
নাঈম ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
নাঈম ইসলাম ২০১২ সালে টেস্ট, ২০১৩ সালে টি-টোয়েন্টি এবং ২০১৪ সালে জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ ওয়ানডে ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন। তিন বছরে তিন ফরম্যাটে সবশেষ ম্যাচ খেলার হিসেবে অনেকেই শেষ দেখে ফেলেছিলেন তার। কিন্তু এখনো খেলে চলেছেন তরুণ ক্রিকেটারের মতো। এবার বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) নিজের ৩৩তম সেঞ্চুরি করেছেন; যা যে কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের জন্য সর্বোচ্চ সংখ্যক তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছানোর রেকর্ড।
দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের পাশাপাশি দাপটের সঙ্গে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলে যাচ্ছেন। ফিটনেসেও পেছনে ফেলেছেন সতীর্থ-অনুজদের অনেককেই। সে কারণেই টাইগার ক্রিকেটে বড় এক আক্ষেপের নাম এই নাঈম। একটা সময় তাকে ‘ছক্কা নাঈম’ বলেও ডাকা হতো। জাতীয় দলে যত দিন খেলেছেন তত দিন সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। সাধারণত নার্ভাস নাইটিতে সব ব্যাটসম্যান একটু হলেও চাপে পড়ে থাকেন। নাঈমও তার ব্যতিক্রম না, তবে স্নায়ুচাপটা ঠিকঠাকভাবেই সামলান তিনি। পেসার নাহিদ রানার ফুলটস বল ফ্লিক করে লেগ সাইডে ঠেলে দিয়ে নিলেন দুটি রান। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩৩তম শতকের দেখা পেয়েছেন তিনি। নাঈমের অসাধারণ কীর্তিটি ধরা দিয়েছে বিসিএল নতুন আসরের একেবারে প্রথম দিনেই। বয়স ৩৭ ছুঁইছুঁই এ ব্যাটার মধ্যাঞ্চলের হয়ে উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে টিকে ছিলেন ব্যাটিংয়ে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩২ শতক নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে চলে গেছেন তুষার ইমরান।
এর আগে নভেম্বর মাসে জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) ঢাকা মেট্রোর হয়ে সিলেট বিভাগের বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তুষারের রেকর্ডে ভাগ বসান নাঈম। এবার বিসিএলে তুষারকে ছাড়িয়ে যান নাঈম। ২০২১ সালে অবসর নেওয়া তুষার ৩২টি সেঞ্চুরি করেন ১৮২ ম্যাচ খেলে। তাকে নাঈম টপকে গেছেন ১৭০তম ম্যাচ খেলেই। প্রথম শ্রেণিতে ব্যাটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান তুষারের (১১ হাজার ৯৭২)। তার পরের স্থানটি দখলে রেখেছেন নাঈম। উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে প্রথম দিনের অপরাজিত ১০৩ রানসহ তার রান এখন ১০ হাজার ৪৮৬। এই দুজন ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটারের ১০ হাজার রান নেই।
যদিও দীর্ঘদিন ধরেই জাতীয় দলের বাইরে রয়েছেন এই অলরাউন্ডার। ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফরমারদের একজন তিনি। তবে এখন আর জাতীয় দলে ফেরার আশা দেখেন না নাঈম। কিছুটা আক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এমন অর্জনে নিজের কাছে ভালোই লাগে। এখন যারা ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করেছে, তাদের বেশিরভাগকে জাতীয় দলে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দেখা যায়, খুব কম ক্রিকেটারই সেখানে মানিয়ে নিতে পারেন। আমি বলব আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেট আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মান এক নয়। যাদের নিচ্ছে, তাদের সুযোগ দিতে হবে।’
এখন ক্যারিয়ারের বাকি সময়ে একটি ট্রিপল সেঞ্চুরি করার আশার কথা জানিয়েছেন নাঈম। তখন নিজের ক্যারিয়ারকে পরিপূর্ণ মনে হবে নাঈমের। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ৮ ওয়ানডেতে এক সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরিসহ ৪১৬ রান করেন। ১০ টি-টোয়েন্টিতে ১৩০ রান করার পাশাপাশি ৩ উইকেট নেন। এ ছাড়া ওয়ানডেতে ৩৫ ও টেস্টে এক উইকেট পকেটে পোরেন এই খর্বকায় অলরাউন্ডার।