
জুলিয়েন আলফ্রেড। ছবি: সংগৃহীত
সেন্ট লুসিয়ার নাম শুনেছেন? ক্রিকেটপ্রেমী হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ড্যারেন স্যামির বদৌলতে সেন্ট লুসিয়ার নাম শোনার কথা। স্যামি একজন সেন্ট লুসিয়ান। তার নামে সেন্ট লুসিয়ায় একটি স্টেডিয়ামও আছে। বোঝাই যায়, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুটি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দিয়ে স্যামি পরিণত হয়েছেন কিংবদন্তিতে।
সেন্ট লুসিয়ার ক্রীড়া ইতিহাসে ড্যারেন স্যামির যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে উঠে এসেছেন জুলিয়েন আলফ্রেড। ২০২৪ সালের প্যারিস অলিম্পিকে ‘দ্রুততম মানবী’র খেতাব অর্জন করেছেন ২৩ বছর বয়সী তরুণী। সেন্ট লুসিয়ার ইতিহাসে প্রথম অলিম্পিক স্বর্ণ শুধু না, প্রথম পদক জয়ের ইতিহাসও গড়েছেন তিনি।
ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের মানুষ কি জন্মগতভাবে দ্রুতগতি সম্পন্ন? প্রশ্ন উঠতে পারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের গতির ঝড় তোলা ফাস্ট বোলারদের কথা স্মরণ করুন। ম্যালকম মার্শাল, কার্টলে অ্যামব্রোসরা গতি দিয়েই শাসন করেছেন ক্রিকেট বিশ্ব। জ্যামাইকান উসাইন বোল্ট তো ‘ফিল্ড অ্যান্ড ট্র্যাক’ না, ক্রীড়া জগতের জীবন্ত কিংবদন্তি। এ ছাড়া মার্লিন ওটি, শেলি অ্যান ফ্রেজার প্রাইসরাও গতির ঝড় তুলেছেন ট্র্যাকে। কিন্তু তাই বলে সেন্ট লুসিয়া? যার আয়তন মাত্র ৬১৭ কিলোমিটার। জনসংখ্যা ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মাত্র ১ লাখ ৮০ হাজারের কাছাকাছি। সেই ছোট্ট দেশটির জুলিয়েন অলিম্পিকের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সোনা জয়ের মাধ্যমে সৃষ্টি করেছেন নতুন ইতিহাস।
স্তাদে ডি ফ্রান্সের ট্র্যাকে স্বর্ণ লড়াইয়ে ফেভারিট ছিলেন না জুলিয়েন। ফেভারিট ছিলেন শাকারি রিচার্ডসন। কিন্তু সব হিসেব পাল্টে দিয়ে মার্কিন তারকা শাকারিকে হারিয়েছেন জুলিয়েন। স্বর্ণ জিততে সময় নিয়েছেন ১০.৭২ সেকেন্ড। শাকারি দ্বিতীয় হয়েছেন ১০.৮৭ সেকেন্ডে দৌড় শেষ করে। বলা যায়, জুলিয়েন প্যারিস অলিম্পিকসে দ্রুততম মানবীর মুকুট জিতে বিশ্ববাসীর সামনে নিজের দেশকে তুলে ধরলেন নতুন করে।
সেইন্ট লুসিয়ার প্রথম ক্রীড়াবিদ হিসেবে অলিম্পিক স্বর্ণ জয়ের পর জুলিয়েন বলেছেন, ‘বিদেশে কাউকে যখন বলতাম সেন্ট লুসিয়া থেকে এসেছি, তখন সবাই অবাক হতো। জিজ্ঞেস করত, এটা কোথায়? আমি মনে করি, লোকে এখন সার্চ করে সেন্ট লুসিয়াকে বের করবে।’
এদিকে ছেলেদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সৃষ্টি হয়েছে চরম নাটকীয়তা। যুক্তরাষ্ট্রের নোয়াহ লাইলস স্বর্ণ জিতেছেন ৯ দশমিক ৭৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে। একই সময়ে ফিনিশিং টাচ ছুঁয়েছেন জ্যামাইকার কিশেন টমসন। ফটো ফিনিশে দেখা যায়, নোয়াহ লাইনে পা রাখেন ০ দশমিক ৭৮৪-এ, আর টমসন রাখেন ০ দশমিক ৭৮৯-এ। তাতেই বাজিমাত করেছেন লাইলস।