চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে আলো ছড়াচ্ছেন আল আমিন। যশোরের শামস-উল-হুদা একাডেমি থেকে দীক্ষা নেওয়া আল আমিন খেলেছেন আরামবাগ আর শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে। বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের হয়ে পাল্লা দিচ্ছেন বিদেশি স্ট্রাইকারদের সঙ্গে।

২০২৪-২৫ প্রিমিয়ার লিগের চার ম্যাচে পাঁচ গোল করেছেন আল আমিন। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক সোলায়মান দিয়াবাতের সঙ্গে যৌথভাবে গোলদাতার শীর্ষে তিনি। জোড়া গোল করেছেন ইয়াংম্যান্স ফকিরের পুল আর ঢাকা ওয়ান্ডারার্সের বিপক্ষে। দুটি ম্যাচেই জয় পায় সার্ভিসেস দলটি। মোহামেডানের বিপক্ষেও তিনি পেয়েছেন জালের দেখা। ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে নজর কেড়েছেন তিনি।   

নীলফামারীর সন্তান ২০ বছরের আল আমিন শুধু স্ট্রাইকার পজিশনে না, খেলতে পারেন উইঙ্গার, মিডফিল্ডার হিসেবেও। এমনকি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ জাতীয় দলে রাইট ব্যাক হিসেবেও নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছেন। তাকে বলা হয় সব্যসাচী ফুটবলার। ২০১৮ সালে শিরোপাজয়ী বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ দলের সদস্য আল আমিন। একই বছর থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত উয়েফা অনূর্ধ্ব-১৬ আসরে তিনি লাল-সবুজ জার্সিতে মাঠে নামেন সাইপ্রাস ও মালদ্বীপের বিপক্ষে। ২০২০ সালে ক্লিয়ারম্যান অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল দলের অংশ হিসেবে ম্যানচেস্টার সিটি ক্লাবে অনুশীলনের সুযোগ ছিল। কিন্তু করোনা মহামারির জন্য যাওয়া হয়নি।  

চলতি মৌসুমে বাংলাদেশ পুলিশের হয়ে আল আমিনের খেলারই কথা ছিল না। তার চুক্তি ছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সঙ্গে। কিন্তু ৫ আগস্ট বাংলাদেশের  রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে শেখ জামাল গুটিয়ে নিয়েছে ফুটবল কার্যক্রম। সুযোগে তাকে লুফে নেয় বাংলাদেশ পুলিশ। বিগত বছরে শেখ জামালের হয়ে লিগের কয়েকটি ম্যাচ খেললেও গোল পাননি। চলতি মৌসুমে টানা গোল পাওয়া আত্মবিশ্বাসী আল আমিন দেখছেন মূল জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন। তিনি বলেছেন, ‘সবারই বড় লক্ষ্য থাকে। আপাতত আমি চাই মার্চের ফিফা উইন্ডোতে জাতীয় দলে ডাক পেতে। যদি আমাকে ডাকা না-ও হয়, সমস্যা নেই। আরো গোল করে সবার নজরে আসতে চাই। আমি পরিশ্রম করে যাব। আমাকে লক্ষ্যে পৌঁছুতে হবেই।’ 

পুলিশ দলে আছেন প্যারাগুয়ের স্ট্রাইকার নেলসন কুইন্টানা মার্টিনেজ। কিন্তু মার্টিনেজকে বাদ দিয়ে কোচ মাহবুবুল হক জুয়েল নিয়মিত খেলাচ্ছেন আল আমিনকে। বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের জন্য যা বিরল ঘটনা। আল আমিনে মুগ্ধ বাংলাদেশ পুলিশ দলের গোলরক্ষক কোচ নিজাম মজুমদার বলেছেন, ‘দেশের ফুটবলে বর্তমানে সবচেয়ে ক্ষীপ্রগতির ফরোয়ার্ড আল আমিন। বল হারানোর পর দ্রুতগতিতে ফিরে আসায় জুড়ি নেই।’