিত পাঁচ বিচারকের বেঞ্চের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এলাহাবাদ উচ্চ আদালতের বিচারক এস এ বোবদে, ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষণ ও এস এ নাজিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চটিতে ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি হচ্ছে। ওই রায়ে অযোধ্যার বিরোধপূর্ণ ২ দশমিক ৭৭ একর জমিকে সমান তিনটি ভাগে ভাগ করার নির্দেশ দেয়া হয়।
মামলার এক আইনজীবী গতকাল সকালে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আরো সময়ের আবেদন জানালে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈই বলেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে। বিকেল পাঁচটায় শুনানি শেষ হতেই হবে।’
ভারতের বেসরকারি টিভি চ্যানেল এনডিটিভি জানায়, এর আগে বিচারপতি গগৈই চলতি সময়সীমার মধ্যে রায় লেখা সম্ভব হবে কিনা সে ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। আদালত তিনদিনের মধ্যেই আবেদনকারীদের তাদের সাক্ষ্য-প্রমাণ ও যুক্তি উপস্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছে।
মুসলিম আবেদনকারীরা বলেছেন, ১৯৮৯ সালের আগ পর্যন্ত অযোধ্যা ওই জমিকে নিয়ে হিন্দুদের কোনো দাবি ছিল না। তারা ১৯৯২ সালের ডিসেম্বর মাসে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের আগে এটি যেমন ছিল ঠিক তেমন করে পুনরায় নির্মাণের আবেদন জানান।
এনডিটিভি জানায়, এলাহাবাদ উচ্চ আদালতের ২০১০ সালের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে ১৪টি আবেদন করা হয়। ওই রায়ে জমিটিকে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নিমোর্হি আখড়া ও রাম লিলার মধ্যে সমানভাবে বন্টনের নির্দেশ দেয়া হয়।
এই স্থানেই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ভগবান রাম জন্ম গ্রহণ করেছিলেন এবং একটি প্রাচীন মন্দির ভেঙ্গে ওই স্থানেই বাবরি মসজিদ নির্মাণ করা হয় বলে অনেক হিন্দু বিশ্বাস করেন।
কট্টর হিন্দুত্ববাদী ডানপন্থীরা ১৯৯২ সালের ডিসেম্বর মাসে ১৬ শতকে নির্মিত বাবরি মসজিদটি ভেঙে করে ফেলে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা উপমহাদেশে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিল।