বিশ্বসেরা ফুটবলার রদ্রি হার্নান্দেজ। ছবি: সংগৃহীত
ফুটবলের সবচেয়ে সম্মানজনক ব্যক্তিগত পুরস্কার ব্যালন ডি’অর। ফ্রান্স সাময়িকীর দেওয়া পুরস্কারটি বর্তমানে বিশ্বসেরা ফুটবলার আর কোচদের খেতাব হিসেবেও স্বীকৃত। সেই হিসেবে ২০২৩-২৪ মৌসুমের বিশ্বসেরা ফুটবলার রদ্রি হার্নান্দেজ। মেয়েদের বিভাগে টানা দ্বিতীয়বার সেরা হয়েছেন আইতানা বোনমাতি। ১৯৬০ সালের পর প্রথম ও সব মিলিয়ে তৃতীয় স্প্যানিশ পুরুষ হিসেবে ব্যালন ডি’অর জিতলেন রদ্রি।
২৮ অক্টোবর প্যারিসের থিয়েটার দু শাতলে’তে রদ্রির হাতে ব্যালনের ট্রফি তুলে দেন লাইবেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ১৯৯৫ ব্যালন ডি’অর জয়ী জর্জ উইয়াহ। ম্যানচেস্টার সিটির প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ব্যালন জয়ের কৃতিত্ব দেখানো রদ্রি বিগত মৌসুমে ৫০ ম্যাচ খেলে ৯ গোল ও ১৪ অ্যাসিস্ট করেন তিনি। জিতেছেন প্রিমিয়ার লিগ, উয়েফা সুপার কাপ ও ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা। স্পেনকে ১২ বছর পর ইউরো জেতাতে অসামান্য ভূমিকা রাখেন। ছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়।
ব্যালন জয়ে হট ফেভারিট ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার ভিনিসিয়াস জুনিয়র। গত মৌসুমে দেশ ও ক্লাবের হয়ে ৪৯ ম্যাচে গোল করেছেন ২৬টি ও সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ১১টি। রিয়ালের হয়ে জিতেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ, লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপ। দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সের পরও ব্যালন জিততে পারেননি ভিনি। সাধারণত ব্যালন ডি’অর জয়ীকে নির্বাচন করা হয় মাঠে তার পজিশন ও ইমপ্যাক্ট অনুযায়ী পয়েন্ট পেয়ে। পাশাপাশি ব্যালন ডি’অর দেওয়া হয় নির্বাচিত ক্রীড়া সাংবাদিক, জাতীয় দলের কোচ ও অধিনায়কের ভোটে।
ব্যালনে সেরা গোলরক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। অ্যাস্টন ভিলাকে প্রায় ৬০ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগে ফিরিয়েছেন আর্জেন্টিনার ‘বাজপাখি’। আর্জেন্টিনার হয়ে জিতেছেন কোপা আমেরিকা। সেরা কোচের স্বীকৃতি পেয়েছেন রিয়ালের কার্লো আনচেলত্তি। নারীদের সেরা কোচ বার্সেলোনার এমা হায়েস। সর্বোচ্চ ৫২ গোল করে সেরা স্ট্রাইকারের ‘গাড মুলার’ ট্রফি ভাগাভাগি করেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে আর হ্যারি কেন। স্পেনের ‘বিস্ময়-বালক’ লামিন ইয়ামাল নির্বাচিত হয়েছেন বর্ষসেরা তরুণ ফুটবলার।
২০২৩-২৪ মৌসুমের ব্যালনে স্প্যানিশ বিপ্লব ঘটেছে বললেও ভুল হবে না। সেরা পুরুষ আর নারী ফুটবলার এবং উদীয়মান তারকা স্পেনের। নারী এবং পুরুষ বিভাগের সেরা কোচ স্পেনের রিয়াল আর বার্সেলোনার। এমনকি যৌথভাবে সেরা স্ট্রাইকারের পুরস্কার পাওয়া এমবাপ্পেও বর্তমানে রিয়াল মাদ্রিদে খেলছেন।
ব্যালন ডি’অর পুরস্কারে লিওনেল মেসি রেকর্ড আটবারের বিজয়ী। তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ব্যালন জিতেছেন পাঁচবার। তবে এবার তাদের দুজনের কেউই ছিলেন না সংক্ষিপ্ত ৩০-এর তালিকায়। ১৯৫৬ সাল থেকে ফ্রান্স সাময়িকী দিচ্ছে ব্যালন ডি’অর। প্রথম ব্যালন জিতেছিলেন ইংল্যান্ডের স্ট্যানলি ম্যাথুজ। শুরুতে শুধু ইউরোপীয় ফুটবলারদের ব্যালন দেওয়া হতো। তাই পেলে আর ম্যারাডোনার মতো কিংবদন্তি কখনও ব্যালন জেতেনি। ১৯৯৫ সাল থেকে ইউরোপীয় ক্লাবে খেলা যে কোনো দেশের ফুটবলারদের জন্য ব্যালন উন্মুক্ত করা হয়। আর ২০০৭ সাল থেকে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে খেলা ফুটবলাররা ব্যালন জয়ের জন্য বিবেচিত হচ্ছেন।