Logo
×

Follow Us

খেলাধুলা

সরকার পতনে ক্রীড়াঙ্গনে অস্থিরতা

Icon

আহসান হাবীব সুমন

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১৯:০১

সরকার পতনে ক্রীড়াঙ্গনে অস্থিরতা

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশে শুরু হয়েছে সংস্কার কার্যক্রম। রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে সামাজিক, সাংস্কৃতিক আর ক্রীড়াঙ্গনেও লেগেছে পালাবদলের হাওয়া।

ইতোমধ্যে নোবেলবিজয়ী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নতুন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) আর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) পরিবর্তন বিষয়ে উঠেছে দাবি।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাফুফে আর বিসিবি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বেশি। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন আর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের পদত্যাগের দাবি উঠেছে। বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু সালাউদ্দিন বা পাপন পদত্যাগ করেননি। তারা পদত্যাগ করবেন, এমন আভাসও নেই।

প্রশ্ন হচ্ছে, সালাউদ্দিন কিংবা পাপন স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে তাদের হটানো কি সম্ভব? পাপন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এবং ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ব্যর্থতা আর দুর্নীতির অভিযোগ বিসিবির তরফে তেমন নেই। সালাউদ্দিন আওয়ামী পরিমণ্ডলের মানুষ; কিন্তু সরাসরি রাজনীতি করতেন না। যদিও শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার আর দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বাস্তবতা হচ্ছে, সালাউদ্দিন কিংবা পাপনকে সরাসরি পদচ্যুত করা সম্ভব না। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার জানিয়েছেন, ‘ফিফার নির্দেশ রয়েছে ফেডারেশনকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত রাখা জরুরি। বাফুফেকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে হবে। তৃতীয় পক্ষ এখানে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।’

বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, ফুটবল ফেডারেশনে কোনো তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ হলে সে দেশের সদস্যপদ স্থগিত করে দেয় তারা। একই নিয়ম ক্রিকেটের বিশ্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘আইসিসি’র ক্ষেত্রেও। তাই নির্বাচন ছাড়া কাজী সালাউদ্দিন কিংবা পাপনকে সরিয়ে দেওয়া হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এই নিয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানিয়েছেন, ‘নেতৃত্বের ব্যক্তি নিয়ে কথা বলা উচিত নয়। আমরা প্রসেসের জন্য, সিস্টেমের জন্য আন্দোলন করেছি। সিস্টেমে বিশ্বাস করি, আমরা সিস্টেমের সংস্কার করব। একটা সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করব, সেখানে যিনিই নেতৃত্বে আসবেন, প্রতিষ্ঠান হিসেবে ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব।’

বাফুফের সহসভাপতি ইমরুল হাসান পেশাদার লিগ কমিটিরও চেয়ারম্যান। তিনি চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসেরও সভাপতি। ক্রীড়াঙ্গনে অন্যতম ‘ক্লিন ইমেজ’ তার। জানিয়েছেন, পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৬ অক্টোবর বাফুফে নির্বাচন হওয়ার কথা। বর্তমানে চলছে ফুটবলের দলবদল মৌসুম। ১ জুন থেকে শুরু হওয়া দলবদল চলবে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত। কিন্তু দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে হামলা হয়েছে আবাহনী ক্রীড়া চক্র আর শেখ জামাল ধানমন্ডিসহ বেশ কয়েকটি ক্লাবে। যারা পেশাদার লিগের বড় দল। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনায় তারা নির্ধারিত সময় দলবদলের আনুষ্ঠানিকতা সারতে পারবে কিনা, সন্দেহ আছে। বিষয়টি এএফসিকেও জানিয়েছে বাফুফে। কিন্তু এএফসি সময় দেবে কিনা সন্দেহ। ফিফার নিয়মে গ্রীষ্মকালীন দলবদলে ১২ সপ্তাহ পাওয়া যায়। আর জানুয়ারিতে মধ্যবর্তী দলবদলের জন্য নির্ধারিত সময় ৪ সপ্তাহ। তাই বাংলাদেশের জন্য গ্রীষ্মকালীন দলবদলের জন্য বাড়তি সময় পাওয়া কঠিন।

ইতোমধ্যে প্রায় সব দলই নিজেদের স্কোয়াড গুছিয়ে নিয়েছে। আনুষ্ঠানিক রেজিস্ট্রেশন শুধু বাকি। কিন্তু বর্তমান নাজুক পরিস্থিতিতে কোনো দল অনুশীলন শুরু করতে পারেনি। বসুন্ধরা কিংসের অনুশীলন শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ আগস্ট। হয়নি। ইমরুল হাসান জানিয়েছেন, বিদেশি খেলোয়াড় আর কোচও নিরাপত্তার আশঙ্কায় আসতে রাজি হচ্ছেন না। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক ডামাডোলে ফুটবল অঙ্গনে বিরাজ করছে অনিশ্চয়তা।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫