বড় ভাইকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরাতে রাজি গোটাবায়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২২, ১৫:১১

মাহিন্দ্রা রাজাপাকসে ও গোটাবায়া রাজাপাকসে। ছবি: এএফপি
শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। দেশটিতে বিদ্যুৎ, জরুরি ওষুধ, খাদ্য ও জ্বালানি তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। দেশের জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে নানা ইস্যুতে আন্দোলন করছেন। আন্দোলনের শুরু থেকেই আন্দোলনকারীরা দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ও প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছেন।
এবার নিজের মুখে পদত্যাগ করার বিষয়ে মাহিন্দা রাজাপাকসে বলেছেন, তার প্রধানমন্ত্রী থাকা না থাকার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট যে সিদ্ধান্ত নেবেন তা তিনি মেনে নিতে প্রস্তুত।
গতকাল শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে বলেন, যদি প্রেসিডেন্ট তাকে অপসারণ করে অন্য কোনো ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী করেন এতে তার আপত্তি নেই। এটি মেনে নিতে প্রস্তুত আছেন তিনি। প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানানো উচিত বলেও মন্তব্য করেন মাহিন্দা রাজাপাকসে।
এদিকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে তার বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার বরাতে শ্রীলঙ্কার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো এ আভাস দিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার মাইথ্রিপালা সিরিসেনার বরাতে শ্রীলঙ্কার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, গোটাবায়া রাজাপাকসে নতুন একজন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়ে একটি সর্বদলীয় সরকার গঠনে সম্মত হয়েছেন।
একসময় ক্ষমতাসীন জোটের অন্তর্ভুক্ত ছিল মাইথ্রিপালার দল শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি। তবে রাজাপাকসের নীতিমালার প্রতিবাদে দলটি জোট থেকে বের হয়ে যায়।
আইনপ্রণেতা ভিরাসুমানা ভিরাসিংহে বলেন, অন্য দলগুলোর সাথে আলোচনা করবে রাজাপাকসে। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত উল্লেখ করেননি তিনি।
আগামী ৪ মে পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরু কথা রয়েছে। তার আগেই নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে চাইছেন রাজনীতিবিদেরা। বিরোধী দলগুলোর দাবি, অনাস্থা ভোটের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে উৎখাতের জন্য যথেষ্ট সমর্থন তাদের পক্ষে আছে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একটি সর্বদলীয় সরকার গঠন করতে প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সব রাজনৈতিক দল যদি যেসব প্রস্তাব সমর্থন করে, সেগুলোতে প্রেসিডেন্টও সম্মতি দেবেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আশঙ্কাজনকভাবে কম। এজন্য জ্বালানিসহ অন্যান্য পণ্য আমদানির মূল্য পরিশোধ করতে পারছে না দেশটি।
জরুরি পণ্য আমদানির মূল্য পরিশোধের জন্য আগামী আট মাসে শ্রীলঙ্কার চারশ’ কোটি ডলার প্রয়োজন। সরকার ইতোমধ্যে ফরাসি ঋণ পরিশোধ স্থগিত রেখেছে। ভারত, চীন ও বিভিন্ন ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান থেকে সহায়তা চাইছে তারা।