
লিটন কুমার দাস। ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় দলের জার্সিতে বড় আক্ষেপের নাম লিটন কুমার দাস। পারফরম্যান্সে নিয়মিতভাবে অধারাবাহিক এই উইকেটকিপার ব্যাটার হতাশ করেই চলেছেন। তবু তার ওপর আস্থা রয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টের। কোচ, অধিনায়ক, টিম ম্যানেজার সবাই অপেক্ষায় রয়েছেন তার ফর্মে ফেরার। এমনকি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও লিটন, শান্তদের ফর্মে ফিরতে দোয়া করেছেন বলে নিজেই সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন।
একটার পর একটা ম্যাচ খারাপ খেলছেন আর প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে, টানা বাজে খেলার পরও কেন লিটনেই আস্থা? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোখ রাখলেই অনেক ক্রিকেট বিশেষজ্ঞের খোঁজ মিলবে, যারা সমস্যা তৈরি করে আবার নিজেরাই সমাধান করে দেয়। কিন্তু লিটন কবে পরিণত হবেন আর দলের হাল ধরবেন-এটা যেন এখন দেশের ক্রিকেটে কোটি টাকার প্রশ্ন। অনেকের কাছে তো তার প্রতিভা নিয়ে কথা বলা যেন বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দেশের ক্রিকেটের খোঁজ রাখা মানুষগুলো জানেন, ধারাবাহিকভাবে প্রতিভার নিদারুণ অপচয় করার ফলে একসময় হারিয়ে যাবেন লিটন। আগে এই তালিকায় পূর্বসূরি অনেকেই ছিলেন। এদিকে কেন লিটনে আস্থা, বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের বয়ানে সহজেই পরিষ্কার হয়ে যাবে, ‘লিটন আমাদের দলের শীর্ষ ব্যাটারদের একজন। এই বিশ্বকাপে তার ব্যাট থেকে বড় কিছু প্রত্যাশা করছি। ঈশ্বর প্রদত্ত একজন মেধাবী ব্যাটার লিটন। যে কোনো পজিশনে সে আমাদের অন্যতম একজন ফিল্ডার। আর কৌশলগত দিক থেকেও দলকে সমর্থন দিয়ে থাকে।’
অনেক দিন ধরেই নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন লিটন। টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি-কোনো সংস্করণেই নিজেকে প্রত্যাশামতো মেলে ধরতে পারছেন না। একাদশ থেকে বাদ পড়ার ঘটনাও ঘটেছে টানা কয়েকটি সিরিজে। তবু লিটনকে বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ দিতে চাননি বাংলাদেশ দলপতি নাজমুল হোসেন শান্ত। ফর্মে ফেরার একটা সুযোগ লিটনের সামনে অবশ্য এসেছিল কদিন আগে। তবে ‘প্রিয় প্রতিপক্ষ’ হিসেবে পরিচিত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচে একাদশে সুযোগ পেয়ে ৮৩.৭২ স্ট্রাইকরেটে করেছেন মাত্র ৩৬ রান। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে খারাপ পারফরম্যান্সের পর বাদ পড়েন দ্বিতীয় ম্যাচে। এই দৃশ্যগুলো একরকম নিয়মিতই হয়ে যাচ্ছে।
শুধু কি জাতীয় দল, সর্বশেষ প্রিমিয়ার ক্রিকেটে আবাহনীর জার্সিতেও ম্রিয়মাণ লিটনকে বিশ্রামে পাঠিয়েছিলেন কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। এত কিছুর পরও ব্যাটিং প্রতিভা আর নিজের সেরা দিনে বিশ্বের সেরা বোলারও গলির বোলার হয়ে যায়, এমন তৃপ্তি থেকেই মূলত তাকে নিয়ে ম্যাচের পর ম্যাচ ঝুঁকি নিয়ে খেলানো হচ্ছে। এখন তো পরিসংখ্যান লিটনের পক্ষে কথা বলছেই না, এমনকি তার আউট হওয়ার ধরনও দৃষ্টিকটু। এত সমালোচনার পরও বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়ার আগে বলেছেন, ‘আমি যে লেভেলের খেলোয়াড়, যে পারফর্ম করা উচিত সেটা পারিনি!’