রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস
মুসলিমদের কেন নাগরিকত্ব দেব: অমিত শাহ

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:১০

ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছবি: এনডিটিভি
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) প্রসঙ্গে লোকসভায় যা ঊহ্য রেখেছিলেন, রাজ্যসভায় তা স্পষ্ট করে দিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
তিনি বলেন, পুরো পৃথিবী থেকে যদি মুসলিমরা এসে এ দেশের নাগরিকত্ব চান, তা হলে তা দেয়া সম্ভব নয়। এভাবে চলতে পারে না।
বিরোধীদের মতে, এই বিল হল সরকারের আগ্রাসী হিন্দুত্ব নীতির পরিচায়ক। যদিও বিজেপির পাল্টা যুক্তি, দলের ইস্তেহারেই বিলটি আনার কথা ছিল। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়েছে।
বিরোধী শিবিরের তীব্র প্রতিবাদ, হাড্ডাহাড্ডি লড়াই ও প্রায় ৯ ঘণ্টার বিতর্কের পরে গতকাল বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজ্যসভায় পাস হয় বিলটি। বিলের পক্ষে ১২৫টি ভোট পড়েছে। অন্যদিকে বিপক্ষে ভোট দেন ১০৫ জন এমপি। এখন দেশটির প্রেসিডেন্ট স্বাক্ষর করলেই বিলটি আইনে পরিণত হবে।
এর ফলে আরো মসৃণ হবে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা অ-মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর বা তার আগে থেকে তারা ভারতে শরণার্থী হিসেবে বাস করলে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। অবৈধভাবে বসবাস করার জন্য আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত হবে না বলে ভরসা দিয়েছেন শাহ।
এ দিন বিল পাশ হতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বলেন, সমবেদনা ও সৌভ্রাতৃত্বের যে সংস্কৃতি আমাদের রয়েছে, এই বিলটি তার মাইলফলক।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিন জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে একটি কথাও বলেননি অমিত শাহ। আসামের এনআরসির ব্যর্থতা ঢাকতে ও বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু ভোটব্যাংককে বার্তা দিতে তড়িঘড়ি সিএবি আনার সিদ্ধান্ত নেয় মোদি সরকার। ওই বিলে কেন কেবল অমুসলিমদের (হিন্দু, শিখ, পার্সি, খ্রিস্টান, জৈন ও বৌদ্ধ) কেন সুবিধে দেয়া হল, তা নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন তুলে আসছেন বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, মুসলিমদের সঙ্গে বিভাজনের রাজনীতি করার উদ্দেশ্যেই বিলটি আনা হয়েছে।
লোকসভায় এই অভিযোগের স্পষ্ট জবাব না দিলেও, রাজ্যসভায় অমিত শাহ পাল্টা প্রশ্নে বলেন, গোটা দুনিয়া থেকেই যদি মুসলিমরা এসে এ দেশে নাগরিকত্ব চান, তাদের সবাইকে কি নাগরিকত্ব দিয়ে দেব? কী করে দেব। দেশ কী ভাবে চলবে, এভাবে চলতে পারে না।
এরপরেই তার যুক্তি, প্রতিবেশী তিন দেশের রাষ্ট্রধর্ম হল ইসলাম। সেই কারণে শরণার্থী হিসেবে আসা তিন দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। না হলে উৎপীড়নের শিকার ওই মানুষেরা কোথায় যাবেন।- আনন্দবাজার পত্রিকা
নাগরিকত্ব বিল নিয়ে বিক্ষোভ, ত্রিপুরায় বন্ধ ইন্টারনেট ও এসএমএস