বেদ-পুরাণে ঠাঁসা নতুন পাঠ্যক্রম, উপেক্ষিত মুঘলরা

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২১, ২৩:০৮

সম্প্রতি ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) স্নাতক স্তরে ইতিহাসের নতুন পাঠ্যক্রম প্রকাশ করেছে। আর তা দেখেই হতবাক অনেক শিক্ষাবিদ।
নতুন পাঠ্যক্রমে মহাভারত ও রামায়ণ স্থান পেলেও ঠাঁই হয়নি মুঘল সম্রাট আকবর কিংবা বিশ্বের সপ্তমাশ্চর্য তাজমহলের স্রষ্টা সম্রাট শাহজাহানের নাম। এমনকি পুরোপুরি উপেক্ষিত থেকে গেছে মধ্যযুগ। পাঠ্যক্রমে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে মারাঠা ইতিহাস।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, ভারতের মধ্যযুগের ইতিহাসকে এভাবে উপেক্ষা করায় উঠছে প্রশ্ন। পাঠ্যক্রমে উল্লেখিত রেফারেন্স বইয়ের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ইরফান হাবিব, রামশরণ শর্মারা। রয়েছে হিন্দি ভাষার প্রচুর বই। এদিকে বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে বেদ ও পুরাণে।
ইউজিসির প্রকাশিত ৯৯ পাতার পাঠ্যক্রমে কট্টরপন্থি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) ছাপ দেখতে পাচ্ছেন অনেকেই।
ভারতের প্রাচীনতম ইতিহাসকে ৫৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। বাবরের উল্লেখ থাকলেও তাঁকে হানাদার বলে গণ্য করা হয়েছে। পাঠ্যক্রমে যোগ হয়েছে 'আইডিয়া অফ ভারত' নামক একটি আলাদা পেপার। তাতে গুরুত্ব পেয়েছে বেদ, উপনিষদ, পুরাণ। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের নামে বিভিন্ন হিন্দু তীর্থক্ষেত্র, হিন্দুদের ধর্মীয় মেলা, স্থাপত্যকে স্থান দেয়া হবে। পঞ্চতন্ত্র, জাতকের গল্প ছাড়াও এই পাঠ্যক্রমে রয়েছে ভজন, হরিকথা, বৈদিক মন্ত্র।
প্রশ্ন উঠেছে মহাভারত কি ইতিহাসের অংশ? কৃষ্ণ কি ইতিহাসের কোনো চরিত্র? মধ্যযুগকে কেন উপেক্ষা?
বর্ণ ব্যবস্থা, মধ্যযুগীয় ইতিহাসের বৈচিত্রময় বহুত্ব, ঔপনিবেশিক যুগের মুক্ত বাণিজ্য নীতি, সতীদাহ রদ, বাংলায় ১৯৪৩-এর দুর্ভিক্ষের মতো বিষয়কে উপেক্ষা করা হয়েছে এই পাঠ্যক্রমে। তার বদলে ইতিহাসের নামে অনৈতিহাসিক ও পৌরাণিক চরিত্রদের রাখা হয়েছে ইতিহাসের পাঠ্যক্রমে। পাশাপাশি রেফারেন্সের নামে হিন্দি বইয়ের বাড়বাড়ন্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।