
ছবি: এনডিটিভি
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ যাতে আরো অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে সেজন্য কিছু বাসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে পুলিশই। এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুধু তাই নয়, ওই দাবির সপক্ষে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি বাসে কেরোসিনের জার থেকে কিছু তরল ছিটিয়ে দিচ্ছেন খোদ পুলিশ কর্মীই।
দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখানোর সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় তাদের। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে দেশের রাজধানী।
দক্ষিণ দিল্লির নিউ ফ্রেন্ডস কলোনি অঞ্চলে নয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হলে এলাকাটি যুদ্ধক্ষেত্রের রূপ পায়। কিন্তু এই সংঘর্ষ চলাকালীন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় ওই ভিডিও যা দেখে দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একজন পুলিশ কর্মী নিজেই একটি ফাঁকা বাসে কেরোসিনের জার থেকে কোনো তরল ছুঁড়ছেন।
ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ চলাকালীন দেখা যায়, বেশ কয়েকটি বাস ও দু'চাকার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনার বিষয়ে দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াসহ অনেকেই অভিযোগ করছেন যে পুলিশেরই কিছু কর্মী এই ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
যদিও পুলিশের তরফ থেকে এই ধরণের সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
মণীশ সিসোদিয়া টুইটারে হিন্দিতে ট্যুইটে বলেন, এই ছবিটি দেখুন ... দেখুন কে বা কারা বাসে ও গাড়িতে আগুন দিচ্ছে ... এই ছবিটি বিজেপির করুণ রাজনীতির সবচেয়ে বড় প্রমাণ ... বিজেপি নেতারা এর প্রতিক্রিয়ায় কী বলবেন?
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ই নিয়ন্ত্রণ করে দিল্লি পুলিশকে, যার দায়িত্বে আছেন বিজেপি প্রধান তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ । এদিকে দিল্লিতে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি বিরোধী আম আদমি পার্টি।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে দিল্লি পুলিশের জনসংযোগ কর্মকর্তা এমএস রান্ধওয়া এনডিটিভিকে বলেন, আপনাকে অবশ্যই পুরো ভিডিওটি দেখতে হবে। বাসের বাইরে আগুন লেগেছে ... পুলিশ ওই পাত্রে জল নিয়ে সেই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছে। যখন আমরা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করছিলাম, তখন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে পাথর ছোঁড়া হচ্ছিল ... এবং সেখানে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে-গ্যাস ব্যবহার করে... সেই সময় সেখানে খুব খারাপ পরিস্থিতি ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর থেকে পাথর ছোঁড়া হচ্ছিল।
বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানের নেতৃত্বদানকারী দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির পুলিশ কমিশনার চিন্ময় বিসওয়ালও এই অভিযোগ নাকচ করে বলেন, আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না যে শিক্ষার্থীরা নাকি স্থানীয়রা, কারা এই বিক্ষোভ মিছিল করেছিল। ওই মিছিলে ১,৫০০ থেকে ২,০০০ এরও বেশি মানুষ ছিল। তারা যখন ওই মিছিল নিয়ে এগোতে থাকে তখন ট্র্যাফিক জ্যাম হয়ে যায়, ফলে ব্যারিকেড দিয়ে থামাতে হয় তাদের। তারপরেই বিক্ষোভকারীরা রিং রোডের দিকে গিয়ে ডিটিসি বাস পুড়িয়ে দেয়।
নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দিল্লি, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলছে প্রতিবাদ বিক্ষোভ। -এনডিটিভি