
শৈশবেই বাবাকে হারান বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এতে পরিবারে নেমে আসে বিপর্যয়। কিন্তু সে পরিস্থিতিতে হাল ধরেন তামিমের বড় ভাই ও বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটার নাফিস ইকবাল। ১৫ বছর বয়সেই সংসারের বোঝা মাথায় তুলে নেন তিনি। নিজে কম খেয়ে তামিমের জন্য টাকা জমাতেন নাফিস। আর এমন তথ্য জানিয়েছেন নাফিসের বন্ধু বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।
সোমবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে মাশরাফি বিন মুর্তজার সাথে আড্ডা দেন তামিম ইকবাল।
তামিম-নাফিসের বাবা ইকবাল খান চট্টগ্রামের জনপ্রিয় খেলোয়াড় ছিলেন। ফুটবল ও ক্রিকেট; দুই খেলাতেই সমান পারদর্শী ছিলেন তিনি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম লিগে প্রথম সেঞ্চুরিটি করেন তামিমের বাবা। ফুটবলে চট্টগ্রামসহ ঢাকার প্রথম বিভাগে খেলেছেন ইকবাল খান।
ফেসবুক লাইভে আড্ডার এক ফাঁকে মাশরাফিকে তামিম প্রশ্ন করেন, আপনি আমাকে প্রথম কবে দেখেছিলেন? মনে আছে? তামিমের এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য একটুও সময় নিতে হয়নি মাশরাফিকে।
জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক বলে ওঠেন, তোর সঙ্গে আমার প্রথম দেখা, তুই হাফ প্যান্ট আর স্যান্ডো গেঞ্জি পরা ছিলি। আমি আর তোর ভাই নাফিস (ইকবাল) তো বন্ধু, চট্টগ্রামে টেস্ট ম্যাচের সময় তোদের বাড়ি গিয়েছিলাম। দেখলাম তুই আরো দুই-তিনজন বন্ধুর সঙ্গে গাড়ি নিয়ে খেলছিস। আমার-তোর বাচ্চারা এখন যেমন খেলে গাড়ি নিয়ে। আমি বললাম, ভাইয়া তুমি ভালো আছো? তুই বললি, জ্বী ভাইয়া। সেটা বলতেও লজ্জা পাচ্ছিলি। সেই তামিম এখন বাংলাদেশের অধিনায়ক, দেখতে ভালোই লাগে।
নাফিসের প্রসঙ্গ উঠতেই মাশরাফি বলেন, একটা কথা বলি, তোর আজকে এই পর্যায়ে আসার পেছনে তোর ভাইয়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। তোর বাবা অন্যরকম মানুষ ছিলেন। তোর মা, চাচারা, যে যেটাই বলুক, তোর ভাইকে তো আমি কাছ থেকে দেখেছি, নাফিস তোর জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করেছে, তা অবিশ্বাস্য। বাবা মারা যাওয়ার পর তোর মা সংসার সামলেছে। কিন্তু তোর জন্য তোর ভাই যা করেছে, আমরা জানি। মনে আছে, এক পেন্সের বার্গার খেত নাফিস। আমি একদিন ওকে বলেছিলাম, তুই যদি শরীরে না দিস (যথেষ্ট খাবার), তাহলে বাঁচবি কীভাবে আর খেলবি কীভাবে। পরে বুঝেছি, ও আসলে তোর জন্যই সব করত। টাকা বাঁচাত তোর জন্য, তুই যেন একটা ভালো ব্যাট দিয়ে খেলতে পারিস।