আর দশটা দিনের মতোই কর্মব্যস্ত বিসিবি কার্যালয়। গণমাধ্যম কর্মীদেরও আনাগোনা বেশ। কিন্তু মাঠ ফাঁকা। পরদিন ম্যাচ থাকলেও সোমবার (১৩ মার্চ) মূল মাঠে দেখা গেল না বাংলাদেশ দলকে, সিরিজ হারের পর প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড দলও নিজেদের রেখেছে হোটেলবন্দি। ম্যাচের আগের দিন অনুশীলন করতে হবে, সেরাটা নিংড়ে দেওয়ার জন্য ব্যাট-বলে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে হবে এখন আর এই তত্ত্বে বিশ্বাস রাখে না দলগুলো, বাংলাদেশও না।

ক্রিকেটারদের এখন এত এত ম্যাচ খেলতে হয় যে ধকল কাটাতে বিশ্রামই বেশি প্রাধান্য পায়। কেননা এতে তারা শারীরিক এবং মানসিকভাবে ফিট থেকে মাঠে নামতে পারেন, খেলতে পারেন নিজেদের সেরাটা দিয়ে। দলগুলো আজকাল এই তত্ত্বেই বিশ্বাসী। সে কারণেই সোমবারের অনুশীলনপর্ব বাতিল করে বিশ্রামেই সময় কাটিয়েছে টিম বাংলাদেশ। তাই কেউ যদি ভেবে থাকেন আগেই সিরিজ জিতে যাওয়ায় অনুশীলনের প্রয়োজনীয়তা বোধ করেনি সাকিব আল হাসানের দল তাহলে সেই ভাবনা বদলে ফেলুন।

সিরিজ জেতা হয়ে গেলেও জয়ের ক্ষুধা কমেনি টাইগারদের। খেলাটা যেহেতু টি-টোয়েন্টি এবং এই সংস্কণে খুব বেশি জয় পাওয়া হয় না তাদের, তাই কেবল দুটো জয়েই আয়েশে গা ভাসিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। সাকিব ব্রিগেড বরং আরও একবার ইংল্যান্ডকে হারাতে মরিয়া। ক্রিকেটের জনকদের ধবলধোলাইয়ের লজ্জা দেওয়ার সুযোগ যে নিত্যদিন আসবে না। ক্রিকেট মাঠে ইংল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের সাক্ষাতের ইতিহাস দুই দশকের কিন্তু সিরিজ জয় এবারই প্রথম।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ অনুষ্ঠেয় ম্যাচটি যখন আরেকটি প্রথমের হাতছানি দিচ্ছে, বাংলাদেশ তা উপেক্ষা করবে কেন? তা ছাড়া এক জিম্বাবুয়ে বাদে তো টেস্ট খেলুড়ে আর কোনো দলকেই টি-টোয়েন্টি সিরিজে ধবলধোলাই করতে পারেনি তারা। যে কারণে বিন্দুমাত্র ছাড় পাচ্ছে না ইংল্যান্ড। যদিও স্বাগতিকদের একাদশে একাধিক পরিবর্তনের আভাস আছে, এরপরও জয়ের ধারায় ছেদ পড়তে দিতে নারাজ তারা। নিজেদের প্রক্রিয়া ঠিক রেখেই খেলতে চাইছে টাইগাররা।

তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পর ধবলধোলাই ভিন্ন কোনো ভাবনা সাধারণত থাকে না। তাই রবিবার (১২ মার্চ) ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মেহেদী হাসান মিরাজের দিকে প্রশ্নটা ছুড়ে দিলেন সিরিজ কাভার করতে আসা এক ইংরেজ সাংবাদিক। জবাবে মিরাজ অবশ্য নিশ্চয়তা দিলেন না। জানিয়ে দিলেন, তার দল প্রক্রিয়া ঠিক রাখার দিকেই মনোযোগ দিচ্ছে বেশি, ‘আমরা সামনের দিকে তাকাচ্ছি। সামনের ম্যাচ কীভাবে জেতা যায়, তা নিয়ে ভাবছি না আমরা। ইতিবাচক থেকে ম্যাচটিতে কীভাবে আরও ভালো খেলা যায়, সেটিই ভাবছি আমরা।’

যদিও দলের অন্যতম নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন জানালেন, তাদের ভাবনায় জয়টাই প্রাধান্য পাচ্ছে, ‘অবশ্যই তৃতীয় ম্যাচটা জয়ের চিন্তা নিয়ে খেলব। আমরা যে ধরনের খেলা খেলছি, এই প্রক্রিয়াটা ধরে রাখা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। জিততে পারলে অবশ্যই এর থেকে ভালো কিছু হবে না। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দল তাদের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছি। শেষ ম্যাচটা জিতে শেষ করতে পারলে আরও ভালো কিছু হবে।’ এটা বুঝতে কারও অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে সেই ‘ভালো কিছু’ মানে হচ্ছে ইংল্যান্ডকে বাংলাওয়াশ করা।