Logo
×

Follow Us

খেলাধুলা

নতুন নেতৃত্বে বাংলাদেশের ফুটবল

Icon

আহসান হাবীব সুমন

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৩

নতুন নেতৃত্বে বাংলাদেশের ফুটবল

(বাঁ থেকে) নাসের শাহরিয়ার, ওয়াহিদ উদ্দিন, তাবিথ আউয়াল, সাব্বির আহমেদ আরেফ ও ফাহাদ করিম।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বহুল আলোচিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২৬ অক্টোবর। ২০০৮ সালের পর বাফুফে পেয়েছে নতুন অভিভাবক। নির্বাচনী লড়াইয়ে জয়ী হয়ে কমিটিতে এসেছে বেশকিছু নতুন মুখ। বিশেষ করে কর্পোরেট দুনিয়ার পরিচিত মানুষদের বাফুফে নির্বাচনে জয়ী হওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকেই। বর্তমানে ফুটবল উন্নয়নে যে বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন তা বাফুফের নতুন কর্তাদের মেলবন্ধনে পূরণ করা সম্ভব বলে মনে করছেন ফুটবলবোদ্ধারা।

২০০৮ সাল থেকে বাফুফে সভাপতির পদে ছিলেন কাজী মো. সালাহউদ্দিন। তবে ২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনি অংশ নেননি। সভাপতি পদে তাবিথ আউয়াল বিপুল ভোটে পরাজিত করেছেন দিনাজপুরের 

তৃণমূল সংগঠক আ ফ ম মিজানুর রহমান চৌধুরীকে। নির্বাচিত হওয়ার পর সাবেক ফুটবলার এবং সংগঠক তাবিথ জানান, ‘আমরা কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। আমাদের প্রথম নির্বাহী মিটিংয়ে আগামী দিনে ফুটবল নিয়ে বিশদ পরিকল্পনা জানাব। আশা করছি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের ফুটবল ফিরে পাবে হৃত-গৌরব।’

তাবিথ আরও বলেন, ‘আমরা ফুটবলে পরিবর্তন আনতে চাই। সংবিধান ও অবকাঠামোগুলো সংস্কার করার কর্মসূচি হাতে নেব। এ ছাড়া ঢাকাসহ সারা দেশের প্রতিটা জেলায় ফুটবল যেন মাঠে থাকে, সেদিকে নজর রাখা হবে।’

আগামী ৪ বছরের বাফুফে কমিটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ইমরুল হাসান। পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান এবং বসুন্ধরা কিংসের প্রেসিডেন্ট ইমরুল ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছেন ‘ফুটবল ৩৬০’।  মূলত আগামী চার বছরের ফুটবল রোডম্যাপ হিসেবে তার পরিকল্পনায় থাকছে ছয়টি স্তর-অর্গানাইজেশনাল, স্ট্র্যাটেজিক, অপারেশনাল, মার্কেটিং, মিডিয়া ও ইভেন্ট, ফ্যানস এবং ভলান্টিয়ার। ইমরুল দেশের ফুটবল উন্নয়নে বাফুফের সঙ্গে  সরকারি সংস্থা তথা ক্রীড়া পরিষদ এবং মন্ত্রণালয়কে সমান্তরাল গতিপথে আনতে চান। তার প্রস্তাব অনুযায়ী বাফুফের নতুন স্ট্যান্ডিং কমিটি হবে ফিফা ও এএফসি আদলে। বাফুফেতে বর্তমানে যে স্ট্যান্ডিং কমিটিগুলো আছে, সেগুলো বেশিরভাগই নিষ্ক্রিয় এবং আধুনিক ফুটবলের সঙ্গে মানানসই নয়। তাই পরিবর্তন জরুরি।

প্রতিটা জেলায় একটি করে ক্লাবকে ফিফা ও এএফসির গাইডলাইন মেনে লাইসেন্সিং করান এবং সরকারের সহায়তায় ৮ বিভাগে আটটি ফুটবল স্টেডিয়াম বরাদ্দ নেওয়ার পরিকল্পনার কথা বলেছেন ইমরুল। শুধু ফুটবল নয়, ভবিষ্যতে বিচ ফুটবল, ফুটসাল আর ই-স্পোর্টসকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বাফুফের কার্যবিধিতে। ফুটবলের বিপণনে কার্যকর মার্কেটিং টিম গড়ে পৃষ্ঠপোষকতা সংকট কাটিয়ে তোলার লড়াই করবে বাফুফের নতুন কমিটি।

বাফুফের চার সহ-সভাপতি পদে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল। বেসরকারি উদ্যোগে বাংলাদেশের প্রথম ফুটবলার গড়ার প্রতিষ্ঠান শামস-উল-হুদা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক তিনি। স্বনামধন্য ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যাল্সের চেয়ারম্যান নাসের শাহরিয়ার জাহেদী ক্রীড়াপ্রেমী হলেও কোনো ফেডারেশনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। বাফুফের 

সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়ে জানিয়েছেন, জেলাভিত্তিক লিগগুলোকে সচল করার কথা। তিনি মনে করেন, ঢাকার বাইরের ফুটবল জাগাতে পারলে উন্নতি সম্ভব।

বাকি তিন সহ-সভাপতি হলেন ফাহাদ মোহাম্মদ আহমেদ করিম, ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি, সাব্বির আহমেদ আরেফ। ফাহাদ করিম শীর্ষস্থানীয় ক্রীড়া বিপণন ও ব্যবস্থাপনা কোম্পানি কে-স্পোর্টসের প্রেসিডেন্ট ও সিইও। ফেডারেশনে প্রচুর অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা নিয়ে এসেছেন। তিনি জানান,  ‘ফুটবলের বিপণনের ক্ষেত্র বৃদ্ধির জন্য কাজ করব। পিআর, মার্কেটিং, ব্র্যান্ড বিল্ডিং, পার্টনারশিপে আমার অভিজ্ঞতা আমি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের জন্য কাজে লাগাতে চাই। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আমি বাফুফে এবং ফুটবলের একটি ভালো ভাবমূর্তি গড়ে তোলার জন্য কাজ করতে চাই।’

সন্দেহ নেই, বাংলাদেশের ফুটবল খুব শক্ত অবস্থানে নেই। বিগত কমিটির বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ। ফিফা র‌্যাংকিংয়ে উন্নতি আর ঘরোয়া ফুটবলকে জাগিয়ে তোলার চ্যালেঞ্জ রয়েছে নব-নির্বাচিত সভাপতি তাবিথ এবং তার কমিটির সামনে। তাবিথের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ফুটবল ঘুরে দাঁড়াবে, এটাই এখন চাওয়া।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫