
তাবিথ আউয়াল ও ইমরুল হাসান। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নির্বাচন ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। ২০০৮ সাল থেকে বাফুফের সভাপতি পদ আঁকড়ে থাকা কাজী সালাউদ্দিন নির্বাচনী মাঠে নেই। পরবর্তী সভাপতি হিসেবে তাবিথ আউয়াল দায়িত্ব পাচ্ছেন, প্রায় নিশ্চিত। এ ছাড়া সিনিয়র সহ-সভাপতি পদেও ইমরুল হাসানের নাম ঘোষণা শুধু সময়ের অপেক্ষা।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাফুফে নির্বাচন নিয়ে সৃষ্টি হয় ব্যাপক আগ্রহ। চাউর ছিল সভাপতি পদে লড়াই করবেন তাবিথ আর তরফদার রুহুল আমিনের মতো হেভিওয়েট প্রার্থী। সাইফ পাওয়ার টেকের কর্ণধার রুহুল আমিন সভাপতি পদে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েও পিছু হটেন। তাবিথ ছাড়াও সভাপতি পদের মনোনয়ন নিয়েছিলেন আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ান, এএফএম মিজানুর রহমান চৌধুরী এবং শাহাদাত হোসেন জুবায়ের। কিন্তু ২০ অক্টোবর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন রেদোয়ান এবং শাহাদাত। তাতে বাফুফের শীর্ষ পদে প্রার্থী কেবল তাবিথ আর মিজানুর। পরিস্থিতি বলছে, বাফুফের সাবেক সহ-সভাপতি তাবিথের সঙ্গে নির্বাচনী মাঠে দিনাজপুরের সংগঠক মিজানুর রহমান হালে পানি পাবেন না।
রহুল আমিন সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও মনোনয়ন নেন সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে। একই পদে মনোনয়ন জমা দেন ইমরুল হাসান। বসুন্ধরা কিংসের প্রেসিডেন্ট এবং পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান ইমরুলের সঙ্গে তরফদারের মধ্যে ছড়ায় নির্বাচনী উত্তাপ। কিন্তু সেই উত্তাপে পানি ঢালেন সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা রহুল আমিন। বাফুফের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। ২০২০ সালেও ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন করেননি জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এবং চট্টগ্রাম আবাহনীর সাবেক এই কর্তা। তাতে সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে একমাত্র প্রার্থী ইমরুল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন।
বাফুফে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদ নিয়ে নির্বাচনী হিসাব-নিকাশ শেষ। সভাপতি পদেও তাবিথের জয়ও সময়ের ব্যাপার। চার সহ-সভাপতি পদে লড়াই করবেন ছয় প্রার্থী। তারা হচ্ছেন- সাবেক ফুটবলার রুম্মন বিন ওয়ালি সাব্বির, শফিকুল ইসলাম মানিক, শামস-উল-হুদা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল, ফাহাদ মোহাম্মদ আহমেদ করিম, মো. ওয়াহিদউদ্দীন চৌধুরী (হ্যাপি) এবং সাব্বির আহমেদ আরিফ। এ ছাড়া ১৫ নির্বাহী সদস্যের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন ৩৭ জন।
আসন্ন বাফুফে নির্বাচন নিয়ে কিছু বিতর্কও সৃষ্টি হয়েছে। কোনো প্যানেল না হওয়ায় সকলেই স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছেন। তবে অভিযোগ উঠেছে, বিগত কমিটির সদস্য এবং নারী উইংসের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণের মতো বিতর্কিত প্রার্থী নিয়ে। এ ছাড়া ২০০৮ নির্বাচন থেকে বাফুফের প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেজবাহ উদ্দিনের কমিশন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। তবে নির্বাচনে বিতর্ক, অভিযোগ আর উত্তেজনা থাকবেই। দেখার বিষয় হচ্ছে, বাফুফের পরবর্তী কমিটি দেশের ঝিমিয়ে পড়া ফুটবল অঙ্গনে প্রাণের সঞ্চার করতে পারে কিনা। বিশেষত ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন ফেডারেশনে দীর্ঘ সময় ধরে রাজনীতিকরণ বন্ধে সোচ্চার সকলেই। তাবিথ, ইমরুলসহ সবাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, বাফুফে থাকবে রাজনীতির ঊর্ধ্বে। সময়ই বলে দেবে তাদের কথার সত্যতা। অন্তত আগামী চার বছর কর্তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন মূল্যায়নের সুযোগ তো থাকছে।