Logo
×

Follow Us

খেলাধুলা

এএফসি এশিয়ান কাপের ফেভারিট জাপান

Icon

আহসান হাবীব সুমন

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:৩৬

এএফসি এশিয়ান কাপের ফেভারিট জাপান

এশিয়ান কাপ ফুটবলের পূর্ববর্তী ১৭টি আয়োজনে সর্বোচ্চ চারবার শিরোপা জিতেছে জাপান।

এএফসি এশিয়ান কাপ ২৪টি দেশ নিয়ে মাঠে গড়াচ্ছে ১২ জানুয়ারি। কাতারের মাটিতে অনুষ্ঠিতব্য টুর্নামেন্টের পর্দা নামবে ১০ ফেব্রুয়ারি। প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী আর ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে লুসাইল স্টেডিয়ামে। ইতোমধ্যেই ২০২২ সালের ফিফা বিশ্বকাপ ফাইনাল আয়োজন করা লুসাইল স্টেডিয়াম পেয়েছে বিশ্বব্যাপী  পরিচিতি। 

এশিয়ান কাপ ফুটবলের পূর্ববর্তী ১৭টি আয়োজনে সর্বোচ্চ চারবার শিরোপা জিতেছে জাপান। তিনটি করে শিরোপা রয়েছে সৌদি আরব আর ইরানের। এ ছাড়া এশিয়ার ফুটবলের অন্যতম ‘পাওয়ার হাউস’ দক্ষিণ কোরিয়া চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দুইবার। ২০২৪ সালেও চারটি দলকে দেওয়া হচ্ছে ফেভারিট তকমা। সঙ্গে ২০১৫ সালের শিরোপাজয়ী  অস্ট্রেলিয়া আর স্বাগতিক কাতারকে হিসেবের বাইরে রাখার উপায় নেই। কাতার ২০১৯ সালে এশিয়ান কাপের শিরোপা জিতেছে। যদিও ২০২২ সালের বিশ্বকাপে স্বাগতিক হয়েও প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায়ের লজ্জার রেকর্ড গড়েছে দেশটি। কিন্তু নিজেদের মাঠে এশিয়ান কাপে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া কাতার। স্বাগতিকদের রয়েছে আল মোয়েজ আলীর মতো সময়ের সেরা ফরোয়ার্ড। মাত্র ২৭ বছর বয়সেই দেশের হয়ে গোলের হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। ছিলেন ২০১৯ সালে এশিয়ান কাপের সেরা গোলদাতা। বিগত আসরের মতো আল মোয়েজ জ্বলে উঠলে কাতার অনেক দূর যাবে। 

সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিবেচনায় বিশ্ব ফুটবলে বিস্ময় সৃষ্টি করে চলেছে জাপান। ২০২৩ সালে ১০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা জাপান জিতেছে আটটি। ড্র আর পরাজয় একটি করে। টানা ৮ ম্যাচ অপরাজিত থাকা জাপান ১০ ম্যাচে গোল করেছে ৩৬টি। জার্মানি আর পেরুর মতো দলকেও দিয়েছে চারটি করে গোল। কোচ হোজিমে মেরাশায়ুর অধীনে আর ওয়াটারু এন্ডোর নেতৃত্বে তাকেফুসা কুবো, তাকুমি মিনামিনোরা শিরোপা জয় করতে না পারলেই বরং অঘটন হবে। 

জাপানকে কঠিন চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত দক্ষিণ কোরিয়া। এশিয়ান রেড ডেভিলদের কোচ হিসেবে রয়েছেন জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী স্ট্রাইকার জুর্গেন ক্লিন্সম্যান। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে ক্লিন্সম্যানের জার্মানি আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে প্রশংসা কুড়ায়। অথচ একটা সময় জার্মানি পরিচিতি ছিল প্রথাগত কাউন্টার অ্যাটাকভিত্তিক বিরক্তিকর ফুটবলের জন্য। ক্লিন্সম্যান ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে জিতিয়েছেন ‘কনকাকাফ গোল্ডকাপ’। দক্ষিণ কোরিয়াকেও মহাদেশীয় শিরোপা এনে দেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। দলে রয়েছে সন হিউং মিনের মতো দুর্ধর্ষ খেলোয়াড়। এশিয়ান কাপে মাঠে নামার আগে সাত ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে ক্লিন্সম্যানের শিষ্যরা।  

সৌদি আরব, ইরান আর অস্ট্রেলিয়া আসছে শিরোপায় চোখ রেখে। ২০২২ সালের বিশ্বকাপে সৌদি হারিয়ে দিয়েছিল আর্জেন্টিনাকে। ইরান ২০২৩ সালে ১১ ম্যাচ খেলে কোনো হারের মুখ দেখেনি। ড্র মাত্র দুটি। অস্ট্রেলিয়া ২০২৩ সালে আর্জেন্টিনা আর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে লড়াই করে হেরেছে। ২০২২ সালের বিশ্বকাপে নক আউট পর্বেও আর্জেন্টিনার বিপক্ষে তারা লড়াকু ফুটবল খেলেছে। সব মিলিয়ে শিরোপা লড়াইয়ে সকারুজদের হিসেবে রাখতেই হচ্ছে।

এশিয়ান কাপে সাফ অঞ্চলের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে খেলার সুযোগ করে নিয়েছে ভারত। ২০১৯ সালেও ভারত ছিল চূড়ান্তপর্বে। কোচ ইগর স্টিম্যাচের অধীনে ভারতীয় দলের লক্ষ্য নক আউট পর্বে উঠে ইতিহাস সৃষ্টি। এ ছাড়া অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী ইতিহাসের চতুর্থ ফুটবলার হিসেবে আন্তর্জাতিক ফুটবলে গোলের সেঞ্চুরির অপেক্ষায়। ৯৩ গোল নিয়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, আলি দাই আর লিওনেল মেসির পরেই রয়েছেন তিনি। ৩৯ বছরের ছেত্রী নিশ্চিতভাবেই শেষ এশিয়ান কাপ খেলতে চলেছেন।

আসন্ন এশিয়ান কাপে আলাদাভাবে নজর থাকবে জাপানের জুনিয়া ইতো, দক্ষিণ  কোরিয়ার চো গুয়ে-সাং, ইরানি স্ট্রাইকার মেহেদি তারেমি, কিরগিজস্তানের মিডফিল্ডার আলিমারদন শুকুরভ, কাতারের উইঙ্গার আকরাম আফিফ, সৌদি আরবের সালেম আল দাউসারি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের হয়ে ৮৪ গোল করা আলি মাবখুত এবং উজবেকিস্তানের আবুসেক ফয়জুল্লায়েকের ওপর।

এদিকে জানুয়ারিতে এশিয়ান কাপ ফুটবলের আয়োজন নিয়ে খানিকটা বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে ইউরোপের লিগগুলোকে। প্রায় একই সময়ে (১৩ জানুয়ারি) শুরু হচ্ছে আফ্রিকান কাপ অব নেশন্স। যে কারণে আফ্রিকা আর এশিয়ার ফুটবলারদের নির্দিষ্ট  সময়ের জন্য পাচ্ছে না ইউরোপের ক্লাবগুলো। জাপানের ডিফেন্ডার তাকেহিরো তোমিইয়াসুকে ছাড়তে ‘নিমরাজি’ ছিল আর্সেনাল। এশিয়ান কাপের জন্য ইপিএল শিরোপা-প্রত্যাশী আর্সেনালের হয়ে কমপক্ষে চার-পাঁচটি ম্যাচ মিস করবেন তাকেহিরো। একইভাবে আফ্রিকান কাপ নেশন্সে খেলতে ইউরোপ ছাড়ছেন মোহামেদ সালাহ আর ভিক্টর ওসিমহানরা। আবার কাতার যাচ্ছেন সং হিউ মিন আর কুবোরাও। তাতে ইউরোপিয়ান লিগ কিছু সময়ের জন্য রং হারাচ্ছে। তবে সেরা তারকাদের নিয়ে নিশ্চিতভাবেই আলোকিত দুই মহাদেশের সেরা দুই টুর্নামেন্ট।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫