
দাবায় মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন রায়ান রাশিদ। ছবি: সংগৃহীত
রায়ান রাশিদ। ৯ বছর বয়সী শিশু। যে বয়সে তার হাতি-ঘোড়া আর সৈন্য-সামন্ত নিয়ে খেলার কথা সমবয়সী বন্ধুদের সঙ্গে, সেই বয়সে মুগ্ধ মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন দাবার ৬৪ খোপে। প্রখর বুদ্ধি আর ধৈর্যের যে খেলায় দরকার মনোযোগ ও দ্রুত চিন্তা করার ক্ষমতা। সে খেলাতে মুগ্ধ হারিয়ে দিয়েছেন নরওয়ের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন গ্র্যান্ডমাস্টার ম্যাগনাস কার্লসেনকে।
মুগ্ধ ঢাকার সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। বাবা মামুনুর রশিদের কাছে দাবায় হাতেখড়ি। বর্তমানে তাকে দাবা খেলায় প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন নাইম হক, যিনি নিজে ফিদে মাস্টার। নিয়মিত অংশ নেন বাংলাদেশের ঘরোয়া আর আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়। তার খুদে শিষ্যও দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখতে শুরু করেছেন। বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১০ জুনিয়র দাবা চ্যাম্পিয়ন মুগ্ধ ডিসেম্বরে অংশ নিয়েছেন থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এশিয়ান স্কুল দাবায়। তবে ১৯ জানুয়ারি পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন কার্লসেনকে হারিয়ে হতবাক করে দিয়েছেন পুরো বিশ্বকে।
কার্লসেনকে মুগ্ধ হারিয়েছেন অনলাইন দাবার সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম চেস ডটকমে। যেখানে তার কোনো নিজস্ব প্রোফাইল নেই। অথচ চেস ডটকমে খেলতে হলে নির্দিষ্ট দাবাড়ুকে নিজের প্রোফাইল থেকে টুর্নামেন্টে অংশ নিতে হয়। নিজের প্রোফাইল নেই তো কি হয়েছে! মুগ্ধ খেলেছেন গুরু নাইমের প্রোফাইল থেকে। পেয়েছেন অবিশ্বাস্য জয়।
মুগ্ধ অংশ নিয়েছেন এক মিনিটের নির্ধারিত বুলেট গেমে। দাবায় যেখানে প্রতিটা চাল দিতে ভাবনায় মগ্ন হতে হয়, সেখানে এক মিনিটের ম্যাচে কতটা প্রখর আর বিদ্যুৎগতির চিন্তাশক্তি প্রয়োজন, সহজেই অনুমেয়। সাধারণত বিশ্বের ফিদে মাস্টার, আন্তর্জাতিক মাস্টার, গ্র্যান্ড মাস্টারসহ খেতাব পাওয়া দাবাড়ুরা অনলাইনে ‘বুলেট গেম’ খেলেই নিজেদের ধারালো করে তোলেন।
কার্লসেনকে হারিয়ে মুগ্ধ জানান, ‘আমি শুরুতে ভাবতেই পারিনি কার্লসেনকে হারিয়ে দেব। তবে একসময় এসে উনি একটা কুইন ব্লান্ডার করেন। এরপরই আমি বুঝতে পেরেছি ম্যাচটা জিততে পারব। শেষ পর্যন্ত জিতে গেছি। বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে হারানোয় আমার মধ্যে আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়েছে। ভবিষ্যতে আরো ভালো খেলতে এই ম্যাচ অনুপ্রেরণা জোগাবে।’
মুগ্ধর দাবা ক্যারিয়ার মাত্র শুরু। তিনি ‘গ্র্যান্ড মাস্টার’ হতে চান। নাইম জানিয়েছেন, ‘মুগ্ধ দারুণ সম্ভাবনাময়। এখনকার সময়ের অনেক দাবাড়ুর চেয়ে এগিয়ে সে।’