৪০ দিনের ৪৬ ম্যাচের লড়াই শেষ হয়েছে গত শুক্রবার। টুর্নামেন্টে শুরু থেকে দাপট দেখানো ফরচুন বরিশাল মুকুট ধরে রেখেছে এবারও। মাঠের খেলাও হয়েছে জমজমাট। বিতর্কের টেবিলও ছড়িয়েছে উত্তাপ। বরং মাঠের খেলার চেয়ে বাইরের উত্তাপই বেশি আলোচনায় ছিল সদ্য শেষ হওয়া বিপিএলে।

অনেকে এবারের বিপিএলকে মনে রাখবে বিতর্কের কারণে। অনেক আবার মনে রাখবে চার-ছক্কার ফুলঝুরির কারণে। বিসিবির পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম মনে করছেন, বিতর্ক ছাপিয়ে সফল এবারের বিপিএল। যেমনটা চেয়েছেন, তেমন টুর্নামেন্টই আয়োজন করতে পেরেছেন বলে তার দাবি। বিশেষ করে টিকিটিং ব্যবস্থার সহজলভ্যতায় এবারের বিপিএলকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছেন মনে করেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান। 

বার্তা সংস্থা বাসসকে বিসিবির এই পরিচালক বলেছেন, ‘দেখুন, এবারের টিকিট ব্যবস্থা ছিল সুশৃঙ্খল। অনলাইন টিকিট ব্যবস্থায় খুব সাড়া ফেলেছে। বেশিরভাগ টিকিটই সাধারণ মানুষ পাবে—অনলাইন টিকিট ব্যবস্থা এটা নিশ্চিত করেছে। যা আগেরবারের মতো নয়। সাধারণত বিপিএল সবসময়ই জনসাধারণকে আকর্ষণ করে। কিন্তু এবার অবিশ্বাস্য সাড়া ছিল, যা আমাদের জন্য সত্যিই সন্তুষ্টির। প্রতিটি ম্যাচেই স্টেডিয়াম জমজমাট ছিল। মাঠে প্রচুর দর্শক এসেছিল এবং নিজ নিজ দলকে সমর্থন করেছে। আপনি যদি ফাইনাল খেলা দেখেন, টিকিটের প্রচুর চাহিদা ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা সেভাবে দিতে পারিনি। কারণ, বিক্রির জন্য দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।’

‘সব মিলিয়ে বিপিএল ভালো হয়েছে এবং আমরা যা চেয়েছিলাম ঠিক তেমনই হয়েছে। আশা করি, যেসব অনিয়ম হয়েছে আমরা ঠিক করতে পারব এবং ভবিষ্যতে মান বজায় রাখতে পারব’, এমনটাই মনে করেন ফাহিম। 

তবে সরেজমিনে দেখা যায়, টিকিট ব্যবস্থা নিয়ে পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই অভিযোগ ছিল দর্শকদের। ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম—তিন ভেন্যুতে টিকিট নিয়ে ভোগান্তি সহ্য করতে হয়েছে দর্শকদের। তাদের দাবি, মূল টিকিট হাতে পেলেও স্ক্যান নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। দেশকাল নিউজের কাছে এক দর্শক জানান, তার টিকিটটি যথাযথ স্থান থেকে কেনার পরও তিনি ফাইনালের দিন মাঠে প্রবেশ করতে পারেননি।

কারণ জানতে চাইলে এই দর্শক টিকিট দেখিয়ে দেশকাল নিউজকে বলেছেন, ‘দেখুন এই টিকিটটি রিয়েল (সত্যি)। তবুও প্রবেশ করতে পারিনি। কারণ, আমার টিকিটটি নাকি আগেই স্ক্যান করে কেউ মাঠে ঢুকে গেছে। আমার কথা, টিকিট যদি আগেই স্ক্যান করা হয়ে থাকে তাহলে আমাদের কাছে কেন বিক্রি করা হলো। এটা তো হয়রানি।’

ঠিক এমন অভিযোগ অনেকেরই। তিন ভেন্যুতে এক টিকিটকে ফটোকপি করে কয়েকজন গ্যালারিতে প্রবেশ করতেও শোনা গেছে। তাই টিকিট নিয়ে দর্শকদের হয়রানি হতে হয়েছে। ফাইনালের দিন মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের এক নম্বর গেটের সামনে অন্তত ৬-৭ জনের সঙ্গে কথা বলে এই রকম অভিযোগ মিলেছে। তাই বিসিবি পরিচালকের টিকিট ব্যবস্থার সিস্টেম পুরোপুরি সুশৃঙ্খল বলা যাচ্ছে না। যদিও মাঠের খেলা জমজমাট হয়েছে, স্থানীয়  ক্রিকেটাররা ভালো করেছেন, প্রচুর রান হয়েছে, ফ্যান গেদারিংয়েরও ছিল নানা আয়োজন—সেই দিক দিয়ে এবারের বিপিএল মানুষের স্মৃতিতে থাকবে।