
বাগোতেও দুই মাসের বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ চলছে। ছবি: বিবিসি
মিয়ানমারের বাগো শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো অভিযানে ৮০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
খবরে বলা হচ্ছে, নিহতদের মরদেহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিয়ে গেছে এবং এর ফলে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা হয়ত কখনোই জানা যাবে না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা দেশটির গণমাধ্যমকে বলেছেন, সৈন্যরা ভারী অস্ত্র ব্যবহার করছিল এবং নড়াচড়া করে এমন যেকোনো কিছুর ওপরই গুলি চালিয়েছে তারা।
পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্টেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে, গত শুক্রবার (৯ এপ্রিল) অন্তত ৮২ বিক্ষোভকারীকে হত্যা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
সংস্থাটি জানায়, গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর এখন পর্যন্ত কয়েক ডজন শিশুসহ সাত শতাধিক মানুষকে হত্যা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। আটক করে রাখা হয়েছে হাজার হাজার মানুষকে।
তবে জান্তা সরকারের মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন এ সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, তারা ২৪৮ বেসামরিক ও ১০ পুলিশ সদস্য নিহতের ঘটনা রেকর্ড করেছে।
ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার জন্য দেশটির সামরিক বাহিনী দমন-পীড়নের মাত্রা বাড়িয়েছে। ইয়াঙ্গুন শহরের কাছে বাগো শহরে এই সহিংসতা শুক্রবার ঘটেছে বলে জানা যাচ্ছে, কিন্তু গণমাধ্যমের কাছে এই খবর পৌঁছাতে পুরো একদিন লেগেছে। কারণ শহরের বহু বাসিন্দাকে বাধ্য হয়ে আশেপাশের গ্রামে পালিয়ে যেতে হয়েছিল।
সংবাদ সংস্থা দ্য মিয়ানমার নাউ বিক্ষোভের আয়োজক ইয়ে হুটুটকে উদ্ধৃত করে বলেছে, এটা গণহত্যার মতই। তারা প্রতিটি ছায়ার দিকে গুলি ছুড়েছে।
এদিকে শুক্রবার উৎখাত হওয়া সংসদ সদস্যরা ও জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সাথে দেখা করেন। তারা দেশটির সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো ও অস্ত্র অবরোধ বা আর্মস এমবার্গো ও নো-ফ্লাই জোন করার মতো ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান।
জাতিসংঘে ওই বৈঠকে আরো সতর্কতা দেয়া হয় যে, মিয়ানমার, রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ঊর্ধ্বতন উপদেষ্টা রিচার্ড হোর্সে বলেছেন, সামরিক শাসনের ফলে দেশটিতে এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে দেশটি শাসনের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। -বিবিসি