Logo
×

Follow Us

খেলাধুলা

বাংলাদেশের সাঁতার আধুনিক হবে কবে

Icon

কামাল হোসেন

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৯

বাংলাদেশের সাঁতার আধুনিক হবে কবে

জাতীয় সাঁতার, ডাইভিং ও ওয়াটারপোলো প্রতিযোগিতা।

ম্যাক্স গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় সৈয়দ নজরুল ইসলাম জাতীয় সুইমিং কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩৩তম জাতীয় সাঁতার, ডাইভিং ও ওয়াটারপোলো প্রতিযোগিতা। ৯ থেকে ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা, জেলা ক্রীড়া সংস্থা, সুইমিং ক্লাব, বিকেএসপি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশ আনসার, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশসহ প্রায় ৫২টি দল। খেলোয়াড়ের সংখ্যা প্রায় ৫৫০ জন।

নদীমাতৃক দেশ হলেও অলিম্পিক কিংবা অন্যান্য বিশ্ব প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের সাঁতারুদের অংশগ্রহণ শুধু নিয়ম রক্ষায় সীমাবদ্ধ। তবে দক্ষিণ এশিয়ার সাঁতার প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের সুনাম রয়েছে। ১৯৮৫ সালে ঢাকা সাফ গেমসে সাঁতারু মোশাররফ হোসেন খান একাই পাঁচটি স্বর্ণ জিতেছিলেন। নব্বই দশকে কারার মিজানুর রহমান টানা চারটি সাফে স্বর্ণ জেতেন। ২০১৬ সালের গৌহাটি এসএ গেমসে মাহফুজা খাতুন শিলা স্বর্ণ জেতেন দুটি। শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান অ্যাকোয়াটিক চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশি সাঁতারুরা দুটি স্বর্ণ, দুটি রৌপ্যসহ মোট ৯টি পদক লাভ করেন।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় সাঁতারে আলো ছড়িয়েছেন রাফি, রোমানা আর যুথিরা। ভিন্ন ভিন্ন ইভেন্টে রেকর্ড গড়ে স্বর্ণজয় করেন তারা। প্রতিযোগিতার প্রথম দুই দিনেই সাতটি জাতীয় রেকর্ড হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, রেকর্ডগুলোর বিশ্বস্ততা নিয়ে। সারা বিশ্বের সাঁতার মানেই আধুনিকতার ছোঁয়া। অথচ কয়েক বছর ধরে দেশের জাতীয় সুইমিংপুলের একমাত্র ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড অচল! বাংলাদেশের সাঁতার প্রতিযোগিতা ও অনুশীলন হয় হ্যান্ড টাইমিংয়ে। শুধু ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড নয়, বাংলাদেশ সাঁতারের প্রধান ভেন্যু মিরপুরস্থ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কমপ্লেক্সে রয়েছে আরো নানা সমস্যা। গ্যাসলাইন না থাকায় শীতকালে হয় না অনুশীলন, বিদ্যুৎসহ সমস্যার যেন শেষ নেই।

৫০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে নৌবাহিনীর স্বর্ণজয়ী যুথী আক্তার বলেন, ‘স্বর্ণ জিতেছি। ভালো লাগছে। কিন্তু নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার উপায় কই? ইলেকট্রনিক বোর্ড নেই। হ্যান্ড টাইমিং আর টাচ বোর্ডের টাইমিং তো এক হয় না। বিদেশি কোচ থাকলেও আমাদের জন্য ভালো হতো। বাংলাদেশি কোচের চেয়ে বিদেশি কোচের মেথড, সবকিছুই আলাদা হয়।’

বাংলাদেশের সাঁতারে সম্ভাবনা থাকলেও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সুদৃষ্টি কমই পেয়েছে। সব সময় নানা ঘাটতি নিয়েই চলেছে সাঁতার। গত দেড়যুগ ধরে সাঁতার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসছেন রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্ট ব্যক্তি, যাদের সাঁতারের বিভিন্ন ইভেন্ট সম্পর্কে নেই পরিষ্কার ধারণা। শুধু প্লেয়ার হান্ট আর দেশের প্রতিযোগিতা আয়োজন এবং দক্ষিণ এশিয়ায় ছিটেফোঁটা সাফল্যে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছেন তারা। বিশ্বমানে দেশের সাঁতারকে পৌঁছে দেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। যে দেশের সাঁতারের অভিভাবকরা আধুনিক সুইমিংপুল তৈরি করা দূরে থাক, একটা ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড সচল রাখতে পারেন না, সে দেশের সাঁতার আধুনিক হবে কবে- প্রশ্নটা থেকেই যায়। 

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫