Logo
×

Follow Us

খেলাধুলা

আলোর দিশারি হয়ে এলেন হামজা

Icon

আরমান হাসান

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৯

আলোর দিশারি হয়ে এলেন হামজা

ফুটবলার হামজা চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

ফুটবল নিয়ে হতাশার আবর্তে যখন ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ, তখনই আলোর দিশারি হয়ে আসছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশপ্রবাসী ফুটবলার হামজা চৌধুরী। জামাল ভূঁইয়া-তারিক কাজীদের মতো লাল-সবুজ জার্সিতে হামজাকে দেখতে মুখিয়ে সমর্থকরা। বর্তমানে ধারে শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলা ২৭ বছর বয়সী তারকার আগমনে কতটা উপকৃত হবে দেশের ফুটবল, সাম্প্রতিক দেশকালকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন দেশের দুই কিংবদন্তি ফুটবলার কায়সার হামিদ ও জাহিদ হাসান এমিলি। 

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক কায়সার হামিদ


হামজার আগমনে দেশের ফুটবল কতটা উপকৃত হবে?

ভালো প্লেয়ার এলে একটা দলের মান বাড়ে। আমরা যখন আশি-নব্বইয়ের দশকে খেলেছি, তখনো অনেক বিদেশি প্লেয়ার এসেছে, যাদের বেশির ভাগই জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছে। হামজার থেকে শেখার অনেক কিছু রয়েছে। সে যখন মাঠে খেলবে, অন্য খেলোয়াড়েরা দারুণ এক অভিজ্ঞতা পাবে, যার ফলে বাংলাদেশের ফুটবলের মান ভালো হতে বাধ্য। গত ১৬ বছরে যারা বাফুফের দায়িত্বে ছিল, তারা সেভাবে ফুটবলের উন্নয়নে কাজ করেনি। সেই তুলনায় এবারের কমিটি এখন পর্যন্ত ভালোই করছে, তারই প্রতিফলন হামজার বাংলাদেশে আসা।

বাংলাদেশে কতটা মানিয়ে নিতে পারবেন হামজা?

বাংলাদেশের হয়ে যখন সে খেলবে, অবশ্যই কিছু দিকনির্দেশনা দেবে। আমাদের সময় কে কীভাবে কোন স্টাইলে খেলছে এগুলো জানা খুবই কঠিন ছিল। তবে এখন সবকিছু হাতের মুঠোয়। চাইলেই যেকোনো প্লেয়ারের সম্পর্কে জানা সম্ভব। যেহেতু বিদেশি বেশ কিছু কোচ আছেন, দলে তাদের দিকনির্দেশনার পাশাপাশি হামজা নিজেও জানে কী করতে হবে। তাই আমার মনে হয় না, মানিয়ে নিতে খুব বেশি সমস্যা হবে তার।

জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার জাহিদ হাসান এমিলি।


হামজা বাংলাদেশের ফুটবলকে আলোর পথে ফেরাতে পারবেন? আপনার ভাবনা কী?

এটা সময়ের ওপর নির্ভর করছে। যারা আসছে তাদের সময় দিতে হবে। এটাও দেখতে হবে তাদের মতো আরো কিছু প্লেয়ার বাংলাদেশ দলে অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না। হামজা দুর্দান্ত প্লেয়ার, সে বিশ্বের অন্যতম সেরা লিগে খেলে। তার কাছ থেকে বাংলাদেশ কতটা উপকৃত হবে, সেটা এখনই বলা কঠিন। এটা নিশ্চিত হামজা আসার কারণে আমাদের ফুটবলের ব্র্যান্ড ভ্যালু আগের চেয়ে অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে। তবে দ্রুত ফলাফল পেতে চাইলে হামজার মতো আরো কিছু ফুটবলার তৈরি কিংবা দলে নিতে হবে। 

ডেনমার্কপ্রবাসী জামাল ভূঁইয়া ও ফিনল্যান্ডপ্রবাসী ফুটবলার তারিক কাজীদের নিয়েও অনেক প্রত্যাশা ছিল। হামজারও কি প্রত্যাশার চাপে ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা আছে? 

অবশ্যই না, হামজার বিষয়টি পুরোপুরি ভিন্ন। জামাল-তারিকদের যে কোয়ালিটি, তার চেয়ে পুরোপুরি ভিন্ন মানের খেলোয়াড় হামজা। জামাল-তারিকদের মান অনেকটা আমাদের দেশের প্লেয়ারদের মতোই। সেই বিবেচনায় হামজা অনেক এগিয়ে এবং তিনি খুবই ভালো মানের খেলোয়াড়। হামজা আসায় বাংলাদেশ দল অনেক আত্মবিশ্বাস পাবে এবং ভালো করার সুযোগ থাকবে।

হামজার মতো বিদেশিদের দাপটে হারিয়ে যাবেন না তো দেশি ফুটবলাররা?

সত্যি বলতে, বিষয়টিকে আমি মোটেও সেভাবে দেখি না। কারণ হামজা শুধু জাতীয় দলেই খেলবেন। তাকে আপনি ঘরোয়া লিগে খেলতে দেখবেন না। যেহেতু তিনি জাতীয় দলের হয়ে খেলবেন, তাই ফুটবলারদের সামনে সুযোগ আছে তার থেকে নতুন কিছু শেখার। বিশ্বমানের একজন ফুটবলারের দলে থাকটাও ইতিবাচক।

ঘরোয়া ফুটবলে দ্যুতি ছড়ানো ফুটবলাররা কেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যর্থ?

আমাদের লিগের মান তো দেখতে হবে। লিগের মান ভালো না হলে মানসম্পন্ন খেলোয়াড় তৈরি করা কঠিন। আমাদের লিগ মাঝারি মানের। হামজার দিকে দেখুন, সে তো ইংলিশ লিগের প্লেয়ার। যেটা বিশ্বের অন্যতম সেরা লিগের একটি। একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, যতদিন লিগের মান বাড়াতে না পারবেন, ততদিন প্লেয়াররা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ওভাবে পারফর্ম করতে পারবে না।

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে নামছে বাংলাদেশ, প্রত্যাশা কতটা?

এএফসি এশিয়ান কাপে যে ৩০ জনের দল দেওয়া হয়েছে সেটা দেখেছি। যারা সুযোগ পেয়েছেন মোটামুটি সবাই লিগে পারফর্ম করেছেন। হামজার মতো প্রবাসী কিছু খেলোয়াড়দের রাখা হয়েছে। শেষমেশ ২৩ জনের যে চূড়ান্ত স্কোয়াড হবে, তাতে লিগে পারফর্ম করা প্লেয়াররা থাকেন কি না সেটাই দেখার বিষয়। স্ট্রাইকিং পজিশনে যে দুর্বলতা আছে সেটা অনেকটাই কেটে যাবে। কারণ লিগে অনেকেই ছন্দে ছিলেন। এখন তারা জাতীয় দলে কেমন করেন, সেদিকেই তাকিয়ে সবাই।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫