Logo
×

Follow Us

খেলাধুলা

বিশ্বকাপ ক্রিকেট দল পরিচিতি: নিউজিল্যান্ড

Icon

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৩, ১১:৪৮

বিশ্বকাপ ক্রিকেট দল পরিচিতি: নিউজিল্যান্ড

নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল। ছবি: সংগৃহীত

অংশগ্রহণ: ১৩ বার
সেরা সাফল্য: ২ বার রানারআপ (২০১৫ ও ২০১৯)
মোট ম্যাচ: ৮৯
জয় : ৫৪
হার: ৩৩
টাই: ১
নো রেজাল্ট: ১

গত দুই বিশ্বকাপেই রানার্সআপ নিউজিল্যান্ড। ২০১৫ ও ২০১৯ বিশ্বকাপে ফাইনাল খেললেও এখন পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নের মুকুট মাথায় তুলতে পারেনি ব্ল্যাক ক্যাপসরা। ২০১৫-এর ফাইনালে প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে শিরোপা স্বপ্ন চুরমার হয় কিউইদের। সেই হতাশা মুছে ফেলার আশায় ২০১৯ আসরেও ফাইনালে উঠে নিউজিল্যান্ড; কিন্তু এবার জুটে আরও বড় হতাশা। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ পেয়েও যে সেই সুযোগ নষ্ট করেছে রানআউট করার সুযোগ মিস করায়। হ্যাঁ, ২০১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালের শেষ মুহূর্তে বেন স্টোকসকে রান আউট করতে পারলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেত কিউইরা; কিন্তু সহজ সেই সুযোগটি তারা মিস করে হাস্যকরভাবে! পরে সুপার ওভারেও হারিয়েছে জয়ের সুযোগ। এবারর বিশ্বকাপ তাই কিউইদের জন্য সেই হতাশা মুছে ফেলার মিশন। মিশনটা তারা শুরু করতে যাচ্ছে অভিজ্ঞতায় এগিয়ে থেকেই। এ পর্যন্ত বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৯টি ম্যাচ খেলেছে তারা। এর মধ্যে ৫৪তে জয় লাভ করেছে, হেরেছে ৩৩টিতে। টাই করেছে ১টিতে, পরিত্যক্ত হয়েছে ১টি ম্যাচ। ইনজুরি ইস্যুতে কেন উইলিয়ামসনের বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে শঙ্কা থাকলেও সেটি কাটিয়ে উঠেছেন। তাকে অধিনায়ক করেই বিশ্বকাপের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে কিউইরা। দলে যেমন চারটি করে বিশ্বকাপে খেলা অভিজ্ঞতা সম্পন্ন উইলিয়ামসন ও টিম সাউদি রয়েছেন, তেমনি আছেন প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নের প্রহর গোনা মার্ক চ্যাপম্যান, ডেভন কনওয়ে, ড্যারিল মিচেলের মতো ক্রিকেটাররা। আগের বিশ্বকাপের দলে থাকা লকি ফার্গুসন, জিমি নিশাম, মিচেল সান্তানার ও ঈশ সোধিও রয়েছেন এবারের বিশ্বকাপের স্কোয়াডে। ১৫ সদস্যের দলের ৬ জন প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছেন।

ব্যাটিংয়ে উইলিয়ামসনের সঙ্গে টপ অর্ডারে ল্যাথাম, ডেভন কনওয়ে, গ্লেন ফিলিপস, মার্ক চাপম্যানরা দলের বড় ভরসা। সেখানে বিবেচিত হননি টিম সেইফার্ট। বরাবরের মতোই পেস আক্রমণের মূল ভরসা থাকবেন টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট, লকি ফার্গুসন। আছেন ম্যাট হেনরি। এ ছাড়া মিডিয়াম পেস অলরাউন্ডার হিসেবে আছেন ড্যারিল মিচেল ও জিমি নিশাম। দলে স্পেশালিষ্ট স্পিনার হিসেবে রয়েছেন ঈশ সোধি ও মিচেল সান্তানার। তাদের সঙ্গে আছেন রাচিন রাভিন্দ্রাও। সান্তানার ও রাচিন, দুজনেই বাঁহাতি স্পিনার। এ ছাড়া ফিলিপস করতে পারেন অফ স্পিন।

কোচ গ্যারি স্টিড বেশ দক্ষতার সঙ্গেই দলকে এক সুতোয় বাঁধার চেষ্টা করছেন। অভিজ্ঞ ও নতুনদের নিয়ে গড়া দলকে নিয়ে ভালো কিছুর স্বপ্ন দেখতেই পারে নিউজিল্যান্ডের সমর্থকরা। 

দলীয় সর্বোচ্চ: ৩৯৩/৬, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, ওয়েলিংটনে ২০১৫ বিশ্বকাপে

দলীয় সর্বনিম্ন: ১১২, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে, পোর্ট এলিজাবেথে ২০০৩ বিশ্বকাপে

বিশ্বকাপ দল: কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), ট্রেন্ট বোল্ট, মার্ক চ্যাপম্যান, ডেভন কনওয়ে, লকি ফার্গুসন, ম্যাট হেনরি, টম ল্যাথাম (উইকেটরক্ষক), ড্যারিল মিচেল, জিমি নিশাম, গ্লেন ফিলিপস, রাচিন রাভিন্দ্রা, মিচেল সান্তানার, ইশ সোধি, টিম সাউদি ও  উইল ইয়ং।

ব্যক্তিগত সেরা ব্যাটিং: মার্টিন গাপটিল, ২৩৭*

শুধু নিউজিল্যান্ডের পক্ষে নয়, বিশ্বকাপের ইতিহাসেই এটা ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। রেকর্ডটা মার্টিন গাপটিল গড়েছেন নিজেদের ঘরের মাঠের ২০১৫ বিশ্বকাপে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, ওয়েলিংটনে। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেই তান্ডব শুরু করেন গাপটিল। ক্যারিবীয় বোলারদের তুলোধুনো করে খেলেছেন ১৬৩ বলে ২৩৭ রানের অপরাজিত ইনিংস। ১১টি ছক্কা ও ২৪ চারে সাজানো ইনিংসটিতে চড়ে ম্যাচে নিউজিল্যান্ড গড়ে ৬ উইকেটে ৩৯৩ রানের পুঁজি। যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে তাদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। পরে ক্যারিবীয়দের ২৫০ রানে আউট করে কিউইরা ম্যাচ জিতে ১৪৩ রানে। ম্যাচসেরার পুরস্কারটি গাপটিলের প্রাপ্যই ছিল।

ব্যক্তিগত সেরা বোলিং: টিম সাউদি, ৭/৩৩

নিউজিল্যান্ডের হয়ে টিম সাউদি কীর্তিটা গড়েছেন ২০১৫ বিশ্বকাপে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, ওয়েলিংটনে। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেই টিম সাউদির তোপের মুখে পড়ে ইংল্যান্ড। ইংলিশদের দুই ওপেনার ইয়ান বেল (৮), মঈন আলিসহ (২০) এক এক করে ৭ ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নে পাঠান সাউদি। এ জন্য ৯ ওভারে খরচ করতে হয় ৩৩ রান। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটা তৃতীয় সেরা বোলিং কীর্তি। সাউদির তোপে সিদন মাত্র ১২৩ রানে গুটিয়ে যায় ইংলিশরা। পরে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ঝড়ে ১২.২ ওভারেই কিউইরা তুলে নেয় ৮ উইকেটের জয়। এই ম্যাচেই বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন ম্যাককালাম। ১৮ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করা ম্যাককালাম করেন ২৫ বলে ৭৭ রান। তবে ম্যাচসেরার পুরস্কারটি সাউদির হাতেই উঠে।

কেন উইলিয়ামসন
নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপের সবচেয়ে বড় ভরসা। অধিনায়ক হিসেবেও সফল। এ পর্যন্ত ৮৭টি ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিয়েছেন কেন উইলিয়ামসন। যা নিউজিল্যান্ডের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ড। ওয়ানডেতে কিউইদের হয়ে তার চেয়ে বেশি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন কেবল স্টিফেন ফ্লেমিং, ২১৮ ম্যাচে। ৮৭ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে উইলিয়ামসন দলকে জিতিয়েছেন ৪৪ ম্যাচে, হার ৩৮ ম্যাচে। ৪টিতে ফল হয়নি, একটি টাই। এই ‘টাই’ ম্যাচটিই উইলিয়ামসের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় আফসোস হয়ে আছে। নিউজিল্যান্ডবাসীরও। সেই টাই’টা হয়েছিল ২০১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে। শেষ বলে ইংল্যান্ডের বেন স্টোকসকে রানআউট করতে পারলে প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেত কিউইরা; কিন্তু রানআউটের সহজ সুযোগ মিস করে ম্যাচটা টাই করে তারা। যে রানআউটের দায় কিছুটা অধিনায়ক উইলিয়ামসনেরও। পরে সুপার ওভারেও সমতা। ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হয় মূল ম্যাচে বেশি বাউন্ডারি মারার সুবাদে! উইলিয়ামসনের আবার সুযোগ এসেছ সেই আক্ষেপ দূর করার। এবারও অধিনায়কত্ব তার কাঁধেই।

গ্যারি স্টিড
২০১৮ সালের আগস্ট থেকে নিউজিল্যান্ডের প্রধান কোচ হিসেবে কাজ করছেন গ্যারি স্টিড। নিউজিল্যান্ডের হয়ে পাঁচটি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। ২০১৯ সালে স্টিডের নিউজিল্যান্ড খেলেছে আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনাল। যদিও সুপার ওভারে গড়ানো ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারতে হয় ইংল্যান্ডের কাছে। ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালেও গিয়েছিল তার দল। নিউজিল্যান্ডের একমাত্র আইসিসি ইভেন্ট সাফল্যও এসেছে তারই হাত ধরে। দলটিকে ২০২১ সালের আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন স্টিড।

নিউজিল্যান্ডের সাবেক উইকেট-কিপার ব্যাটার  লুকে রঞ্চি দলের ব্যাটিং কোচ।  ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড  দলের সঙ্গে  উইকেট-কিপিং আর ফিল্ডিং কোচ হিসেবে  ছিলেন। 

নিউজিল্যান্ডের বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করছেন শেন জার্গেনসেন। ২০০৮-১০ সাল পর্যন্ত  কোচিং ক্যারিয়ারের শুরুতেও  কিউইদের বোলিং কোচের দায়িত্ব সামলেছেন। তার কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে বাংলাদেশ, ফিজি আর স্কটল্যান্ডের সঙ্গে। ফিজি জাতীয় দলে তিনি ছিলেন হেড-কোচ। ২০১৫ সালে তৃতীয় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে রংপুর রাইডার্সের প্রধান কোচ হিসেবে কাজ করেন।


Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫