
বাংলাদেশ ক্রিকটে দর। ফাইল ছবি
বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ আসর এশিয়া কাপ। শিরোপাপ্রত্যাশী বাংলাদেশ ফাইনালে উঠতে না পারলেও ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে দারুণ এক জয় নিয়ে শেষ করেছে টুর্নামেন্ট। ভালো-মন্দ মিলিয়ে যে শিক্ষাটা পেয়েছে বাংলাদেশ, তা যদি কাজে লাগাতে পারে, তা হলে সামনের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে আশাব্যঞ্জক ফল অর্জন করতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এশিয়া কাপে বাংলাদেশ সুপার ফোরে উঠলেও সেখানে আশানুরূপ সাফল্য পায়নি। এশিয়া কাপের মর্যাদা বিশ্বকাপের চেয়ে কম নয়। কারণ এশিয়া কাপে বিশ্ব ওয়ানডে ক্রিকেট র্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থানীয় পাঁচটি দল ছিল। বাংলাদেশ ছাড়াও বাকি চারটি দল হলো- সাবেক তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এবং নতুন শক্তি আফগানিস্তান। শুধু র্যাংকিংই নয়, এশিয়ার পাঁচটি দল এবারের বিশ্বকাপে খেলছে। বিশ্বের আর কোনো মহাদেশের এত বেশি দল ওই বড় আসরে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। আফ্রিকা থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়মিত বিশ্বকাপ খেললেও জিম্বাবুয়ে বা কেনিয়া তাতে অনিয়মিত। ইউরোপের ইংল্যান্ড নিয়মিত বিশ্বকাপ খেললেও স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস তাতে অনিয়মিত। ওশেনিয়া অঞ্চল থেকে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে নিয়মিত বিশ্বকাপ খেলছে। কনকাকাফ অঞ্চল থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আগে বিশ্বকাপে নিয়মিত খেললেও এখন তাদের পক্ষে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করাই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবারও তো দুবারের চ্যাম্পিয়ন ক্যারিবীয় দল নেই বিশ্বকাপে। তাই এশিয়া কাপের শিক্ষা সামনে রেখে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিলে বাংলাদেশের জন্যই মঙ্গলজনক হবে।
এশিয়া কাপে বাংলাদেশের দল ও একাদশ গঠন ভালো হয়নি। টুর্নামেন্টের জন্য যে দল গঠন করা হয়, তাতে ত্রিশোর্ধ্ব ও অভিজ্ঞ খেলোয়াড় সংখ্যা ছিল মাত্র দুই জন। তারা হলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিম। অনভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা হঠাৎ হঠাৎ চমক সৃষ্টি করতে পারেন; কিন্তু চূড়ান্ত সাফল্য এনে দিতে পারেন না। ভারত এবারের আসরে দলে ত্রিশোর্ধ্ব খেলোয়াড় রেখেছে সাত জন। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা দলেও বাংলাদেশের চেয়ে বেশি অভিজ্ঞ খেলোয়াড় থাকায় তারা টুর্নামেন্টে ভালো করেছে। বাংলাদেশ দলে যদি আর কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড় থাকত, তা হলে ফল আরও ভালো হতেও পারত। তার পর একাদশ গঠনও ভালো হয়নি। শেষ ম্যাচের দলটি ছিল এবারের আসরে সবচেয়ে সুন্দর ও কার্যকর। এতে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটিতে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে।
ভারতের মাটিতে ৫ অক্টোবর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে ১০টি দল নিয়ে আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা। অংশ নেবে বাংলাদেশ, স্বাগতিক ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপে এবার প্রথমে হবে লিগপর্বের লড়াই। তাতে বাংলাদেশকে খেলতে হবে ৯টি ম্যাচ। পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে থাকা চারটি দল খেলবে সেমিফাইনালে।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের লক্ষ্য থাকতে হবে কমপক্ষে সেমিফাইনালে ওঠার। কারণ এশিয়া মহাদেশের, বিশেষ করে সার্কভুক্ত তিন দেশই সাবেক চ্যাম্পিয়ন এবং সাবেক রানার্সআপ। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ফাইনালেই উঠতে পারেনি। যেহেতু প্রতিটি দলের সঙ্গে বাংলাদেশের কমবেশি জয়-পরাজয় রয়েছে; তাই সঠিক লক্ষ্য নিয়ে, সঠিক প্রস্তুতি থাকলে, সঠিক প্রতিজ্ঞা থাকলে, সঠিক দেশপ্রেম থাকলে সেমিফাইনালের টিকিট লাভ করা খুব কঠিন নয়। ভারতের সঙ্গে এশিয়া কাপের ম্যাচে জয় সেখানে অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করবে।