
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। ছবি: সংগৃহীত
সদ্য শুরু হয়েছে বাংলাদেশের ২০২৪-২৫ ফুটবল মৌসুম। দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা আর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচনসংক্রান্ত জটিলতায় মৌসুম শুরু হয়েছে দেরিতে। বাদ পড়েছে স্বাধীনতা কাপের মতো সাম্প্রতিক নিয়মিত আয়োজন।
২২ নভেম্বর প্রথমবারের মতো ‘বাংলাদেশ ২.০ চ্যালেঞ্জ কাপ’ দিয়ে মাঠে গড়িয়েছে ফুটবল মৌসুম। ইউরোপীয় ঘরানার আদলে লিগ আর ফেডারেশন কাপ বিজয়ীদের মধ্যে ‘চ্যালেঞ্জ কাপ’ আয়োজনের ঘোষণা ছিল। তবে বিগত মৌসুমে দুটি আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। তাই ফেডারেশন কাপ ফাইনালিস্ট হিসেবে চ্যালেঞ্জ কাপে বসুন্ধরা কিংসের প্রতিপক্ষ হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করে মোহামেডান। চ্যালেঞ্জ কাপে ঐতিহ্যবাহী সাদা-কালো শিবিরকে ১-৩ গোলে হারিয়ে মৌসুমের প্রথম ট্রফি জয়ের আনন্দে মেতেছে বসুন্ধরা কিংস।
এদিকে ২৯ নভেম্বর মাঠে গড়িয়েছে পেশাদার ফুটবল লিগ। কিন্তু শুরুতেই মাঠ নিয়ে কড়া সমালোচনা। চলমান বিপিএলে ১০টি দলকে দেওয়া হয়েছে পাঁচটি মাঠ। গাজীপুর, কুমিল্লা, মুন্সীগঞ্জ, ময়মনসিংহ আর ঢাকার কিংস অ্যারেনা ভেন্যু হিসেবে পেয়েছে দুটি করে দল। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে বসুন্ধরা কিংস ছাড়া কোনো ক্লাবের নিজস্ব মাঠ নেই। তাই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ক্লাবগুলোকে সার্বিক বিবেচনায় মাঠ বরাদ্দ দেয় বাফুফে। আর বরাদ্দ পাওয়ার পর মাঠের দেখভাল আর খেলার উপযোগী করে তোলার দায়িত্ব স্বাগতিক ক্লাবগুলোর- এমনটা জানিয়েছেন পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান মো. ইমরুল হাসান।
বিতর্ক ওঠে গাজীপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত মোহামেডান বনাম ওয়ান্ডারার্সের মধ্যকার ম্যাচে মাঠ নিয়ে। গাজীপুরের মাঠের কোনো অংশে ঘাস বড়, আবার কোনো অংশ খালি, কোথাও কোথাও মাটি এবড়োখেবড়ো। এই মাঠ ঢাকা ওয়ান্ডারার্স আর ইয়াংম্যান্স ফকিরাপুলের হোম ভেন্যু। ঢাকা মোহামেডান আর আবাহনীর হোম ভেন্যু কুমিল্লা ভাষাশহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম বিতর্ক উসকে দিয়েছে। নতুন মৌসুমে নিজেদের হোম ভেন্যুতে মোহামেডান ১-০ গোলে হারিয়েছে বসুন্ধরা কিংসকে। কিন্তু মাঠে ঘাসের লেশমাত্র নেই।
জানা গেছে, কুমিল্লা স্টেডিয়ামে কিছুদিন আগেও ক্রিকেট খেলা হয়েছে। পিচ তোলার পর মাঠের সংস্কার কাজ শেষ হয়নি। ইমরুল হাসান জানিয়েছেন, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে ছয় মাসের জন্য মাঠ বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। ফুটবল মৌসুম সামনে রেখেও কুমিল্লা ডিএসএ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছিল।’
বাংলাদেশের স্টেডিয়ামগুলো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন। ফুটবল কিংবা ক্রিকেটের জন্য আলাদা স্টেডিয়াম খুব বেশি নেই। তাই ক্রীড়া পরিষদ থেকে বরাদ্দ নিয়ে চলে নানা আয়োজন। সেখানেও ঝামেলা। শোনা যাচ্ছে, আগামী ১০ জানুয়ারি কুমিল্লা স্টেডিয়ামকে স্থানীয় একটি অনুষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে! বাংলাদেশের স্টেডিয়ামগুলোতে কনসার্ট থেকে শুরু করে গরুর হাট আয়োজনের ঘটনা আছে। এই ধরনের আয়োজনে মাঠের ক্ষতি হয়। খেলোয়াড়দের ইনজুরির প্রবণতা প্রবল হয়।
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক কায়সার হামিদ বলেন, ‘আমি টেকনিক্যাল বিষয় বুঝি না। মাঠ তৈরি কার দায়িত্ব- এটা ক্লাব আর বাফুফের বিষয়। অপ্রস্তুত মাঠে চাইলেও সুন্দর ফুটবল খেলা সম্ভব নয়। ভালো ফুটবলের জন্য খেলোয়াড়দের ভালো মাঠ দিতে হবে। নইলে ইনজুরিতে ক্যারিয়ার ঝুঁকিতে ফেলে কে নিজের সেরাটা দিতে চাইবে?’