
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানিয়েছেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তার সামনে তিনটি পথ বেছে দেওয়া হয়েছে। আর সেই পথ বেছে দিয়েছে ‘এস্টাবলিশমেন্ট’ বা ‘প্রতিষ্ঠান’। এর মধ্যে একটি হলো আস্থাভোট, দ্বিতীয়টি আগাম নির্বাচন ও তৃতীয় পথ ইস্তফা।
গতকাল শুক্রবার (১ এপ্রিল) এআরওয়াই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী ইমরানের সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব তুলেছে বিরোধীরা। আগামীকাল রবিবার (৩ এপ্রিল) অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হওয়ার কথা। আর পাকিস্তানের ‘এস্টাবলিশমেন্ট’ মূলত দেশটির ক্ষমতাধর সেনাবাহিনী।
সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাণহানির আশঙ্কা তো আছেই, সেই সঙ্গে বিরোধীরাও তাকে সরাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সে কারণে বিদেশি শক্তির সাথেও হাত মিলিয়েছে তারা। তবে সেই ভয়ে তিনি পিছপা হবেন, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক পাকিস্তানের জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাব।
তিনি বলেন, দেশের মানুষকে এটা জানাতে চাই, আমার প্রাণহানির আশঙ্কা তো আছেই, বিরোধীরা আমার চরিত্রহনন করতেও ছাড়ছে না। এমনকি আমার স্ত্রীর চরিত্র তুলেও আক্রমণ করছে। স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক পাকিস্তানের জন্য যত দূর লড়াই করতে হয় করব। এজন্য আমার প্রাণহানির আশঙ্কা থাকলেও ভয় পাই না।
ওই সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেন, জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালেও তিনি পদত্যাগ করবেন না। তাকে ছেড়ে যেসব আইনপ্রণেতা বিরোধীদের সাথে হাত মিলিয়েছেন, বিরোধীরা তাদের দিয়ে সরকার চালাতে পারবে না বলে দাবি করেছেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, তিনি পদত্যাগ বা নতুন সরকার গঠনের বদলে আগাম নির্বাচনের পক্ষে। আগাম নির্বাচন হলেই সবচেয়ে ভালো হবে বলে মনে করছেন তিনি।
অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, রবিবার পার্লামেন্টে যখন অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হবে তখন তিনি ‘আরেকটি চমক’ আনবেন। এ প্রসঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন অধিনায়ক কখনো তার কৌশল কাউকে জানায় না। কিন্তু আমি আবার বলছি, এই অনাস্থা প্রস্তাব বড় একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র।
দলত্যাগীদের নিয়ে সরকার চালানো যায় না দাবি করে তিনি বলেন, আস্থা ভোটে যদি আমরা জয় পাই, আমরা এই বিশ্বাসঘাতকদের সাথে আর কাজ করতে পারব না। নির্ধারিত সময়ের আগে নির্বাচন ডেকে নেওয়ার এখন শ্রেষ্ঠ উপায়।
সাক্ষাৎকারে ইমরান খান আরো জানান, একটি বিদেশি দেশের পাঠানো ‘চিঠিতে’ বলা হয়েছে, তিনি ক্ষমতায় না থাকা পর্যন্ত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে যেতে পারবে না। আমাদের দূতকে বলা হয়েছে- ইমরান খান অগ্রহণযোগ্য ও তাকে অপসারণ করা উচিত। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অপসারণের পরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের দিকে নজর দেওয়া হবে। -পার্সটুডে