Logo
×

Follow Us

খেলাধুলা

ফুটবলে পরিবারতন্ত্র বিরল কোনো ঘটনা নয়

Icon

আহসান হাবীব সুমন

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৫

ফুটবলে পরিবারতন্ত্র বিরল কোনো ঘটনা নয়

ইতালির বিখ্যাত ক্লাব এসি মিলানের তিন ফুটবলার। ছবি: সংগৃহীত

ফুটবলে একই পরিবারের তিন প্রজন্মের অংশগ্রহণ খুব বেশি বিরল ঘটনা নয়; কিন্তু দাদা, বাবা আর নাতির একই দেশের জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া বড় ঘটনা। সম্প্রতি ইতালির জাতীয় দলের ডাক পেয়েছেন ড্যানিয়েল মালদিনি। ড্যানিয়েলের দাদা সিজার মালদিনি আর বাবা পাওলো মালদিনিও আজ্জুরিদের হয়ে মাতিয়েছেন ফুটবল দুনিয়া।

সিজার, পাওলো আর ড্যানিয়েল- তিন প্রজন্মই খেলেছেন ইতালির বিখ্যাত ক্লাব এসি মিলানে। পাওলো তো লেফট-ব্যাক পজিশনে সর্বকালের সেরাদের একজন। ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপ আর ২০০০ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলেছেন। ইতালি জাতীয় দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১২৬ ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়েছিলেন, যা পরে ভেঙে দেন ফাবিও ক্যানাভারো ও জিয়ানলুইগি বুফন। ১৯৮৪-৮৫ থেকে ২০০৮-০৯ পর্যন্ত পাওলোর পুরো ক্যারিয়ার কেটেছে এসি মিলানে। তার নামের পাশে রয়েছে পাঁচটি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগসহ ২৫টি ট্রফি।

পাওলোর বাবা সিজারও ছিলেন ডিফেন্ডার। ইতালির হয়ে ১৯৬০-৬৩ পর্যন্ত ১৪টি ম্যাচ খেলেছেন। ১৯৫৪-৫৫ থেকে টানা এক যুগ মিলানের জার্সিতে মাঠে নেমেছেন ৪১২ ম্যাচে। মিলানের হয়ে ১৯৬২-৬৩ মৌসুমে তিনি জিতেছেন ইউরোপিয়ান কাপ; খেলেছেন ১৯৬২ সালের ফিফা বিশ্বকাপে। ১৯৯৮ সালে ইতালি আর ২০০২ সালে প্যারাগুয়ের কোচ হয়ে অংশ নিয়েছেন বিশ্বকাপে।

বাবা-দাদার মতো রক্ষণভাগের খেলোয়াড় নন ড্যানিয়েল। তিনি সামাল দেন মধ্যমাঠ। ২০১০ সালে এসি মিলানের একাডেমি দলের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু। ২২ বছরের ড্যানিয়েল মিলানের জার্সিতে ২৪ ম্যাচ খেলেছেন। বর্তমানে আলো ছড়াচ্ছেন মোনৎসায়। দারুণ পারফর্ম করে নজর কেড়েছেন জাতীয় দলের কোচ লুসিয়ানো স্পালেত্তির। চলতি মাসেই উয়েফা নেশন্স লিগে বেলজিয়াম ও ইসরায়েলের বিপক্ষে খেলবে ইতালি। স্কোয়াডে রয়েছেন ড্যানিয়েল। 

ফুটবলে একই পরিবারের তিন প্রজন্মের অনেকেই খেলেছেন। কিন্তু সবাই জাতীয় দলে সুযোগ পাননি। হল্যান্ডের রোলান্ড কোম্যান ১৯৮৮ সালের ইউরো চ্যাম্পয়নশিপ জিতেছেন। তার বাবা প্রয়াত মার্টিন কোম্যানও ডাচদের জাতীয় দলের পক্ষে একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন; কিন্তু স্পেনে জন্ম নেওয়া রোলান্ড কোম্যান জুনিয়র খুব বেশি খ্যাতি পাননি। গোলরক্ষক হিসেবে বর্তমানে আছেন ডাচ টেলস্টার ক্লাবে। কখনও জাতীয় দলে সুযোগ হয়নি তার। চেলসি আর বার্সেলোনার মার্কাস আলোনসো স্পেনের হয়ে ৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। তার দাদা মার্কুইটোস আলোনসো পঞ্চাশের দশকে লা ফুরিও রোজাদের হয়ে দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে অংশ নেন। আর মার্কাসের বাবা মার্কাস আলোনসো পিনাহ ১৯৮১-৮৫ পর্যন্ত স্পেনের হয়ে খেলেছেন ২২টি ম্যাচ। অর্থাৎ স্পেনের আলোনসো পরিবারের তিন প্রজন্মই জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

উরুগুয়ের কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়াগো ফোরলান ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপে ‘গোল্ডেন বল’ জিতেছিলেন। উরুগুয়ে জাতীয় দলের পক্ষে ১১২ ম্যাচ খেলা ফোরলান ২০১১ সালে কোপা আমেরিকাও জিতেছেন। তার বাবা পাবলো ফোরলান খেলেছেন ১৯৬৬ আর ১৯৭৪ বিশ্বকাপ। দিয়াগোর দাদা অবশ্য ফুটবলার ছিলেন না। তবে তার নানা হুয়ান কার্লোস কোজারো ১৯২৮ সালে লে সেলেস্তেদের হয়ে দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন।

ফুটবলের রাজা পেলেকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। ব্রাজিলকে তিনবার ফুটবলের বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন মহানায়ক পেলে; কিন্তু জানেন কি, পেলের বাবা ডনডিনহো বিগত শতাব্দীর ৪০-৫০ দশকে ব্রাজিলের বিখ্যাত অ্যাটলেটিকো মুনেইরো আর ফ্লুমিনিন্সের মতো ক্লাবে খেলেছেন। পেলের বড় ছেলে এডিনহো বাবার ক্লাব স্যান্তসে দুই দফায় পাঁচ মৌসুম কাটিয়েছেন। পেলের আরেক সন্তান জশুয়া খেলেছেন স্যান্তস জুনিয়র দলে। জাভিয়ের হার্নান্দেজ আর তার বাবা সিনিয়র জাভিয়ের হারনান্দেজ মেক্সিকোর বিশ্বকাপ খেলেছেন। জাভিয়েরের নানা থমাস বালক্যাজারও মেক্সিকান দলের হয়ে ১৯৫৪ বিশ্বকাপ খেলেছেন।

ফুটবলে পরিবারতন্ত্রের ঘটনা নতুন করে উঠে এসেছে ড্যানিয়েল মালদিনি জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ায়। ইতালির হয়ে মাঠে নামলে মালদিনির পরিবারের নামও উঠে আসবে ইতিহাসের পাতায়। যেহেতু ইতালির কোনো পরিবারের তিন প্রজন্মের সদস্যের জাতীয় দলে খেলার রেকর্ড নেই। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫