আইসিসির চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ছবি: সংগৃহীত
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে মাঠে গড়াচ্ছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। আট দল নিয়ে অনুষ্ঠেয় আসরের মূল স্বাগতিক পাকিস্তান। তবে পাকিস্তান সফরে রাজি না হওয়ায় ভারতের ম্যাচ আয়োজনের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। এমনকি ভারত ফাইনালে উঠলে ৯ মার্চ লাহোর নয়, দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আয়োজিত হবে শিরোপা লড়াই।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ‘হট ফেভারিট’ হিসেবে মাঠে নামছে ভারত। রোহিত শর্মার নেতৃত্বে আইসিসি ওয়ানডে র্যাংকিয়ের শীর্ষ দল হিসেবে আমিরাতে যাচ্ছে টিম ইন্ডিয়া। ব্যাটার র্যাংকিংয়ের সেরা পাঁচে রয়েছেন রোহিত শর্মা, শুভমান গিল ও বিরাট কোহলি। ভারতের বোলিং লাইন দারুণ ব্যালেন্সড। পেসারদের মধ্যে মোহাম্মদ শামি ছাড়াও দলে আছেন আর্শদীপ সিং ও জাশপ্রিত বুমরাহ। তবে বুমরাহর খেলা নির্ভর করছে ফিটনেসের ওপর। এ ছাড়া পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে থাকছেন হার্দিক পান্ডিয়া। স্পিনারদের মধ্যে অক্ষর প্যাটেল ছাড়াও আছেন কুলদীপ যাদব ও রবীন্দ্র জাদেজা।
পাকিস্তান দল বর্তমানে আইসিসি র্যাংকিংয়ের তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ওয়ানডে র্যাংকিং সেরা বাবর আজম, অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান, ফখর জামান আর ইমাম উল হকদের ব্যাট জ্বলে উঠলে পাকিস্তান শিরোপা জিততে পারে। শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ, হারিস রউফ, মোহাম্মদ হাসনাইন ও আব্বাস আফ্রিদিদের নিয়ে পাকিস্তানের বোলিং লাইন ভয়ংকর।
জশ বাটলারের অধিনায়কত্বে ইংল্যান্ড দলকেও হিসেবে রাখতে হবে। যদিও দলে নেই বেন স্টোকসের মতো পরীক্ষিত তারকা। তবে জো রুট, জেমি স্মিথ, ফিল সল্ট, লিয়াম লিভিংস্টোনের সঙ্গে বোলিং লাইনে জোফরা আর্চার, শাকিব মাহমুদ, আদিল রাশিদ আর গাস অ্যাটকিন্সরা জ্বলে উঠলে থ্রি লায়ন্সরা যেতে পারে অনেক দূর। দক্ষিণ আফ্রিকা খেলবে টেম্বা বাভুমার নেতৃত্বে। দলে আছেন ডেভিড মিলার, এইডেন মার্করাম, হেনরিখ ক্লাসেনের মতো ব্যাটার। বোলিংয়ে লুঙ্গি এনগিডি, আনরিখ নর্টজে, কাগিসো রাবাদা, কেশব মহারাজ কিংবা রাবরেজ শামসিরা যেকোনো ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে প্রোটিয়াদের বড় টুর্নামেন্টে ভেঙে পড়ার রোগ।
২০০২ সালের চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ডকেও হিসেবের মধ্যে রাখতে হবে। অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার, ডেভিড কনওয়ে, টম ল্যাথাম, কেন উইলিয়ামসন, রাচিন রবীন্দ্র, লকি ফার্গুসন, ম্যাট হেনরি, ড্যারিল মিচেলদের নিয়ে কিউইরাও দারুণ শক্তিশালী। চমক দেখাতে পারে আফগানিস্তান। হাশমাতুল্লাহ শাহিদির অধিনায়কত্বে রহমানুল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রাশিদ খান, মোহাম্মদ নবী, ফজল হক ফারুকীরা যেকোনো দলের বিপক্ষে অঘটন ঘটাতে সক্ষম। আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সাকিব আল হাসান আর লিটন দাস দলে নেই। অবসর নিয়েছেন তামিম ইকবাল। অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আর সৌম্য সরকারের সঙ্গে তানজিম হাসান, তাওহিদ হৃদয়, পারভেজ হোসেন ইমনরা রয়েছেন। বোলিংয়ে নাহিদ রানা, তাসকিন আহমেদ, মেহেদি হাসান মিরাজ আর মোস্তাফিজুর রহমানদের পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভর করবে টাইগারদের সাফল্য।
আর অস্ট্রেলিয়াও তো রয়েছে। যারা ক্রিকেটের যেকোনো টুর্নামেন্টে অটো ফেভারিট। এক দিনের ক্রিকেটে সর্বাধিক ছয়বারের বিশ্বসেরা অজিরা ২০০৬ ও ২০০৯ সালের পর তৃতীয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের লক্ষ্যে লড়াই করবে। অধিনায়ক প্যাট কামিন্স, স্টিভ স্মিথ, মার্কাস স্টয়নিস, জশ হেজেলউড, ট্র্যাভিস হেড, জশ ইংলিস, মার্নাস ল্যাবুশান, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলদের নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তারা প্রত্যেকেই বিশ্বজয়ী ক্রিকেটার। তাই অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের জন্য যেকোনো দলকে বাড়তি ভাবনায় থাকতে হবে- এটা নিশ্চিত।