আন্তর্জাতিক বিরতিটা সাফল্যের সঙ্গেই কাটলো আর্জেন্টিনার। দুই প্রীতি ম্যাচে করেছে ৯ গোল। র‌্যাঙ্কিংয়ের ৮৬তম দল হলেও প্রতিপক্ষকে মোটেও হালকাভাবে নেননি আর্জেন্টিনা। বরং বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা ৫জনকে একাদশে নিয়েই দল সাজিয়েছিলেন। বিশ্বচ্যাম্পিয়নের আবহ নিয়েই তারা কুরাসাওর মুখোমুখি হয়েছিল।

দুই দলের মধ্যকার শক্তির বিস্তর পার্থক্য স্পষ্টভাবে ফুটে উঠল মাঠের লড়াইয়ে। প্রথমার্ধেই হ্যাটট্রিক করে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিশাল জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন মেসি।

গতকাল বুধবার (২৮ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সকালে নিজেদের মাঠে সান্তিয়াগো দেল এস্তেরোতে প্রীতি ম্যাচে ৭-০ গোলে জিতেছে লিওনেল স্কালোনির দল। বিরতির আগেই পাঁচবার গোল উৎসব করে স্বাগতিকরা। দ্বিতীয়ার্ধে আসে আরও দুই গোল। সফরকারীদের গোলরক্ষক এলয় রুম মোট নয়টি সেভ না করলে আর্জেন্টিনার জয়ের ব্যবধান হতে পারত আরও বড়!

ম্যাচের ২০ থেকে ৩৭- এই ১৭ মিনিটের ব্যবধানে হ্যাটট্রিক আদায় করে নেন মেসি। এর মাধ্যমে পিএসজি তারকা স্পর্শ করেন জাতীয় দলের জার্সিতে শততম গোল। আর্জেন্টিনার হয়ে ১৭৪ ম্যাচে এখন তার গোল ১০২। আন্তর্জাতিক মঞ্চে ৩৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডের আগে গোলের সেঞ্চুরি করেছেন দুজন। তারা হলেন ইরানের আলী দাইয়ি ও পর্তুগালের ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো।

ম্যাচে তিন গোল করার পাশাপাশি আরেকটি গোলে অবদান রাখেন মেসি। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নেমে ব্যবধান বাড়ান আনহেল দি মারিয়া। ম্যাচের শেষদিকে নিশানা ভেদ করেন গঞ্জালো মন্তিয়েল।

এ ম্যাচের ৬০ শতাংশ সময় বল দখলে রাখে আর্জেন্টিনা। গোলমুখে শট নেয় ২৭টি। এর মধ্যে লক্ষ্যেই ছিল ১৭টি। অবশ্য কুরাসাও গোলমুখে ছয়টি শট নিয়েছিল তবে একটিও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি। তাই পোস্টের নিচে প্রায় অলস সময় কাটান স্বাগতিকদের গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ।

তৃতীয় মিনিটে ডি-বক্সে মেসির পাসে ফাঁকায় বল পেয়ে যান লাউতারো মার্তিনেজ। কিন্তু তালগোল পাকিয়ে ঠিকমতো শট নিতে ব্যর্থ হন তিনি। কিছুক্ষণ পর মেসির দুটি প্রচেষ্টা ভেস্তে দেন রুম। আর ১৪তম মিনিটে লাউতারোর শট অল্পের জন্য থাকেনি লক্ষ্যে।

ছয় মিনিট পরই আসে মেসির কাঙ্ক্ষিত শততম গোলের মুহূর্ত। জিওভানি লো সেলসো ডি-বক্সে খুঁজে নেন তাকে। প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের বাধা এড়িয়ে মেসি শট মারেন ডান পায়ে। বল জালে জড়ালে তিনি মেতে ওঠেন উল্লাসে।

তিন মিনিট পর ফের গোল হজম করে কুরাসাও দল। পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা সামলে নেওয়ার সুযোগ মেলেনি এ দলের। হার্মান পেজ্জেয়ার হেড তাদের অধিনায়ক কুকো মার্টিনা গোললাইন থেকে ফেরানোর পর আরেকটি হেডে গোল করেন গঞ্জালেজ। 

৩৩তম মিনিটে গঞ্জালেজের পাসে বাঁ পায়ের শটে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন মেসি। ৩৭তম মিনিটে লো সেলসোর লম্বা করে বাড়ানো বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি। এরপর নিচু শটে হ্যাটট্রিক করেন মেসি। মাঝে ৩৫তম মিনিটে দূর থেকে নিশানা ভেদ করেন এঞ্জো।

৪৮তম মিনিটের পর লাউতারোকে দুই দফা হতাশ করেন রুম। ৭১তম মিনিটে ফের নিজের সামর্থ্যের ছাপ রাখেন কুরাসাওয়ের গোলরক্ষক। মেসির রক্ষণচেরা পাসের সুবাদে তাকে একা পেয়েও পরাস্ত করতে পারেননি গঞ্জালেজ। পরের মিনিটে দি মারিয়ার ক্রসে পাওলো দিবালার হেড চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে।

দি মারিয়া ৭৮তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোলদাতাদের তালিকায় নাম ওঠান। এর আগে তিনি নিজেই আদায় করেন স্পট-কিক। তার শট ডি-বক্সে লাগে মার্টিনার হাতে। ৮৭তম মিনিটে দিবালার পাসে প্রতিপক্ষের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন মন্তিয়েল। শেষ বাঁশি বাজলে আর্জেন্টিনা মাঠ ছাড়ে উৎসবমুখর পরিস্থিতিতে।